হুমায়ূনজয়ন্তী দুই লেখকের হাতে এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন পুরস্কার

প্রকাশিত: ১০:২১ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২২

হুমায়ূনজয়ন্তী দুই লেখকের হাতে এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন পুরস্কার

অনলাইন ডেস্ক : সাহিত্যে কথার মায়াজাল তৈরি করতেন তিনি। পাঠক আটকা পড়তেন সেই রহস্যময় মায়াজালে। জীবনের অনেক কঠিন সত্য তিনি তুলে ধরেছেন সরল ভাষায়। হুমায়ূন আহমেদ চলে গেছেন, কিন্তু তাঁর সাহিত্য রয়ে গেছে। মানুষের হৃদয়ে তিনি রয়ে গেছেন। তাঁর ৭৫তম জন্মদিনের আগে গতকাল শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২’ দুই কথাসাহিত্যিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ বছর পুরস্কার পেয়েছেন আনোয়ারা সৈয়দ হক ও মৌরি মরিয়ম।

 

সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং নবীন সাহিত্যশ্রেণিতে (অনূর্ধ্ব চল্লিশ) ‘ফানুস’ উপন্যাসের জন্য মৌরি মরিয়ম এ পুরস্কার পান। ক্রেস্ট, উত্তরীয় এবং সার্টিফিকেট ছাড়াও পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে তাঁরা পেয়েছেন যথাক্রমে ৫ লাখ ও ১ লাখ টাকা।

 

শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীতের সুরে শুরু হয় অনুষ্ঠান। তিনি গেয়ে শোনান ‘আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে’ ও ‘দূরে কোথায় দূরে দূরে’। এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনও।

 

পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশে আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, আজ তাঁর জীবনের বিশেষ দিন। এত মোটা অঙ্কের পুরস্কার তিনি আগে কখনও পাননি। এ পুরস্কারের টাকা তিনি তাঁর শৈশবের স্কুলের দরিদ্র শিশুদের দান করবেন। সব্যসাচী লেখক প্রয়াত সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী বলেন, চমৎকার একটি জীবন কাটিয়েছেন তিনি। লেখালেখির সঙ্গে ছিলেন, লেখকের সঙ্গে ছিলেন। তিনি জানান, হুমায়ূন আহমেদ মানুষের সঙ্গে মেশার চেষ্টা করেছেন। তাঁর নাটক সব বয়সের মানুষকে বিনোদন দেয়। হুমায়ূন আহমেদের ভেতরে একটা পাগলামি ছিল। জীবনের কঠিন বিষয়কে তিনি সহজ করে বলেছেন।

 

মৌরি মরিয়ম অনুভূতি প্রকাশে বলেন, হুমায়ূন আহমেদ শুধু তাঁর প্রিয় লেখক নন, তিনি তাঁর ‘অবসেশন’। তাঁর নামে পদক পেয়ে তিনি ধন্য।

 

এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুরস্কারের জন্য গঠিত বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি, খ্যাতিমান কথাশিল্পী সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন অন্যদিন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন এক্সিম ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. আব্দুল বারী, সংগীতশিল্পী ও হুমায়ূনপত্নী মেহের আফরোজ শাওন। শংসাবচন পাঠ করেন বিচারকমণ্ডলীর সম্মানিত সদস্য শিক্ষাবিদ সৈয়দ আজিজুল হক ও কথাশিল্পী বিশ্বজিৎ চৌধুরী।

 

কৃষিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনা নির্মাণে লেখকদের ভূমিকা অনেক। সেই সমতা ও আইনের ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের জন্য শিল্পী-সাহিত্যিক বড় ভূমিকা রেখেছেন। দেশপ্রেম থাকতে হলে দেশকে গভীরভাবে দেখতে হবে। তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদ গভীরভাবে দেশকে দেখেছেন। তাঁর ভেতরে ছিল দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি ভালোবাসা। তাঁর স্থান অনেক উঁচুতে থাকবে।

 

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, হুমায়ূন আহমেদের লেখা সবাইকে মুগ্ধ করে। এ রকম সাহিত্যিক শতবর্ষে একজন আসেন।

 

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এ সাহিত্য পুরস্কার যোগ্য লোকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সাহিত্য পুরস্কার লাভজনক বিষয় নয়, এটা অনুপ্রেরণা ও সম্মানের বিষয়।

 

মেহের আফরোজ শাওন বলেন, আট বছরে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য পুরস্কারে অনেক প্রিয়মুখ এসেছিলেন। আজকে তাঁদের অনেকেই নেই।