প্রকাশিত: ১১:২১ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক : পনেরো বছরে সিলেটের অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হলেও মুখ থুবড়ে পড়েছে এ অঞ্চলের আবাসন খাত। হাউজিং সেক্টর বা আবাসন খাত বলতে যা বোঝায এর পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। হাউজিং ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘সারেগ’ এর প্রদীপও এখন নিভু নিভু। এক সময় সদস্য ২১২টি কোম্পানির প্রতিনিধি সারেগে থাকলেও এখন আছে মাত্র ১২টি কোম্পানি। এ অবস্থায় সিলেটের আবাসন খাত নিয়ে নানা শঙ্কায় এই খাতের বিনিয়োগকারীরা।
আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ২০০১ সালের দিকে হঠাৎ করে সিলেটের আবাসন সেক্টর রমরমা হয়ে উঠে। প্রবাসী বিনিয়োগে গড়ে উঠা এসব হাউজিং কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই ছিলেন দেশের বাইরে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা। আবাসন ব্যবসা নিয়ে হুলুস্থুল পড়ে যায় দেশে-বিদেশে। একের পর এক কোম্পানির আত্মপ্রকাশ হতে থাকে। ২০১০ সালে সিলেটে একটি মেলা হয়েছিলো। সে মেলার নাম ছিলো বিডিরেড আবাসন মেলা। সে সময় ১১০টি কোম্পানি ছিলো হাউজিং ফ্ল্যাট ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনে। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত মেলায় অংশ নেয় ৭১টি কোম্পানি। সময়ের ব্যবধানে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সিলেটের আবাসন মেলায় সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৮টিতে। আর ২০২৩ সালে সিলেটে অনুষ্ঠিত মেলায় মাত্র ২০টি কোম্পানি অংশ নেয়। তাও আবাসন সরাসরি হাউজিং কোম্পানি বলতে যা বোঝায় সে ধরনের প্রতিষ্ঠান ছিলো মাত্র ১০টি। আর বাকীগুলো ছিলো ইন্টেরিয়র এবং নির্মাণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি। সেই মেলায় আবাসন খাত নিয়ে চরম হতাশা ব্যক্ত করেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, মাত্র ১৩ বা ১৫ বছরে ৯০টি কোম্পানি হাওয়া হয়ে গেছে। কোনো অবস্থাতেই দাঁড়াতে পারছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২৩ সালে সারেগ আয়োজিত মেলায় যেসব কোম্পানি অংশ নেয় তাদের মধ্যে সিলকো হোম, আল ফালাহ, হিলভিউ, হিল সাইড হলি আরবান, ড্রিমল্যান্ড এবং আপন এসোসিয়েট রয়েছে। সোনারগাঁ আবাসিক প্রকল্প, বোরহান মডেল টাউন, রয়েল সিটিসহ কিছু কোম্পানি আবাসন বাজারে থাকলেও তারা কেউ এ মেলায় অংশ নেয়নি। এর পেছনেও রয়েছে নানা কারণ। সুন্দরবন, লালমাটিয়া, শ্যামল ছায়া. ড্রিমসিটি, অপরূপা, সানরাইজ হাউজিংসহ এমন সব চালু কোম্পানি এখন প্রায় বিলুপ্ত। গত ১৫ বছরে সিলেটে একচেটিয়া ব্যবসা করেছে আর্ক রিয়েল এস্টেট গ্রুপ। তারা ছাড়া সিলেটে তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান বড় অগ্রগ্রতিতে যেতে পারেনি।
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, তিন কারণে সিলেটের আবাসন ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। প্রথমত: ওয়ান ইলেভেনের সময়কার সরকারের প্রশাসনিক নানা হয়রানির কারণে হাউজিং ব্যবসায় ধ্বস নামে। তখনকার সময়ে স্বচ্ছতা আনয়নের নামে হাউজিং কোম্পানির পরিচালকদের অনেকেই হয়রানির শিকার হয়েছেন। হাউজিং প্রকল্পের নামে গড়া কোম্পানিগুলোর নানা অনিয়ম দুর্নীতি ধরা পড়ে তখনকার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে। ফলে প্রশাসনিক জটিলতায় পড়ে অনেক কোম্পানি।
দ্বিতীয়ত: আবাসন খাতে বিনিয়োগকারী অধিকাংশ প্রবাসী প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অনেক বিনিয়োগকারী সংবাদ সম্মেলন কিংবা মামলা মোকদ্দমা করে তাদের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। ফলে প্রবাসীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সেখান থেকে। আর প্রবাসীরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় যারা কোম্পানি পরিচালনায় থাকতেন তারা পড়েছেন বিপাকে। ফলে অনেক অফিসই গুটিয়ে নিতে হয়েছে। সিলেট নগরের একেকটি হাউজিং কোম্পানির অফিসের আয়তন ছিলো চার থেকে পাঁচ হাজার ফুট। সাজ-সজ্জাও ছিলো ‘সেই রকম’। কিন্তু বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ‘ধরা’ খেয়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতরা।
তুতীয়ত: যে কারণে বর্তমানে সিলেটের আবাসন খাতে গতি ফিরছে না তা হলো, রড সিমেন্ট, ইট বালুসহ নির্মাণ সামগ্রীর অত্যধিক মূল্য বৃদ্ধি এবং আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকা। অনেকেই বলছেন যে দামে বিনিযোগ করে লাভের আশা করেছিলেন তা এখন স্বপ্ন। কারণ তাদের পরিকল্পনাকালীন ক্রয়মূল্য আর এখনকার বিক্রয়মূল্যের মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক। যে কারণে নতুন কোনো প্রকল্প বা চলমান প্রকল্পের উন্নতিকল্পে কোনো কাজ হাতে নিতে পারছেন না হাউজিং ব্যবসায়ীরা। গ্যাস সংযোগ বন্ধ ন প্রকল্পের উন্নতিকল্পে কোনো কাজ হাতে নিতে পারছেন না হাউজিং ব্যবসায়ীরা। গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় নির্মাণাধীন অনেক বাসা বাড়ি এবং ফ্ল্যাটে গ্যাস সংযোগ মিলছে না। ফলে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন এ খাতে বিনিয়োগে।




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest