প্রকাশিত: ১০:২৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি ফ্রান্সে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতি ছড়িয়ে দেওয়ার তৎপরতা জোরদার হয়েছে। আর এ কারণেই ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম দেশটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন মুসলিম বিজ্ঞানীসহ উচ্চশিক্ষিতরা।
সম্প্রতি আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
যদিও ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বসবাস। তবুও সেখানে নানা উপায়ে মুসলমানদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে মুসলমানদের সম্পর্কে নানা অপপ্রচার চালিয়ে এক ধরণের অসহনীয় পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। এ কারণে ফ্রান্স ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন দেশটির বিশিষ্ট মুসলিম ব্যক্তিত্বরা।
একটি নতুন জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ফ্রান্স ছেড়ে যাওয়া প্রতি ১০ জন বিশিষ্ট মুসলিম ব্যক্তিত্বের মধ্যে সাতজনেরও বেশি প্রধান কারণ হিসেবে সেখানে ইসলামোফোবিয়া বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন।
অধ্যাপক অলিভিয়ার এস্টিভসের নেতৃত্বে লিল ইউনিভার্সিটি পরিচালিত ওই গবেষণা জরিপে বলা হয়েছে, বিপুল সংখ্যক উচ্চ শিক্ষিত মুসলমান ফ্রান্স ছেড়ে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে যাচ্ছেন।
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং মানবাধিকার কর্মী ইয়াসির লুআতি আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ধর্মীয় স্বাধীনতার অভাবেই উচ্চশিক্ষিত মুসলমানেরা আর ফ্রান্সে থাকতে চাইছেন না।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্সে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বেড়েছে। ফ্রান্সের মধ্য-ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রর শাসনামলে দেশটির মুসলিম নাগরিক ও ইসলামি কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে বহু আইন পাস করা হয়েছে। এসব বিধিনিষেধ দেশটিতে বসবাসকারী মুসলমানদের জীবনযাত্রাকে আগের চেয়েও কঠিন করে তুলেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফরাসি সরকার সেখানকার মুসলমানদের ফরাসি সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই করে গড়ে তুলতে এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাত দাঁড় করিয়ে ‘ইসলামিক অ্যাসেম্বলি অব ফ্রান্স’ নামে একটি নতুন সংগঠন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। এটি আসলে ফ্রান্সে ইসলামকে দুর্বল করার জন্য ম্যাঁক্র সরকারের নানা পরিকল্পনার একটি।
নতুন সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পরপরই ‘ফ্রান্সের মুসলিম মাজহাবগুলোর পরিষদ’ নামের সংগঠনকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাঁক্রর নীতির ভিত্তি হচ্ছে ‘আক্রমণাত্মক সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’। মতবাদটি সমাজে ধর্ম এবং ধর্মীয় প্রতীকের উপস্থিতির বিরোধী। এ কারণে ফরাসি সরকার ইসলামের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে না। তারা স্কুলে, এমনকি অলিম্পিক গেমসের মতো বৈশ্বিক জায়গাতেও ইসলামি পোশাক, পর্দা বা হিজাব নিষিদ্ধ করেছে।
ফ্রান্সে ইসলামোফোবিক রাষ্ট্রীয় নীতি এবং সমাজের বৈষম্যমূলক মনোভাব মুসলিম নারীদের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। যারা কিনা সংখ্যায় প্রায় ৭০ লাখ, যা ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ।
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ফরাসি মুসলিম নারীরা জানান, ইসলামফোবিয়ার ব্যাপকতার কারণে তার দেশ ছেড়ে বিদেশে তাদের কর্মজীবন চালিয়ে যাওয়াকেই বেছে নিয়েছেন।
যে সব মুসলিম নারী ফ্রান্সে থাকতে পছন্দ করেন, তারা সামাজিক চাপ মেনে চলার জন্য মাথার স্কার্ফ খুলে ফেলা বা বৈষম্যের মুখে কর্মজীবন থেকে সরে যাওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও বাধ্য হয়েছেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest