খোলা আকাশের নিচে গোলাপগঞ্জের হাজারো পরিবার

প্রকাশিত: ১২:৩০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২৪

খোলা আকাশের নিচে গোলাপগঞ্জের হাজারো পরিবার

অনলাইন ডেস্ক : গত ৩১শে মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৯০ ভাগ টিনসেডের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ছাড়া বাকি ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় সবক’টি টিনের ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের এক একটি শিলা পড়ে সবক’টি টিনের ঘর ফুটো হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি। এ ছাড়াও বিভিন্ন যানবাহনের গ্লাস ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকেই। অনেক পথচারী শিলাবৃষ্টির সময় শিল পড়ে মাথা ফেটে আহত হয়েছেন।

 

এ ছাড়াও অনেক শিশু-মহিলাও ঘরের টিন ফুটো হয়ে শিলা মাথায় পড়ে আহত হয়েছেন।  গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর, শরীফগঞ্জ ও লক্ষণাবন্দ ইউনিয়ন ছাড়া গোলাপগঞ্জ সদর, বাঘা, ফুলবাড়ী, আমুড়া, লক্ষ্মীপাশা, বাদেপাশা, ঢাকাদক্ষিণ ও বুধবারীবাজার ইউনিয়ন এবং গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সবকটি টিনের ঘর শিলাবৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এসব এলাকার নিম্নবিত্তদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও রয়েছেন বিপাকে। অনেকে টাকার অভাবে এখনো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

 

রোববার শিলাবৃষ্টির পর ঘন ঘন বৃষ্টিপাত এর মধ্যে তিনদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার রাত আবারো থেমে থেমে হালকা ঘূর্ণিঝড় এবং শিলাবৃষ্টি  মানুষের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে টিনের অতিরিক্ত দাম।

 

সরজমিন গোলাপগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি। অনেকের ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় জ্বলেনি চুলো। মাহে রমজানের সেহেরি ও ইফতার অস্থায়ী চুলা তৈরি করে কোনোমতে রান্না করছেন। গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ইয়াগুল গ্রামের সফিক উদ্দিন জানান, দিন আনি দিন খাই। হঠাৎ শিলাবৃষ্টির কারণে মাথাগোঁজার ঠাঁইটা নেই।  খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির মধ্যে কোনোমতে বসবাস করছি। শিলাবৃষ্টির কারণে ঘরের পুরো টিন কানা কানা হয়ে গেছে। টিনেরও অনেক দাম। এখন সংসার কীভাবে চালাবো আর টিন কীভাবে লাগাবো।

 

একই এলাকার আতাব উদ্দিনের স্ত্রী শিপা বেগম জানান, আমার স্বামী মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোনোমতে বেঁচে ছিলাম। হঠাৎ শিলাবৃষ্টির কারণে মাথায় বাজ পড়েছে। টিন কীভাবে কিনবো। আর কীভাবে বসবাস করবো এই ঘরে।

 

পৌর এলাকার নুরুপাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন জানান, এলাকার প্রায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। দু-একটা বাড়ির ঢালাই ছাদ ছাড়া বাকি সব ঘরের উপর টিনের। গত বৃহস্পতিবারের শিলাবৃষ্টিতে এসব টিন পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। একেতো রমজান মাস। তার উপর প্রতি দিন ঘন ঘন বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা খুবই অসহায় ভাবে জীবনযাপন করছি। আমুড়া ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় টিনের ঘরের একই অবস্থা। পুরো টিনের চাল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের বিছানা, আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য তারেক আহমদ জানান, আমার এলাকার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষের ঘর টিনের। শিলাবৃষ্টিতে তাদের টিন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। অনেকের ঘরে খাবার নেই। ঘরে পানি থাকায় রান্নাও করা যাচ্ছে না।

 

তিনি আরও বলেন, আমার এলাকায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম পরিদর্শন করে গেছেন। উনার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে এলাকার কয়েকটি পরিবারকে কিছু সহায়তা করেছেন।  এদিকে শিলাবৃষ্টির পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শন করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম। তিনি ইতিমধ্যে ব্যক্তিগতভাবে ১০০ বান টিন বিতরণ করেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় নগদ অর্থ সহায়তা করছেন।

 

এমপি নুরুল ইসলাম নাহিদ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, সরকারি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও তিনি এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। শুধু গোলাপগঞ্জ নয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা বিয়ানীবাজারের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নও শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে। এসব এলাকায় জরুরিভিত্তিতে সরকারি সহযোগিতা পাঠানোর আবেদন জানান সকলে।

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন