প্রকাশিত: ২:১১ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে তাহসীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মান্নাকে গ্রেফতার করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্বস্তি নেমে আসে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) গোপন সংবাদের ভিওিতে নবীগঞ্জে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কলেজছাত্র সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিন (১৮) হত্যার ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় ১১ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরো চার-পাঁচজনকে।
রোববার (৩ মার্চ) রাতে নিহত সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিনের মা মুড়াউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী-শিক্ষিকা মাহফুজা সুলতানা নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের হেবলু মিয়ার ছেলে মান্না মিয়া (২০), আলাউর মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২১), আনমনু গ্রামের রুমন মিয়ার ছেলে রিহাত মিয়া (২১), রাজাবাদ গ্রামের কুদরত আলীর ছেলে শাফি মিয়া (২০), গন্ধ্যা গ্রামের লেবু মিয়ার ছেলে রিমন মিয়া (২২), নিজ চৌকি গ্রামের হাকিম মিয়ার ছেলে জাকির মিয়া (২০), মাইজগাঁও গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে লাদেন মিয়া (২০), দত্তগ্রামের আব্দুল হাফিজের ছেলে সাজু মিয়া (২৫), গন্ধ্যা গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে সাজ্জাত মিয়া (২৪), মিল্লিক গ্রামের মন্নান মিয়ার ছেলে রাতুল মিয়া (২৩) ও বানিয়াচং উপজেলার কালাইনজুরা গ্রামের মরহুম আরজদ উল্লাহর ছেলে মওদুদ আহমেদ (৪০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিন (১৮) নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সাক্ষী নিহাল আহমেদ মাহি তাহসিনের খালাতো ভাই ও সহপাঠি।
আসামিদের কয়েকজন নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র। অন্যরা লেখাপড়া করে না। তবে আসামিদের সহপাঠি হিসেবে তারা এক সাথে চলাফেরা করে। আসামি মান্নাসহ অন্যরা তাহসিনকে তাদের সাথে চলাফেরা করার জন্য বলে। কিন্তু আসামিদের চালচলন, কথাবার্তা ও আচরণ দেখে তাহসিন তাদেরকে এড়িয়ে চলে।
এজন্য আসামিরা তাহসিনের উপর ক্ষিপ্ত হয়। তাহসিন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বাসা থেকে বের হয়ে এইচএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা দেয়ার জন্য কলেজে যায়। নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালীন আসামিদের মধ্যে কয়েকজন তাহসিনের পরীক্ষার খাতা দেখানোর জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তাহসিন তার পরীক্ষা ভালো করার জন্য তাদের কথায় খাতা দেখায়নি। পরীক্ষার পর কলেজের সামনে মাঠে মান্না, জুয়েল, রিহাত ও রাতুল পরীক্ষার হলে খাতা না দেখানোর কারণে তাহসিনকে অপমান করে।
একপর্যায়ে তারা তাহসিনের মুখে ও শরীরে থুথু নিক্ষেপ করে। তাহসিন প্রতিবাদ করলে মান্নাসহ অন্যদের সাথে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে কলেজের সিনিয়র ছাত্রদের হস্তক্ষেপে তাহসিন কলেজ ত্যাগ করে বাসায় চলে আসে। বিকেলে তাহসিন মাহিকে নিয়ে চা খাওয়ার জন্য নবীগঞ্জ শহরে রাজা কমপ্লেক্স নামক মার্কেটের পেছনে একটি চায়ের দোকানে চা খেতে যায়। চা খাওয়া অবস্থায় আসামি মান্নাসহ অন্যরা তাহসিনকে লক্ষ করে গালি-গালাজ করে। পরে তাহসিনকে মারপিট করার জন্য উদ্যত হয় তারা।
এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে সরিয়ে দেয়। পরে তাহসিন মাহিকে নিয়ে নবীগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক আয়োজিত বই মেলা দেখার জন্য পৌরসভা প্রাঙ্গণে যায়। রাত ৯টায় বইমেলা থেকে ফেরার পথিমধ্যে তাহসিন ও মাহি ওসমানী রোডস্থ চৌদ্দ হাজারী মার্কেটের সামনের পৌছামাত্রই মান্নাসহ অন্যসকল আসামিরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র, দা, লাঠি, লোহার রড, পাইপ, চাকু ছুরিসহকারে তাহসিন ও মাহির ওপর হামলা করে।
এ সময় তাহসিনকে সারা শরীরে আঘাত করে পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাহসিনকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে মাহিকেও বেধরকভাবে মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাহসিন ও মাহিকে উদ্ধার করে প্রথমে নবীগঞ্জ ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাহসিন মারা যায়।
পরে বুধবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ জেকে উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে তাহসিনের গ্রামের বাড়িতের দাফন সম্পন্ন হয়। এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাসুক আলী বলেন, তাহসীন হত্যার প্রধান আসামি মান্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপর আসামিদের ও গ্রেফতার করা হবে। তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রধান করা হবে। আপনারা পুলিশের ওপর ভরসা রাখুন। দেখুন পুলিশ কি করতে পারে।
তাহসিনের মা নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা মামলা রুজু করে গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছি, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest