প্রকাশিত: ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২৫
দিপংকর বনিক : সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের রনারচর গ্রামের এক অজোপাড়ায় জন্ম নেওয়া তুষার দাস এখন আর শুধু একজন যুবক নন, বরং মঞ্চে আলো ছড়ানো এক ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তুষার অনুরাগী নামেই যিনি আজ বেশ পরিচিত।
যাত্রাপালা, ঢপ গান, নাটক কিংবা ধামাইল—সব মাধ্যমে তিনি যেন নিজস্ব ছাপ রেখে চলেছেন। বয়স মাত্র ২৫। তবে জীবন ছিল রঙিন নয়, বরং প্রতিনিয়ত সংগ্রামের। বাবা ক্ষিতিশ চন্দ্র দাস একজন দিনমজুর। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। মা নমিতা রানী তালুকদার একজন গৃহিণী। টানাপোড়নের সংসারে অল্প বয়সেই বিয়ে দিতে হয় একমাত্র ছোট বোনকে। খরচ চালিয়ে যেতে না পারায় এইচএসসিতেই পড়াশোনার ইতি টানতে হয় দিরাই সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র তুষার দাসের। এ অবস্থায়ও থেমে যাননি তুষার। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকেই বেছে নিয়েছেন জীবিকার হাতিয়ার হিসেবে।

অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই সাংস্কৃতিক মঞ্চের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। শুরুটা ঢপ যাত্রায় নারী চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। তবে এই পথ সহজ ছিল না তার। শুরুতে গ্রাম্য সমাজের কটাক্ষ সহ্য করতে হয়েছে। তবু পিছু হটেননি। আজ তিনি একজন পরিপক্ব অভিনয়শিল্পী ও সংগঠক।
বর্তমানে তুষার যুক্ত আছেন ‘খাঘাউড়া জয় বাবা লোকনাথ নাট্য সংঘের সঙ্গে। পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে পরিচালনা করছেন ‘সুরমা তীরের ধামাইল দল’ নামের একটি সংগঠন। যেখানে রয়েছেন ছয় নারী ও পাঁচ পুরুষ সদস্য। দলটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে ইতিমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে।
তুষারের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গেছে ভারতের আগরতলা ও ত্রিপুরাতে। তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মোহনপুরে এক সাংস্কৃতিক আয়োজনে সম্মাননাও লাভ করেন। এছাড়া সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, গাজীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তিনি নিয়মিত প্রোগ্রাম করে থাকেন। তুষার দাস সাংস্কৃতিক জগতে হয়ে উঠেছেন এক অনুপ্রেরণার নাম। এতসব পেলেও অভাব-অনটন পিছু ছাড়ছে না তার।

“তুষার অনুরাগীর সাহস, নিষ্ঠা এবং মঞ্চের প্রতি তার ভালোবাসা আজকের তরুণদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে,”বলেন নাট্য সংঘের প্রবীণ সদস্য রিবেন তালুকদার। তিনি আরও বলেন, সমাজের চোখে যা একসময় ছিল অবজ্ঞার বস্তু, তা আজ সমাজ বদলের হাতিয়ার। তুষার প্রমাণ করেছেন, প্রতিকূলতাই একদিন হতে পারে আলো হয়ে ওঠার প্রেরণা।

তুষার দাস (তুষার অনুরাগী) বলেন, “সঙ্গীতই আমার প্রাণ, অভিনয় আমার আত্মা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মঞ্চের সঙ্গেই থাকতে চাই। সরকার থেকে যদি কিছু সহায়তা পেতাম, বাবা-মায়ের সুচিকিৎসা ও সেবায় কাজে লাগাতে পারতাম।”




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest