সাক্ষী দেবার ভয়ে মানুষ বিপদে এগিয়ে আসে না এআইজি সোহেল রানা সাক্ষাৎকার

প্রকাশিত: ৩:২৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২

সাক্ষী দেবার ভয়ে মানুষ বিপদে এগিয়ে আসে না এআইজি সোহেল রানা সাক্ষাৎকার

মো : আবু বকর : সিলেট টুয়েন্টিফোর এক্সপ্রেসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এআইজি সোহেল রানা
দেশে একের পর এক খুন-ধর্ষণ, কুপিয়ে হত্যা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ দাঁড়িয়ে থেকে দর্শকের ভূমিকা পালন করলেও ভূক্তভোগীকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, প্রত্যক্ষদশীরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে কুপিয়ে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধের ছবি তোলে অথবা ভিডিও করে।

 

যেখানে মানুষের বিপদে অন্যরা সহায়তার জন্য এগিয়ে আসার কথা সেখানে মানুষ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে অথবা ক্যামেরা মোবাইল দিয়ে ছবি উঠায়। ভুক্তভোগীর সহায়তায় এগিয়ে না আসার কালণ কি? এটি কি শুধুই সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় নাকি পুলিশ হয়রানি থেকে নিজেকে বাঁচাতে ভুক্তভোগীকে সহয়তায় এগিয়ে আসে না এসব বিষয় নিয়ে,
প্রতিবেদকে মো : আবু বকর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন, এআইজি মো: সোহেল রানা (মিডিয়া এন্ড পিআরও) বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টারস, ঢাকা ।

 

বিষয়টি পুলিশ হয়রানির নয়। মূলত সাক্ষ্যি হবার ভয়ে মানুষ এ ধরনের পরিস্হিতি এড়িয়ে চলে। যেহেতু সাক্ষ্য গ্রহন তদন্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি আর প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য সবচেয়ে বেশি গ্রহনযোগ্য, তাই পুলিশ সবসময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহনের চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে যারা ঘটনাস্থলের সবচেয়ে কাছে থাকে অথবা ভিকটিমকে উদ্ধারের বা বাঁচানোর চেষ্টা করেন তারা ঘটনা সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জানান বলে এমনটি হয়ে থাকে।

 

তদন্তে সাক্ষ্য দিলে পরবর্তিতে এক বা একাধিকবার ঐ সাক্ষ্যিকে কোর্টে সাক্ষ্য দিতে হয়, যেটিকে অনেকেই বিড়ম্বনা মনে করেন। কারন এর জন্য নিজের কাজ-কর্ম, সময়, শ্রম এবং অর্থের অপচয় হয়।

 

অনেক সময় সাক্ষ্য প্রদানের কারনে মামলার আসামির সাথে সাক্ষ্যির শত্রুতা তৈরী হয়, যার ফলে সাক্ষ্যি নিরাপত্তাহিনতায় ভুগেন।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো : ফেরদৌস হোসেন : প্রকাশ্য হত্যার সময় আক্রান্ত মানুষকে বাচাতে সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসেনা কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক সংঘতিট দূরবল হয়ে গেছে এটা শক্ত থাকলে প্রতিকার করা যেত রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব হল মানুষের নিরাপত্তা নিসচিত করা ইন্টারন্যশনাল হিউম্যান সিকিউরিটি কথা বলা হচ্ছে পারসনাল সিকিউরিটি রাষ্ট্র করবে না সমাজ করবে রাষ্ট্র চাইলে নিচই ভূমিকা নিতে পারে।

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এ্যাসিষ্ট্যান্ট এ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আওলাদ হোসেন, এ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রীম কোট, প্রকাশ্য হত্যার সময় আক্রান্ত মানুষকে বাচাতে সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসেনা কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন,বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত আইন ব্যবস্থার আলোকে তদন্ত ও বিচার পদ্ধতিতে দীর্ঘ সূত্রিতা ন্যায় বিচারকে বিলম্বিত করছে।

 

অপরাধজনক ঘটনা তদন্তে অদক্ষতাসহ প্রভাবমুক্ত ভাবে তদন্ত সম্পন্ম না করতে পারার কারণে অনেক সময় নিরাপরাধ ব্যক্তি বিশেষে ভোগান্তির ফলে সাধারণ জনগন নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছে । সামাজিক ভাবে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি সাধারণ জনগণের নেতি বাচক দৃষ্টি ভঙ্গি তৈরি হওয়ায় বিপদগ্রন্ত কাউকে তাৎক্ষনিক ভাবে বিপদ গ্রহস্ত জনকে সহায়তায় এগিয়ে আসে না।

 

আইনের কঠোর বান্তবায়ন, দৃষ্টান্ত মূলক সর্বোচ্চ শান্তির বিধান, দ্রুত সুবিচার প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ সহ সামাজিক মূল্যবোধ বৃদ্ধির মাধ্যমে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুই হামলাকারীর ভয় নয়, পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার ভয়ে এখন আর কেউ কাউকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে না।

 

এআইজি সোহেল রানা আপনাকেও এবং সিলেট টুয়েন্টিফোর এক্সপ্রেস পরিবারকে ধন্যবাদ।