প্রকাশিত: ১:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২৩
স্পোর্টস ডেস্ক : ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিদেশ সফর মানেই বেশ কিছু সমর্থকদের বিশ্ব ভ্রমণে বের হওয়া। এ দেশ ও দেশ ঘুরে লম্বা ভ্রমণের সূচি তাদের। ক্রিকেট দলগুলোর সমর্থকগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ইংল্যান্ডের বার্মি আর্মি। যারা মাঠে এসে শুধু নিজ দেশকে সমর্থনই করেন না, প্রতিপক্ষকে নাড়িয়ে দেন।
এবারও দলকে অনুসরণ করে বাংলাদেশেও আসার কথা ছিল বার্মি আর্মির। কিন্তু ইংল্যান্ডে আরেকটি দল নিউ জিল্যান্ডে সফর করায় সেখানেই চলে গেছেন তারা। তাইতো মিরপুরের গ্যালারিতে নেই বার্মি আর্মির প্রতিনিধি। তবে লাল সবুজের গ্যালারিতে চোখে পড়ছে ইংল্যান্ডের পতাকাও।
মিরপুরের অ্যাওয়ে ড্রেসিংরুমের ঠিক ওপরেই গ্র্যান্ড স্টান্ড। আসনজুড়ে লাল সবুজের দর্শকদের আধিক্য। এর মাঝেই চারজনকে আলাদা করে নজরে পড়ে। গায়ে কোনো দলের জার্সি নেই, হাতে কোনো প্ল্যাকার্ডও নেই। তাদের আলাদা করা গেল বর্ণের কারণে। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসা এই চারজন এসেছেন ইংল্যান্ড থেকে। তার মধ্যে তিনজনের ছোট গ্রুপটি ‘নট আউট ট্রাভেল’ নামে একটি অ্যাজেন্সির মাধ্যমে প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছেন। এসেছেন লেস্টারশায়ারের মেলটন মউব্রে থেকে।
হাতে দূরবীণ হাতে তাদেরই একজন খেলা দেখছিলেন। নাম তার ক্যাথরিন। মাঝে থাকা পল খেলা দেখছেন আর নোট প্যাডে কিছু একটা টুকে রাখছেন। পাশে থাকা জন তাকে টুকিটাকি সহোযোগিতা করছেন। দলকে সমর্থন জুগাতে ইংল্যান্ড থেকে উড়ে এসেছেন মাইক। পেশায় চিকিৎসক। কিন্তু ছবি তুলতে বেশ পছন্দ করেন। মিরপুরে মাইক হাজির হয়েছে ডিএসএলআর সঙ্গে নিয়ে। তিনজনের ছোট গ্রুপটির সঙ্গে মিরপুরে ঢুকেই মাইকের পরিচয়।
প্রথমেই গল্প হয় ক্যাথরিন জন ও পলের সঙ্গে। হাতে দূরবীণ নিয়ে একটু পর পর মাঠে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছেন ক্যাথরিন। কথা বলার সময়েও তাকিয়ে থাকেন মাঠের দিকে। স্বল্প কথায় বুঝিয়ে দিলেন কথা বলার চেয়ে খেলা দেখাটাই পছন্দ তার, ‘আমরা সাতজনের একটি গ্রুপ এসেছি। এখানে তিন জন আছি। এটাই আমার প্রথম বাংলাদেশে আসা। এর আগে ভারতে গিয়েছিলাম দুবার। এবার সুযোগ পেয়েছি তাই খেলা দেখার জন্য চলে এসেছি।’
সিরিজ শেষেও বেশ কয়েকদিন থাকার কথা রয়েছে তার। রয়েছে ঘোরার পরিকল্পনাও, ‘খেলা দেখার পাশাপাশি আমার ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা আছে। কক্সবাজার যাবো ঘুরতে। খেলার দেখার জন্য চট্টগ্রামেও যাবো। শুনেছি কক্সবাজার সৈকত দারুণ।’
কয়েকদিন হলো বাংলাদেশে এসেছেন ক্যাথরিন। অল্প ক’দিনেই তার মনে ধরেছে ঢাকাকে। সঙ্গে দেশী মাছের মজায় মজেছেন তিনি, ‘এখানে দর্শকরা দারুণ। চার্মিং। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি খাবার খেয়েছি। তার মধ্যে মাছের একটি তরকারি (ফিশ কারি) দারুণ লেগেছে। তবে কিছুটা ঝাল (হাসি) । এখনো সময় আছে বিভিন্ন খাবার খাবো।’
মাঝে বসা পলের স্কোরারদের মতো খেলার বিভিন্ন তথ্য টুকে রাখা দেখে অবাক হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। কেন এমনটা করছিলেন পল? উত্তরটা তার মুখেই শুনুন, ‘কোনো বড় কারণ নেই। কে ব্যাটিং করেছে কে বোলিং করছে, ফিল্ডিংয়ে কোথায় কে এগুলো জানার জন্য আমি এভাবেই তথ্য সংগ্রহ করি। বাংলাদেশের ক্রিকেটার নিয়ে আমি আরও জানার চেষ্টা করবো, গবেষণা করবো।’
‘এটাকে শখ বলতেও পারেন। আমি পেশাদার কেউ না। কিন্তু এগুলো জেনে রাখার চেষ্টা করি। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে একটু কম জানাশোনা আছে তাই’-আরও যোগ করেন। পাশের সারিতে থাকা জনের হাতে তখন আইসক্রিম। চেটেপুটে খাওয়া দেখে মনে হচ্ছিল আইসক্রিমটা মনে ধরেছে তার।
২৮ পেরুনো মাইকের অবশ্য বেশিদিন ঢাকায় থাকবেন না। শুক্রবার দ্বিতীয় ওয়ানডে দেখে দেশের বিমান ধরবেন রোববার, ‘আমি দুটি ম্যাচ দেখার জন্য বাংলাদেশি এসেছি। এই দেশে আমার প্রথম আসা। দর্শকদের আগ্রহ দেখে ভালো লাগছে। রোববার আমি চলে যাবো। আবার কাজে যোগ দেব।’
শর্টস পরে পায়ের উপর পা তুলে বসা মাইক হাতে থাকা ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে নানা মুহুর্তের ছবি বন্দি করে রাখছেন। পথে ঘাটে মজার কিছু দেখলেই একই কাজ করেন। রিক্সায় চড়ার মুহুর্ত এখনো তিনি ভুলতে পারছেন না। গতকাল ইনডোরে এসে নিজে টিকিট কেটেছিলেন।
তার কথায় বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভালোবাসা পাওয়া গেল, ‘এখানকার মানুষজন বেশ মজাদার। আমার ডিজিটাল ক্যামেরায় বেশ কিছু মুহুর্তের ছবি তুলেছি। কেউ মাথায় বড় বোঝা নিয়ে হাঁটছে, কেউ রাস্তায় বসে এটা-ওটা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। কোনো না কোনো কিছু নিয়ে ব্যস্ত এখানকার মানুষ। ট্রাফিক আছে, ভারতে এসেছিলাম আগে এই জন্য ট্রাফিকের অভিজ্ঞতা আছে (হাসি)।’
বাংলাদেশি কোন ক্রিকেটারকে চেনেন মাইক? ‘বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিব আল হাসানকে জানি আমি। ২০১৯ বিশ্বকাপে আমাদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছে। আমার এখনো মনে আছে সেই ইনিংস।’ এবার সাকিবের সঙ্গে রয়েছেন আরো একঝাঁক ক্রিকেটারও। যারা চাইলেই সাকিবের মতো বড় কিছু করে মাইকের নজরে আসতে পারেন। তার নজরে আসলেই তার ডিএসএলআরের ফ্রেমবন্দীও হয়ে যাবেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest