প্রকাশিত: ১০:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
স্পোর্টস ডেস্ক : আইপিএল নিলামের একদিন পেরিয়ে গেল। তবু নাম উঠল না কোনও বাংলাদেশির। কারণটা পরিষ্কার ছিল। তালিকায় ১১৭ নম্বর পর্যন্ত থাকা ক্রিকেটারদের আগে ডাকা হবে। ওই পর্যন্ত ছিল না কোনও বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নাম। ক্রমিক সংখ্যায় নিচের দিকে থাকায় দল না পাওয়ার আশঙ্কা আগেই জেগেছিল। এরপরও বাংলাদেশের ক্রিকেটার ছাড়া আইপিএল হবে, ক্রিকেটপাগল এ দেশের মানুষের জন্য বিষয়টা মেনে নেওয়া কঠিন ছিল।
কিন্তু নিলাম প্রক্রিয়ায় সেটাই হলো। বাংলাদেশের ক্রিকেটার ছাড়া হতে যাচ্ছে ২০২৫ সালের আইপিএল। মোট ১২ ক্রিকেটার নাম দিয়েছিল আইপিএল নিলামে। এর মধ্যে দুজনকে নিলামে তোলা হয়েছিল। বাকি ১০ জনের ভাগ্যে সেটাও জোটেনি। ফলে সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত আইপিএ নিলাম চরম হতাশা হয়ে থাকল বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য।
বাংলাদেশিদের মধ্যে নিলামে সবার আগে উঠেছিল মোস্তাফিজুর রহমানের নাম। গত আসরে যিনি চেন্নাই সুপার কিংসে আলো ছড়িয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি আগ্রহ দেখায়নি। খানিক পরে নাম ওঠা রিশাদ হোসেনের অবস্থাও একই। আর সাকিব আল হাসানকে তো ডাকাই হয়নি!
সাকিব আইপিএল খেলেছেন নয়বার। মোস্তাফিজের অংশগ্রহণের সংখ্যাটা সাতবার। ২০২১ থেকে ২০২৪- এই চার বছরে নিয়মিত মুখ ছিলেন তিনি। এরপরও কেন এবারের নিলামে উপেক্ষিত সাকিব-মোস্তাফিজ?
নিলামের ক্রমিক নম্বরে পিছিয়ে থাকা
আগেই জানানো হয়েছিল, নিলামের ক্রমিক সংখ্যায় ওপরের দিকে থাকা ক্রিকেটাররা সুবিধা পাবেন। ১১৭ নম্বরের পরে থাকা ক্রিকেটাদের নিয়ে হবে দ্রুততম নিলাম। অর্থাৎ, এই ক্রিকেটারদের নিয়ে ভাবনা-চিন্তার খুব বেশি সময় পাওয়া যাবে না। ১১৭ জন ক্রিকেটারের মধ্যেই ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মূল পরিকল্পনা। এদের পেছনেই বেশি টাকা খরচ করে ফেলেছে দলগুলো।
দুই দিনব্যাপী নিলামের প্রথম দিনেই বেশিরভাগ অর্থ শেষ করে ফেলেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এরপর আবার বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের নম্বর ছিল নিচের দিকে। তারা নিলামে ওঠার আগেই অনেক দল তাদের চাহিদা অনুযায়ী দল মোটামুটি সাজিয়ে ফেলেছিল। যেমন মোস্তাফিজের নাম যখন ওঠে, তখন অনেক দলই তাদের দল সাজিয়ে নিয়েছে। নিলামে বাঁহাতি পেসারের অবস্থান ছিল ১৮১ নম্বরে। রিশাদ ছিলেন ১৮৭ নম্বরে। কাছাকাছি থাকায় এই দুজনের নাম উঠে নিলাম টেবিলে।
বাংলাদেশের অন্য ক্রিকেটাররা ছিলেন আরও নিচে। রিশাদের কাছাকাছি অবস্থানে থাকা লিটন দাস ছিলেন ২৪৭ নম্বরে। সাকিবের নাম তো আরও নিচে, ৪৩৯ নম্বরে। ফলে মোস্তাফিজের নাম উঠলেও সাকিবের ভাগ্যে সেটাও জোটেনি।
অর্থের সঙ্গে চাহিদার মিল পড়েনি
পর্যাপ্ত অর্থ না থাকাটাও একটা কারণ। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো নিলামে আগেই মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে ফেলেছিল। সেকারণে মোস্তাফিজের নাম উঠলেও কেউ আগ্রহ দেখায়নি। চেন্নাই সুপার কিংসের কথাই ধরা যাক। গত আসরে এই দলের জার্সিতে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছিলেন তিনি। চেন্নাইয়ের ঘরের মাঠে দুর্বার গতিতে ছুটেছিলেন বাঁহাতি পেসার। ৯ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৪ উইকেট। ওই পারফরম্যান্সে মোস্তাফিজকে আবারও কিনতে পারতো তারা।
কিন্তু বাংলাদেশি পেসারের নাম ওঠার আগেই চেন্নাই দলে যোগ করে নিয়েছিল ইংলিশ অলরাউন্ডার স্যাম কারেনকে। কারেন বাঁহাতি পেসার, আবার ব্যাট হাতেও অবদান রাখতে পারেন। বিদেশি কোটায় কারেনকে কেনার পর আরেক পেসারকে নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি চেন্নাই।
তাছাড়া মোস্তাফিজের ভিত্তিমূল্যও একটা কারণ। বাঁহাতি পেসারের ভিত্তিমূল্য ছিল ২ কোটি রুপি। যেসময় তিনি নিলামে উঠলেন, সেসময় চেন্নাইয়ের হাতে ছিল ৫ কোটি রুপির মতো। যেহেতু আনক্যাপড খেলোয়াড়ের কোটা তখনও পূরণ হয়নি চেন্নাইয়ের, সেকারণেও মোস্তাফিজকে এড়িয়ে যেতে পারে তারা।
জাতীয় দলের ব্যস্ততা
গত আইপিএলের কথা নিশ্চয় মনে আছে। চেন্নাইয়ের দুটি ম্যাচ মিস করেছিলেন মোস্তাফিজ। বাংলাদেশ দলের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল তখন। ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আইপিএলের মাঝপথে দেশে ফিরতে হয়েছিল তাকে। সেকারণে দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি মোস্তাফিজ।
শুধু গতবার নয়, এর আগেও জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে আইপিএল খেলা হয়নি সাকিব-মোস্তাফিজের। ভারতীয় প্রতিযোগিতাটি চলার সময় বাংলাদেশ দলের খেলা থাকে। সেকারণে বিসিবি পুরো সময়ের অনাপত্তিপত্র দিতে রাজি হয় না। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো নিলামের সময় এই ব্যাপারগুলোতে পূর্ণ মনোযোগ দেয়। কোনও ক্রিকেটারকে পূর্ণ সময়ের জন্য না পেলে তাকে দলে যোগ করে না।
সামনের বছর আইপিএল ১৪ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ২৫ মে পর্যন্ত। আইসিসির ভবিষ্যৎ সূচি অনুযায়ী, এই সময়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে বাংলাদেশের। ২০২৫ সালের মার্চে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দেবে বাংলাদেশ। আফ্রিকান দেশটির বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এরপর মে মাসে পাকিস্তান সফরে আছে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি।
এই সিরিজ দুটিতে অবশ্যই মোস্তাফিজকে দলে চাইবে বাংলাদেশ। যদি তা-ই হয়, আইপিএলে তার উপেক্ষিত থাকাই তো স্বাভাবিক!
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest