প্রকাশিত: ৯:০৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক : ধ্বংসাত্মক কিংবা প্রতিহিংসা, প্রতিশোধের পালা বন্ধ করে ভালোবাসা ও শান্তির বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তরুণদের হাত শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে বেগম জিয়া বলেন,আর কোন প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা নয়, আসুন ভালোবাসা-শান্তি-জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলি।
বুধবার (৭ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এসময় তিনি সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে যে তরুণরা বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতা এনেছেন। তাদের হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, প্রতিহিংসা, প্রতিশোধের পালা বন্ধ করে ভালোবাসা ও শান্তির বাংলাদেশ গড়াতে হবে। দীর্ঘদিন পর সমাবেশে যোগ দেন সারা দেশের হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী।
দুই মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় খালেদা জিয়া বলেন, দীর্ঘদিনের নজিরবিহীন দুর্নীতি ও গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে নির্মাণ করতে হবে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।তিনি আরও বলেন, এই ছাত্র-তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ।তারা যে স্বপ্ন নিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে মেধা,যোগ্যতা ও জ্ঞানভিত্তিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। শোষণহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে।সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করতে বলে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, শান্তি, প্রগতি ও সাম্যের ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণে আসুন আমরা তরুণদের হাত শক্তিশালী করি।
খালেদা জিয়া বলেন ‘আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের বীর সন্তানদের, যারা মরণপণ সংগ্রাম করে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে,’। এই সংগ্রামে শত শত শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, এই বিজয় নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, ‘আমি কারাবন্দি থাকাবস্থায় আপনারা আমার কারামুক্তি ও রোগমুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন, দোয়া করেছেন সে জন্য আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকারের তরফ থেকে মুক্তি পেয়েছি।’ প্রায় ১৫ বছর পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।২০১০ সাথে নয়াপল্টনে আয়োজিত সবশেষ জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।২০১৮ সালে দুই মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় খালেদা জিয়াকে।করোনার প্রকোপ বাড়ায় ২ বছর পর তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হলেও জনসমুক্ষে বক্তব্য দেয়ার বিধিনিষেধ অরোপ করে আদালত।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাল হিসেবে দাঁড়ান; তারেক রহমান
দেশবাসীকে ধর্ম-বর্ণ-পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাল হিসেবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।গতকাল বুধবার (০৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন,স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষ স্বাধীনতা রক্ষায় কোনো শর্ত মানে না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ২০২৪ সালে দেশের জনগণ দেখেছে এক নতুন স্বাধীনতা। দেশের চলমান অর্জনকে নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র চলছে। ধর্ম-বর্ণ-পরিচয় এর ঊর্ধ্বে উঠে সকলকে নিরাপত্তা দিতে হবে। যে যেখানে বসবাস করছেন সেখানে ধর্মীয় পরিচয় যাই হোক না কেন, সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।বাংলাদেশের ভূখ-ে দাঁড়িয়ে সকল জনগণের পরিচয় একটি, সেটি হলো- সবাই বাংলাদেশি।কারো প্রতি রাগ রাখবেন না।প্রতিশোধ নিতে যাবেন না।
তারেক রহমান বলেন,পুলিশ জনগণের শত্রু নয়।বিনা ভোটে নির্বাচিত শেখ হাসিনা পুলিশকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে।শেখ হাসিনা পালানোর পর একটি চক্র পুলিশের মনোবল ভাঙতে চেষ্টা চালাচ্ছে।দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।তারেক রহমান বলেন,পুলিশ জনগণের শত্রু নয়।বিনা ভোটে নির্বাচিত শেখ হাসিনা পুলিশকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে।শেখ হাসিনা পালানোর পর একটি চক্র পুলিশের মনোবল ভাঙতে চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন,নিয়োগ বা প্রমোশনে মেধার সর্বাধিকার অগ্রাধিকার থাকতে হবে।উন্নয়নে বৈদেশিক নির্ভরতা কমিয়ে আনতে হবে।দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকার সমস্যা সমাধান করতে হবে। সবার জন্য সুবিচার নিশ্চিত করতে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।তারেক রহমান আরো বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা স্থানান্তর করতে হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরা দেশের তরুণদের জন্য একটি নিরাপদ দেশ গড়ে তুলতে পারব।
বিলম্ব না করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করুন : মির্জা ফখরুল
কালবিলম্ব না করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।একইসঙ্গে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান ও দাবি জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানাব,কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করুন।এই সরকার যারা থাকবেন,তারা যেন তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা আমরা তাদের করবো।
দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে দলটির মহাসচিব বলেন,আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে।একজন স্বৈরচার বিরোধীমত দমন করে, মানুষের কণ্ঠ রোধ করে কত দিনই বা টিকতে পারে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানে তাকে ঠিকই পালিয়ে যেতে হলো।এ বিজয় আপনাদের সকলের।এ বিজয় ছাত্রদের,এ বিজয় বাংলাদেশের জনগনের।যে বিজয় অর্জিত হয়েছে,এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে।তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন আমরা তাদের না দিই।যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র।এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।এরা বিএনপির কর্মী হতে পারে না।
সমাবেশের সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরো বলেন,এবারের ছাত্র আন্দোলনে আমার সহযোগিতা করেছি আমাদের সাধ্যমতো।সংহতি জানিয়েছিলাম শুরু থেকেই।এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি জানাচ্ছি। তাদের পরিবারকে বলবো শোককে শক্তিতে পরিনত করুন। আমরা আপনাদের পাশে আছি। অকোতভয় এই ছাত্ররাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছে,এরফলে এই স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে।সাথে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে স্বৈরচার।এ বিজয় ছাত্র ও জনতার। এই বিজয় অনেকককে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে।অনেককে লুটপাট করছে, এরা তাদেরকে লোক যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল। সাবধান থাকতে হবে।
সামনের দিনে সুসংগঠিত থাকতে ধৈর্যের সাথে আমাদের এ বিজয় ধরে রাখতে হবে,কোনভাবেই যেন ব্যত্যয় না ঘটে। কেউ কোন ভাবেই কোন অপকর্ম জড়িত হবে না। শুনছি গার্মেন্টস কারখানায়,আগুন দিচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। গার্মেন্টস কারখানা কি দোষ করলো।এগুলোর সাথেতো আন্দোলনকারীরা জড়িত থাকার কথা নয়।জ্বালাও পোড়াও তো কখনো আন্দোলনকারীদের কাজ নয়।আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই এই ধরনের অপকর্ম যারা করছে বা যারা এর সাথে জড়িত তারা দেশের শত্রু,জাতির শত্রু।
বিলম্ব না করে যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করতে রাষ্ট্রপতি প্রতি আহবান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন,তিনমাসের মাসের মধ্যে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারে না।মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষায় বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলনে করে আসছে গত ১৬ বছর ধরে।কিন্তু পালিয়ে যাওয়া সরকার মানুষের সেই অধিকার দিতে চাননি।মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রাণ দিয়ে হয়েছে কত মানুষকে।
ফ্যাসিবাদি শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করায় ছাত্রদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান তিনি।তিনি বলেন,স্বৈরাচার পালিয়েছে গেছে,তার পতন হয়েছে কিন্তু তার দোসরা এখনো রয়ে গেছে। সুযোগ বুঝে এরা মাথাচাড়া দিতে পারে,সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest