প্রকাশিত: ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২২
অনলাইন ডেস্ক : মাদকের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া ড. এম ইমদাদুল হক শিক্ষকতা করছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশে-বিদেশে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও মাদক নিয়ে কাজ করছেন তিনি। সমকালের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এই বিশেষজ্ঞ দেশের মাদক পরিস্থিতি ও তা থেকে উত্তরণে করণীয় নিয়ে আলোকপাত করেছেন।
সমকাল :বাংলাদেশের মাদক পরিস্থিতি কীভাবে দেখছেন?
ড. ইমদাদুল হক :যুবসমাজের জন্য মাদক বড় ধরনের অভিশাপ। মাদক কারবারের আর্থিক খেসারতও দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আমাদের জাতীয় বাজেটের এক-দশমাংশ মাদকের বাজার রয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলো আমাদের টার্গেট করেছে, মাদকের বাজার থেকে তারা লাভবান হচ্ছে।
মাদকের বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়ানোর সময়। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, সব রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের মানুষকে নিখাদ দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে হবে, উনিশ শতকে যেটা চীন দেখিয়েছে। ওই সময় ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় আফিমের মার্কেট ছিল চীন। এক সময় চীনের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরপরই চীন পরপর দুটি ‘অফিয়াম ওয়ারে’ জড়াতে বাধ্য হয়। যদিও দুটি যুদ্ধে চীন পরাজিত হয়েছিল। এরপর চীন বাধ্য হয়ে নিজ দেশে আফিম চাষ শুরু করে দেয়। দুটি কারণে এটা তারা করেছিল। প্রথমত, ব্রিটেনের আফিম দেশে ঢোকা বন্ধ করা। দ্বিতীয়ত, আফিম বিক্রির টাকা যাতে ব্রিটেনের কাছে না যায়। চীন নিজেরাই আফিম উৎপাদন করে মাদকাসক্তদের কাছে পৌঁছে দেয়। এরপর মাদক থেকে বের হয়ে আসতে চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লব হয়েছে। ধীরে ধীরে তারা যুবসমাজকে মাদকের গ্রাস থেকে রক্ষা করেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো যদি মাদক প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা না রাখে তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচেষ্টা রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হবে।
সমকাল :প্রায়ই শোনা যায়, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। এই যুদ্ধ জয়ের উপায় কী?
ড. ইমদাদুল হক :আমাদের এখানে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকরা কম ধরা পড়েন। মাদক কারবারে যাঁরা জড়িত তাঁদের অধিকাংশই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকেন, এটা প্রমাণিত। যাঁরা মাদক মামলায় জেলে যান, তাঁদের অধিকাংশের রাজনৈতিক লেবাস নেই। তাঁরা বাহক মাত্র। এক সময় যুক্তরাষ্ট্রও মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। আমাদের এখানে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যদি সমাজের সর্বস্তরের নাগরিক দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে না পারি, তাহলে এ ধরনের যুদ্ধ এখানে কাজে আসবে না। এটাও সত্যি, মাদক ঘিরে দেশে এক ধরনের মাফিয়া সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। তারা সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমছে।
সমকাল :আর কোনো পরামর্শ?
ড. ইমদাদুল হক :যেহেতু কারাগারের বন্দিদের অধিকাংশ মাদক মামলায় গ্রেপ্তার, তাই তাঁদের ঘিরে কার্যকর উদ্দীপনামূলক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেকবার কারাবন্দিদের সঙ্গে আমার কথা বলার সুযোগ হয়েছে। তাঁদের অনেকের দাবি, কারাগারে গিয়ে অন্য বন্দিদের সঙ্গে মিশে তাঁরা আরও বড় মাদক কারবারি হয়েছেন। দেখা যায়, প্রথমে অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলেন; সেখানে মাদক বিক্রেতাদের সঙ্গে পরিচয় হয়ে তিনিও পরবর্তী সময়ে মাদক কারবারি হয়ে উঠলেন।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশেষ প্রতিনিধি সাহাদাত হোসেন পরশ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest