১২৭ বছরের প্রাচীন তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন বন্ধ, যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২৪

১২৭ বছরের প্রাচীন তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন বন্ধ, যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

নিউজ ডেস্ক : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ১২৭ বছর আগে চালু হওয়া তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১৮৯৬ সালে তৎকালীন বৃটিশ সরকার এই এলাকার জনসাধারণের যোগাযোগ ও আশপাশের বেশ কয়েকটি চা বাগানের পণ্য পরিবহনের জন্য স্টেশনটি চালু করে।

 

তখন থেকে এই রেলস্টেশনটির এই এলাকার ব্যাবসা বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা ছিল। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস জড়িয়ে আছে এই স্টেশনটির সাথে। ৭১ এর ২৫ শে মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বর্বর গণহত্যা শুরু করার পর সারা দেশে যখন বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিরোধ যুদ্ধ চলছিল, ঠিক তখনই তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কিছু বাঙালি অফিসার ও সৈনিক সড়ক ও রেলপথ ব্যবহার করে চলে আসেন তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনে। তারপর এখান থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বড়ো বাংলায় (মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সদরদপ্তর) অবস্থান নিয়ে শুরু করেন সংগঠিত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। স্থানীয় জনসাধারণের সুবিধা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনে এক জনসভায় স্টেশনটিকে ’বি’ ক্লাসে উন্নতি করার ঘোষণা দেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তার এই ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আবার ক্ষমতায় আসলে তৎকালীন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক মোস্তফা শহীদ ২০১১ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর এক জনসভায় আবারও এই স্টেশনটিকে ’বি’ ক্লাসে উন্নতি করার ঘোষণা দেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত দুই মন্ত্রীর ঘোষণা আলোর মুখ দেখেনি।

 

অভিযোগ আছে, যতবারই এই স্টেশনের উন্নয়নের চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই রেলওয়ের জমির অবৈধ দখলদার কিছু লোক ঘুষ দিয়ে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে। স্টেশনের গেটম্যান নূর ইসলাম জানান, আগে এই স্টেশনে বাল্লা, কুশিয়ারা সহ কিছু লোকাল ট্রেনের স্টপেজ ছিল। এই ট্রেনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, তাই এখানে আর কোন ট্রেন দাঁড়ায় না।

 

উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ পারভেজ হোসেন চৌধুরী জানান, এখান থেকে প্রতিদিন প্রচুর যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতেন। আগে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক এদিকে ছিল। চা বাগানের পাহাড়ি আঁকাবাকা রাস্তার কারণে মহাসড়কটি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময়ে অর্থমন্ত্রী এএমএস কিবরিয়া বলেছিলেন স্টেশনটি বি ক্লাসে উন্নতি করা হবে এবং আন্তঃনগর ট্রেন থামবে এখানে। এখন কোন ট্রেনই থামে না। স্টেশন নামে আছে কাজে নেই। তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন থেকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান মাত্র ৬ কিলোমিটার দুরে। কাছেই মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার খ্যাত ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বড়ো বাংলা ও স্মৃতিসৌধ ও এশিয়ার বৃহত্তম সুরমা চা বাগান। এখানে ১টি কৃষি ব্যাংক, ১টি হাইস্কুল, ১২টি প্রাইমারী স্কুল, ৯টি মাদ্রাসা, ও ফারইস্ট ইন্ড্রাস্ট্রি মিলসহ কয়েকটি মিল রয়েছে।

 

স্টেশনটি বি ক্লাসে উন্নতি করে আন্তঃনগর ট্রেন দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করলে, এসব এলাকায় প্রচুর পর্যটক আসবে। পাশাপাশি আশপাশের প্রায় চল্লিশটি গ্রাম, দুটি চা বাগান ও সাতছড়ি এলাকার স্থানীয় জনসাধারণের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনের সুবিধা হবে। এই এলাকায় অনেক শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে, তাঁদেরও পণ্য আনা-নেওয়ায় সুবিধা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন