প্রকাশিত: ৮:১৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২১, ২০২৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বুলগেরিয়ার স্টারা জাগোরা শহরে প্রতি বছর বসে একটি বিয়ের বাজার। যদি ভাবেন এখানে বিয়ের সদাইপাতি বিক্রি হয় তবে ভুল ভাবছেন।
এখনে পণ্য হিসেবে থাকে শুধু কুমারী-তরুণী মেয়েরা, যারা তাদের সম্ভাব্য বরদের সামনে প্রদর্শিত করা হয়।
পুরুষেরা দরদাম করে বিয়ের পাত্রী কেনেন এই হাটে। স্থানীয়ভাবে এই বাজারকে ‘জিপসি বিয়ে বাজার’ বলে। মেয়েরা এখানে লম্বা ভেলভেট স্কার্ট ও উজ্জ্বল রঙের হেডস্কার্ফ পরিধান করে এবং সোনালি গয়নায় তাদের গলা, আঙুল, কান এবং দাঁতে ঝকমক করে।
কালাইজ্জি রোমাদের প্রথা
বুলগেরিয়ায় রয়েছে প্রায় ১৮ হাজার কালাইজ্জি রোমা গোত্রের অধিবাসী। এই গোত্রের লোকদের ইউরোপ জুড়ে একটু বাঁকা চোখে দেখা হয়। ইউরোপে জীবন সঙ্গী খোঁজার জন্য ডেটিং একটি প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি হলেও এই গোত্রে ডেটিং এবং বাইরের বিয়ে একেবারে অবাঞ্ছিত। ফলে কালাইজ্জি জনসাধারণের জন্য এই বাজারই একমাত্র সুযোগ, যেখানে যুবক-যুবতীরা একে অপরের সাথে দেখা করতে পারে এবং সম্ভাব্য জীবনসঙ্গী খুঁজে পেতে পারে।
সুন্দরী মেয়েরা মোটা দাম হাঁকেন
হিস্টোস জর্জিয়েভ বয়স ১৮ বছর, ডনকা দিমিত্রোভার পিতার সাথে দরদাম করছিলেন। মেয়েটির বয়সও ১৮ বছর। আলোচনা আটকে গেছে ৭ হাজার ৫০০ থেকে ১১ হাজার ৩০০ ডলারের এর মধ্যে। এই দাম একজন বুলগেরিয়ানের গড় বাৎসরিক আয়ের চেয়ে অনেক বেশি। ছেলেটি জানায়, সে সাইপ্রাসে কাজ করে এই টাকা জমিয়েছে। সে জানায় কনে যদি খুব সুন্দরী হয়, তাহলে দাম ১৩ হাজার ডলারও হতে পারে আর ‘অত্যন্ত সুন্দরী’ তা হলে ২১ হাজার পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে।
এই দরদামের সংস্কৃতি নিয়ে জানতে চাইলে বুলগেরিয়ার জাতীয়তাত্ত্বিক গবেষক ভেলচো ক্রুসটেভ জানান, এখানে পুরুষ একজন স্ত্রীর জন্য টাকা দিচ্ছে না, বরং তার কুমারীত্বের জন্য টাকা দিচ্ছে। তার মতে, যেহেতু বড় অংকের টাকা দেওয়া হচ্ছে, কনের নতুন পরিবার তাকে যথাযথভাবে মর্যাদাই দেবে।
মেয়েদের দৃষ্টিভঙ্গি
বাইরের পুরুষদের কাছে তাদের কন্যাদের ‘চুরি হয়ে যাওয়া ঠেকাতে’ কালাইজ্জি পরিবারগুলো সাধারণত তাদের মেয়েদের ১৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বিয়ে দিয়ে দেয় এবং একাদশ শ্রেণীর পর তারা স্কুল ছেড়ে দেয়। কালাইজ্জি মহিলারা ঐতিহাসিকভাবে শুধু নিজের স্বামীর কাছেই তার সৌদর্য প্রকাশ করে। তারা মা এবং স্ত্রী হিসেবে তাদের দায়িত্ব পালন করে। শিক্ষা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং বুলগেরিয়ার রোমা মেয়েদের মধ্যে এক পঞ্চমাংশ শিক্ষিত নয়। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, মাত্র ১০ শতাংশ নারী মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করে।
কালাইজ্জি মহিলাদের জন্য প্রথমবার বিয়ে করার সময় কুমারী হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক টাকা কুমারীত্বের জন্য দেওয়া হয়। এই কনের বাজার একটি প্রাচীন প্রথা যা কালাইজ্জি পরিচয়ের জন্য অপরিহার্য, তাই এই প্রথাটি বেঁচে আছে, তবে এখনকার দিনে বেশিরভাগ মেয়েরই বিয়ে করার বিষয়ে কিছুটা হলেও পছন্দ রয়েছে- যদিও তা পরিবারের চাপ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তবে এই চিন্তা কখনোই যথাযত হতে পারে না যে নারীরা এমন সম্পত্তি যাকে বিক্রি, দরদাম করা বা কেনা যায়। ইউরোপে কালাইজ্জি রোমাদের এই প্রথা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা দুটোই আছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest