স্বামীকে হত্যার পর প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল রোমানা

প্রকাশিত: ২:০৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩

স্বামীকে হত্যার পর প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল রোমানা

অনলাইন ডেস্ক : ‘সাহস থাকলে আমার স্বামীকে মেরে ফেলো, তারপর না হয় আমি তোমার কাছে চলে আসবো। নয়তো আমি কীভাবে আসবো তোমার কাছে? ১৯ বছর বয়সী গৃহবধূ রোমানা আক্তার কথাগুলো বলছিল তার সাবেক প্রেমিক সাকিবকে। আর তাতেই সাকিব রাজী হয় এবং জানতে চায়, ‘তুমি আমার কাছে আসতে হলে আমাকে কী করতে হবে? তোমার স্বামীকে মেরে ফেললে হবে?’ উত্তরে রোমানা ‘হ্যাঁ’ বলার সঙ্গে সঙ্গে সাকিব রোমানার স্বামী আলমগীরকে হত্যার নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে এবং অনুসরণ করে।

 

গত রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪০ মিনিটে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামের হায়দর আলী জামে মসজিদ-সংলগ্ন এলাকায় আলমগীরকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সাকিব। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুরো উপজেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

 

অন্যদিকে একই দিন এ উপজেলায় আরও দুটি খুন হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ দেখা দেয়।

 

আলমগীরের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই। রাজনীতির সঙ্গেও তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শুরুতে এলাকায় ছিনতাইকারীরা তাকে মেরেছে এমন কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও আলমগীরের সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল অক্ষত থাকার খবরে তা দূর হয়ে যায়।

 

পরে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ করলে আলমগীরের স্ত্রীকে সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে ২৭ ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় রোমানা পুলিশের কাছে স্বামী হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে জবানবন্দি দেন।

 

রোমানা জানান, ৭-৮ মাস আগে সাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয় কিন্তু এসএসসিতে ফেল করায় পরিবার তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। স্বামী আলমগীর তাকে স্মার্টফোন কিনে দিলে সেটি দিয়ে পুরোনো প্রেমিক সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়। একসময় সাকিব রোমানাকে তার কাছে চলে যেতে বললে রোমানা বলে কীভাবে যাব? আমার তো বিয়ে হয়ে গেছে। তখনি তাদের মধ্যে আলমগীরকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

 

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, আলমগীরকে হত্যার পর প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তার স্ত্রী রোমানা আক্তার। আর ঘটনার কিছু আলামতে আমাদের সন্দেহ হওয়ায় তাকে আমরা নজরদারিতে রেখেছিলাম। শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে তাকে আমরা আটক করে থানায় নিয়ে আসি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিকের সঙ্গে যোগসাজশে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে।