প্রকাশিত: ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
মোহাম্মদ ছয়েফ উদ্দিন
বিংশ শতাব্দির ২০’র দশকে জ্যোতির্বিদরা লক্ষ্য করলেন, ‘মহাবিশ্বে গ্যালাক্সিগুলো ক্রমশ: পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। মহাবিশ্ব প্রসারমান।’ এ খবরটি বিংশ শতাব্দির প্রথম দিকে মানুষের চিন্তা জগতে একটা বড় আলোড়ন সৃষ্টি করে। তখন মানুষের মনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়। মহাবিশ্ব প্রসারমান। প্রসারিত হতে একটা মহাশক্তির প্রয়োজন। এ শক্তি আসে কোথা থেকে?
একটা বেলুন ফুলাতে ভেতরে বাতাস ঢুকাতে হয়। বায়ু আপনা আপনি ঢুকবেনা। মুখ দ্বারা ফু দিয়ে কিংবা যন্ত্রের সাহায্যে চাপ প্রয়োগ করে বায়ু ঢুকাতে হয়। তাতে শক্তির প্রয়োজন। মহাবিশ্ব প্রসারণের শক্তির উৎস কী? এর শুরু কবে? এটা কী এক সময় থেমে যাবে? তাহলে এর শেষ কবে?
বিজ্ঞানীরা নানা তত্ত্ব-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মনে করেন, সুদূর অতীতে বিশ্বের সকল বস্তু একত্রে এক অতি ক্ষুদ্র বিন্দুতে একীভূত ছিল। বিন্দুটির ঘনত্ব, ভর ও তাপমাত্রা ছিল প্রায় অসীম। ইহাকে সিংগুলারিটি তত্ত্ব বলে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এখন থেকে ১৩৭০ কোটি (১৩.৭ বিলিয়ন) বছর আগে বিগ্ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে বিন্দুটি বিস্ফোরিত হয়। তখন থেকে মহাবিশ্বের সূচনা। পবিত্র কোরআনের ২১নং সূরা আল আম্বিয়ার ৩০ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, ‘যারা (আল্লাহর নিদর্শন সমূহকে) অস্বীকার করে তারা কী দেখে না, আসমান সমূহ ও পৃথিবী (এক সময়) ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল, অত:পর আমিই এদের উভয়কে আলাদা করে দিয়েছি এবং আমি প্রাণবান সব কিছুকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছি, (এই সত্যের পরও) কী তারা ঈমান আনবে না?’ সূরা ইয়াসীনের ৮২নং আয়াতে আল্লাহপাক এরশাদ করেন, ‘তিনি যখন কিছু একটা (সৃষ্টি) করতে ইচ্ছা করেন তখন কেবল এটুকুই বলেন, ‘হও’ অতঃপর সাথে সাথেই তা (তৈরি) হয়ে যায়।’ প্রিয় পাঠক, লক্ষ্য করুন। সিঙ্গুলারিটি ও মহাবিস্ফোরণে ধারণাটি কোরআনের বাণীর সাথে হুবহু মিলে গেল। ক্রমে মহাবিশ্বের আকার প্রসারিত হয়। একই সাথে এর তাপমাত্রা ও ঘনত্ব হ্রাস পেতে থাকে। অতঃপর গ্যালাক্সি, ব্লাকহোল, নক্ষত্র, গ্রহ উপগ্রহ সহ মহাবিশ্বের জানা অজানা সকল বস্তু সৃষ্টি হয়। এ মহাবিস্ফোরণের শক্তির প্রভাবে এখন পর্যন্ত মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে মর্মে বিজ্ঞানীদের ধারণা। তাই গ্যালাক্সিগুলো ক্রমে একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আধুনিক বিশ্বের আয়তন প্রতি একশত কোটি বিশ্বের আয়তন প্রতি একশত কোটি বছরে পাঁচ থেকে দশ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে ‘সময়’ একটি পৃথক মাত্রা হিসেবে ত্রিমাত্রিক স্থানের সাথে একত্রে যাত্রা শুরু করে। মহাবিস্ফোরণের পূর্বে কী ছিল বা কী ঘটেছিল বা আদৌ কিছু ছিল কী না, তা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। যেহেতু চতুর্থ মাত্রা ‘সময়’ এর ধারণা শুরু হয় বিগ্ ব্যাং মুহূর্তে, তাই বিগ্ ব্যাং এর পূর্বে কী ছিল, প্রশ্ন করা অনাবশ্যক। কেননা এ অবস্থায় আমাদের পদার্থবিদ্যার ভৌত বিধি সমূহ অকার্যকর। বিগ্ ব্যাং পরবর্তী ঘটনাবলী আমাদের আলোচ্য বিষয়।
এখন, আমার জিজ্ঞাসা, মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। ভালো কথা। প্রসারিত হউক বা হতে থাকুক। মহাবিশ্ব প্রসারণের মাধ্যমে এর অধিক্ষেত্রের বাহিরের স্থান (ঝঢ়ধপব) দখল করছে। বাইরের স্থান সমূহ আসলে কী জিনিস? ইহাকে (ঝঢ়ধপব) কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? এর সীমা, পরিসীমাই বা কতোটুকু? এর আকার, আকৃতি, প্রকৃতিই বা কীরূপ? ইত্যাদি, ইত্যাদি। প্রশ্ন জাগে। মনে বড় প্রশ্ন জাগে।
লেখক : কলামিস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest