প্রকাশিত: ১২:৩২ অপরাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক : ঈদকে সামনে রেখে সিলেটের সীমান্ত এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছে চোরাচালানী চক্র। সিলেটসহ দেশের ঈদবাজারকে টার্গেট করে ভারত থেকে চোরাই পথে আনছে শাড়ী, থ্রিপিস, লেহেঙ্গা, থান কাপড় ও কসমেটিক্স। আগে চোরাই পথে আসা পণ্যের মধ্যে বেশি ছিল গরু-মহিষ, চিনি, গরম মশলা ও কমলা। কিন্তু ঈদ ঘনিয়ে আনায় চোরাচালানী পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে কাপড় ও কসমেটিক্স। আগে বিভিন্ন ধরনের কাপড় ও প্রসাধন সামগ্রী মাঝে মধ্যে ধরা পড়লেও এখন বিজিবি ও পুলিশের হাতে জব্দ হচ্ছে বিশাল বিশাল চালান। গত এক মাসে বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়ন ও মহানগর পুলিশের হাতে জব্দ হয়েছে অন্তত ৫০ কোটি টাকার চোরাই পণ্য। এর মধ্যে গড়ে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার ভারতীয় কাপড় ও কসমেটিক্স সামগ্রী জব্দ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। চোরাচালান বৃদ্ধি পাওয়ায় ঈদপণ্যের আমদানি কমেছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন ব্যবসায়ীরা।
সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে সিলেট সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ‘ওপেন সিক্রেট’। একসময় সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আসতো গরু। প্রতিদিন ভারত থেকে হাজার হাজার গরু আসতো চোরাই পথে। গত দুইবছর ধরে চোরাচালানে যুক্ত হয় চিনি। দেশে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ভারত থেকে অনেকটা অবাধে আসতে থাকে চিনি। সীমান্তে বিজিবি ও সড়কে পুলিশ ‘ম্যানেজ’ করে চোরাচালানীচক্র প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার চিনি আনতে থাকে। চোরাচালানের সাথে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকায় চোরাচালানী পণ্যে ছেয়ে যায় সিলেট। এমনকি সিলেট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো ভারতীয় ‘বুুঙ্গার’ চিনি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিবর্তন আসে বিজিবি ও র্যাবে। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে বিজিবি। সড়কেও টহল বাড়ায় পুলিশ। এতে একের পর এক ধরা পড়তে থাকে চোরাই পণ্য। ৫ আগস্টের পর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কতিপয় সুবিধাবাদী নেতা চোরাচালানে যুক্ত হলে দল থেকে তাদেরকে বহিস্কারও করা হয়। রাজনৈতিক মদদ কমে যাওয়ায় বাড়তে থাকে অভিযানও। গত এক মাসে বিজিবি-৪৮ ব্যাটালিয়নের অভিযানে অন্তত ৫০ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ভারতীয় কাপড় ও কসমেটিক্স।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চালান জব্দ হয় গত ১২ মার্চ। ওইদিন বিজিবি-৪৮ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন বিভিন্ন ক্যাম্পের টহল দল অভিযান চালিয়ে ২১ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল ভারতীয় শাড়ী, লেহেঙ্গা, থান কাপড় ও বিভিন্ন ধরণের কসমেটিক্স সামগ্রী। এছাড়া গত ৭ মার্চ, ১০ মার্চ, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৩ ফেব্রুয়ারি ও ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজিবি সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালায়। প্রতিটি অভিযানে কোটি টাকার উপরে ভারতীয় পণ্য জব্দ করে। এছাড়া সীমান্ত থেকে ভারতীয় পণ্য পরিবহন করে সিলেট নগরী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কয়েক কোটি টাকার পণ্য জব্দ করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ কাপড় ও কসমেটিক্স রয়েছে।
সূত্র জানায়, সিলেটের বাজারে ভারতীয় কাপড় ও কসমেটিক্সের চাহিদা প্রচুর। ঈদ আসলে এই চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এই সুযোগে চোরকারবারিরা ভারত থেকে চোরাই পথে কাপড় ও কসমেটিকসসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য অবৈধভাবে আনা বাড়িয়ে দেয়। প্রতি বছর এ চোরাচালান অব্যাহত থাকলেও এ বছর অবৈধ ব্যবসা বহুগুণে বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিজিবি ৪৮ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. নাজমুল হক জানান, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর কিছু লোক পেশা হিসেবে চোরাচালান বেছে নিয়েছে। জনসচেতনতার পাশাপাশি অভিযান চালিয়েও তাদেরকে এই পথ থেকে ফেরানো যাচ্ছে না। জনসচেতনতা ছাড়া শুধু অভিযান করে চোরাচালান বন্ধ সম্ভব নয়। এজন্য সামাজিক প্রতিরোধও প্রয়োজন।




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest