সিলেট২৪এক্সপ্রেস ডেস্ক : সিলেটের কানাইঘাট থানার গাছ বাড়ি এলাকায় সুরমা নদীর চড় হইতে গত ২৮/০৬/২০২২ ইং রোজ মঙ্গলবার এক তরুণীর ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত তরুণীর নাম শারমিন বেগম । তিনি কানাইঘাট থানাধীন তিনচটি গ্রামের আব্দুল হকের কন্যা বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়। অপহরণপূর্বক ধর্ষণ ও হত্যা থানায় মামলা দায়ের।

উল্লেখ্য যে, গত ২৫ /০৬/২০২২ ইং তারিখ রোজ শনিবার শারমিন বেগমের বাড়িতে তার বিবাহ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উক্তবিবাহ অনুষ্ঠান থেকে তিনচটি গ্রামের ইউ/পি সদস্য হুমায়ুন কবিরের পুত্র সোহেল কবির ও তার সঙ্গীয় সন্ত্রাসী লোকজন শারমিন বেগমের বাড়িতে গিয়ে শারমিন বেগমের মা-বাবা ও বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনদের অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করে শারমিন বেগমকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনার পর গতকাল রোজ মঙ্গলবার গাছবাড়ি এলাকার পাশে সুরমা নদীর চড়ে শারমিন বেগমের ক্ষত বিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় কৃষক আব্দুল জলিল সুরমা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে শারমিন বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে সুর-চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। পরে শারমিনের পরিবারে খবর পাঠালে পরিবারের লোকজন আসিয়া লাশ সনাক্ত করেন।

এবিষয়ে শারমিন বেগমের ভাই শিহাব উদ্দিন জানান তাদের প্রতিবেশী ইউ/পি সদস্য হুমায়ুন কবিরের ছেলে সোহেল কবির সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে তার বোনকে গত ২৫/০৬/২০২২ ইং তারিখ বিবাহ অনুষ্ঠান থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ধর্ষন করে এবং এবং পরবর্তীতে হত্যা করে তার ক্ষত বিক্ষত লাশ নদীর চড়ে ফেলে রাখে । তিনি বলেন সোহেল কবির একজন মাদকসেবী মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ ও নারী লোভী লোক হয়। সে ও তার সঙ্গীয় সন্ত্রাসী লোকজন নিয়মিত স্কুল কলেজ পড়ুয়া মেয়েদেরকে উত্যক্ত করে এবং এলাকার ব্যবসায়ীদের নিকট হইতে নিয়মিত চাঁদা আদায় সহ চুরি চিনতাই করে থাকে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে সোহেল কবিরের পিতা হুমায়ুন কবির বাজার কমিটির সভাপতি হওয়ায় সোহেল আরো বেপরোয়া যয়ে ওঠে।

তিনি বলেন তার বোন শারমিন বেগম কলেজে যাওয়ার পথে সোহেল ও তার সঙ্গীয় বখাটে লোকজন তার বোনকে উত্যক্ত করতো, বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিত। ফলে তিনি ও তার পরিবারের সিদ্ধান্তে সোহেলের রোশানল হইতে বাঁচার জন্য তার বোন শারমিন আক্তার এর পড়াশোনা বন্ধ করা হয়। গত ২৫/০৬/২০২২ ইং তারিখ শারমিনের বিবাহ অনুষ্ঠান ছিল। সোহেল পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে তাদের বাড়িতে আক্রমণ চালিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তার বোনকে জিম্মি করে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তিনি জানান তারা গত তিন দিন যাবত তার বোনকে পাগলের মত খোঁজাখুঁজি করতেছেন। কিন্তু স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করলে থানা কর্তৃপক্ষ তেমন কোন সাড়া দেন নাই।

শারমিন বেগমের লাল শনাক্ত করার পর স্থানীয় থানায় খবর পাঠানো হলে থানা কর্তৃপক্ষ উপস্থিত হন। পুলিশ উপ-পরিদর্শক শরিফুজ্জামান শারমিন বেগমের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। ময়না তদন্ত শেষে গতকাল বুধবার শারমিন বেগমের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তীতে শারমিনের ভাই শিহাব উদ্দিন বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় সোহেল কবিরসহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ পূর্বক ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন।