প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১০৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক। বিগত একশ বছরেও এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখেনি দেশটির বাসিন্দারা। মাত্র ২০ সেকেন্ডেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কয়েকটি শহর। অনেকে ঘুমের মধ্যেই প্রাণ হারান। ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনো অনেকে চাপা পড়ে আছেন। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ১১ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রথম ভূমিকম্পটির ১৯ মিনিট পর আরেকটি ভূকম্পন হয়। রিখটার স্কেলে দ্বিতীয় ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯। রাতে প্রাণরক্ষায় অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। শনিবারও শত শত মানুষকে সড়কের পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপির।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্যমতে, মরক্কোর চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেচ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলাস পর্বতমালায় ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার।
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মারাকেচ, আল-হাউজ, ওয়ারজাজেট, আজিলাল, চিচাউয়া, তারউদান্ত এলাকায় বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ প্রাণহানি ঘটেছে পাহাড়ি এলাকায়, যেখানে দ্রুত পৌঁছানো কঠিন।
মারাকেচের বাসিন্দারা জানান, ভূমিকম্পের কারণে প্রাচীন এ শহরের বেশকিছু ভবন ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, মসজিদের একটি মিনার ভেঙে পড়েছে। কিছু ভাঙাচোরা গাড়ির ওপর এর ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
মারাকেচের বাসিন্দা ইদ ওয়াজিজ হাসান বলেন, এখানকার বাড়িঘরগুলো গাদাগাদি করে তৈরি করা। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। ধ্বংসাবশেষ সরানোর মতো ভারী সরঞ্জামাদি মানুষের কাছে নেই। তারা খালি হাতেই ধ্বংসাবশেষ সরানোর চেষ্টা করছেন।
আরেক বাসিন্দা ব্রাহিম হিম্মি জানান, তিনি শহরটিতে বেশকিছু অ্যাম্বুলেন্স আসা-যাওয়া করতে দেখেছেন। অনেক ভবনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবারও ভূকম্পের আশঙ্কায় মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন।
৪৩ বছর বয়সি হাউদা হাফসি বলেন, ঘরের সিলিং থেকে ঝাড়বাতি ভেঙে পড়ার পর আমি দৌড়ে বাইরে চলে আসি। আমি এখনো সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় আছি। আমাদের ভয় লাগছে।
ডালিলা ফাহেম নামের আরেক নারী বলেন, তার বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। রাতে ভূমিকম্পের সময় জেগে ছিলেন ডালিলা। তিনি মনে করেন, এর জন্যই প্রাণে বেঁচে গেছেন। ডালিলা বলেন, ভাগ্য ভালো, তখনো আমি ঘুমাইনি।
পার্বত্য গ্রাম আসনির বাসিন্দা মুন্তাসির ইত্রি বলেন, এখানকার বেশিরভাগ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার প্রতিবেশীরা ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে। হাতের কাছে যা পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়েই স্থানীয় লোকজন আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আসনির আরেকটু পশ্চিমে তারৌদান্ত অঞ্চলের বাসিন্দা শিক্ষক হামিদ আফকার ভূমিকম্পের সময় ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন। হামিদ বলেন, ২০ সেকেন্ডের মতো কম্পন হয়েছে। দরজাগুলো আপনাআপনি খুলছিল আর বন্ধ হচ্ছিল। আমি দ্রুত তৃতীয় তলা থেকে নিচে নেমে আসি।
এদিকে ভয়বাহ এ ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। ভ্যাটিকান পোপ এ নিয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাত্রেঁদ্ধা বলেছেন, ফ্রান্স প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য সাহায্য করতে প্রস্তুত। মরক্কোর প্রতিবেশী স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ মরক্কোর জনগণের প্রতি সংহতি ও সমর্থন ব্যক্ত করেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন, আমরা বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest