নারী সমর্থককে জড়িয়ে ধরে নিষিদ্ধ হলেন ইরানের সেই গোলকিপার

প্রকাশিত: ৮:৫৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২৪

নারী সমর্থককে জড়িয়ে ধরে নিষিদ্ধ হলেন ইরানের সেই গোলকিপার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাঠে নারী সমর্থককে জড়িয়ে ধরার ঘটনায় ইরানের শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাব ইসতেগলালের গোলকিপার হোসেইন হোসেইনিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

 

ইরানের সংবাদমাধ্যম ‘খবর ভারজেশি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

গত ১২ এপ্রিল ইরানের ফুটবল লিগের এক ম্যাচে একজন তরুণী বাধ্যতামূলক হিজাব না পরে গ্যালারি থেকে নেমে দৌড়ে মাঠে গিয়ে খেলোয়াড়দের কাছে যাচ্ছিলেন। তখন তাকে কয়েকজন বাধা দেন। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হয় ইরানি দল অ্যালুমিনিয়াম আরাক বনাম ইসতেগলাল এফসি। উৎসুক ওই নারীকে মাঠে আসতে দেখে এগিয়ে যান এসতেগলালের গোলকিপার হোসেইন হোসেইনি। তিনি ওই নারীকে জড়িয়ে ধরেন।

 

মাঠের এমন দৃশ্য মানতে পারেননি গ্যালারির আরেকপ্রান্তে উপস্থিত পুরুষ সমর্থকরা। তারা প্রতিবাদ জানালে ম্যাচ অফিসিয়ালরা হোসেইনকে মাঠ থেকে বের করে দেন। তখন আরেক ফুটবলার এসে ওই নারী ভক্তকে তার জার্সি খুলে উপহার দেন। সেই জার্সি পেয়ে ওই নারী ভক্ত খুশিতে মাঠ ত্যাগ করে গ্যালারিতে গিয়ে উল্লাস করেন।

 

সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশটিতে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে স্পর্শ করা ইসলামি রীতি অনুসরে হারাম। নীতি-বহির্ভূত এমন কাজ করায় হোসেইন হোসেইনিকে আইনের আওতায় আনার জন্য ক্রীড়ামন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন দেশটির নারী ও পারিবারিক বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট এনসিয়ে খাজালি।

 

‘খবর ভারজেশি’র প্রতিবেদন অনুসারে, হোসেইনিকে ৪৭০০ ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা) সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করেছে ইরান ফুটবল ফেডারেশন। এর পাশাপাশি তাকে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ, ‘ম্যাচে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার’ করেছেন হোসেইনি।

 

ইসতেগলালের হয়ে সুপার কাপ ও পারসিয়ান গালফ প্রো লিগজয়ী (ইরানের শীর্ষ লিগ) হোসেইনি ২০১২ সাল থেকে এই ক্লাবের গোলপোস্ট সামলাচ্ছেন। ৩৮টি ট্রফিজয়ী ইসতেগলাল ইরানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাবগুলোরও একটি। ইরানের একমাত্র ক্লাব হিসেবে একাধিকবার আন্তর্জাতিক ট্রফি জিতেছে ইসতেগলাল।

 

২০১৮ সালে ইরানের জার্সিতে অভিষেক হোসেইনির। জাতীয় দলের হয়ে এ পর্যন্ত খেলেছেন ১১ ম্যাচ। খেলেছেন ২০২২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও।

 

পারসিয়ান গালফ প্রো লিগের এবারের মৌসুমে হাতে ৬টি করে ম্যাচ রেখে দ্বিতীয় পার্সেপোলিসের সঙ্গে ১ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে ইসতেগলাল (২৪ ম্যাচে ৫৩ পয়েন্ট)।

 

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর ফুটবল ম্যাচে নারী দর্শকের উপস্থিতি নিষিদ্ধ ছিল। ২০২২ সালে চ্যাম্পিয়নশিপের এক ম্যাচে গত ৪০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো নারী দর্শকদের উপস্থিতির অনুমতি দেওয়া হয়।