মালদ্বীপ ম্যাচ বাংলাদেশের কাছে ‘ফাইনাল অব দ্য ইয়ার’

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৩

মালদ্বীপ ম্যাচ বাংলাদেশের কাছে ‘ফাইনাল অব দ্য ইয়ার’

স্পোর্টস ডেস্ক : ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ফিরতি লেগের ম্যাচ নিজেদের মাঠে বলে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ।

 

কোচ ও অধিনায়কের কথাতেই পরিষ্কার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে ফিরতি লেগের ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের চাওয়াটা। হাভিয়ের কাবরেরা বলেছেন, “জিততে পারি বলার মতো যথেষ্ট সাহস ও আত্মবিশ্বাস আছে।” জামাল ভূঁইয়ার কথায়, ‘ম্যাচ অব দা ইয়ার’ এবং ‘ফাইনাল অব দা ইয়ার।‘

 

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মঙ্গলবার ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইয়ের প্রিলিমিনারি রাউন্ডের ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দুই দল। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি। মালেতে দুই দলের প্রথম লেগের ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছিল।

 

ওই ড্র স্রেফ ড্র নয়, ২৩ বছর পর মালদ্বীপের মাঠে হার এড়ানোর তৃপ্তিও আছে সেখানে। সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ কাবরেরার কণ্ঠে ঘুরেফিরে শোনা গেল সেই কথাও।

 

“মালেতে প্রথম ম্যাচ খেলে আসার পর আমরা তিন-চার অনুশীলন করেছি ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে। সেখানে দারুণ লড়াই হয়েছিল। অনেক দিন পর মালদ্বীপে আমরা ড্র করেছি, যেটা দলকে অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এখন নিজেদের মাঠে, নিজেদের দর্শকের সামনে আমাদের অনেক বড় এবং সুন্দর চ্যালেঞ্জ। দল রোমাঞ্চিত, শিহরিত এবং এই চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত।”

 

“মালদ্বীপে আমরাও সুযোগ তৈরি করেছি, একটা কাজে লাগিয়েছি। তবে আমরা ওখানে ২৩ বছর পর ড্র করেছি, যেটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। এখন সবকিছু আমাদের হাতে, নিজেদের উপর নির্ভর করছে এবং আমি মনে করি, জিততে পারি, এটা বলার জন্য আমরা এখন যথেষ্ট সাহসী এবং আত্মবিশ্বাসী।”

 

কোচের মতো আত্মবিশ্বাসী জামালও। তবে চেনা আঙিনায় খেলা বলে আরও বেশি অনুপ্রেরণা অনুভব করছেন অধিনায়ক। ‘মদ কাণ্ডে’ জড়িত হয়ে দলের বাইরে থাকা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো, ডিফেন্ডার তপু বর্মন ও রিমন হোসেন এবং ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন ও তৌহিদুল আলম সবুজের না থাকা নিয়ে চিন্তিত নন তিনি।

 

“মালদ্বীপ যখন হোম গ্রাউন্ডে খেলে, ওরা তখন খুবই শক্তিশালী দল। কিন্তু বাইরে খেললে… ওদের কিছু দুর্বলতা আছে। আমরা আগামীকাল নিজেদের মাঠে খেলব, আমাদের এই সুযোগটা নিতে হবে। আমাদের সমর্থকদের পাশে পেতে হবে। আমাদের মাঠে আরও প্রাণশক্তি দেখাতে হবে। কারণ, মালদ্বীপে যখন খেলেছি, তখন দেখেছি প্রাণশক্তির একটু কমতি ছিল।”

 

“তাছাড়া সেখানে আবহাওয়া ভিন্ন ছিল, মাঠ ভিন্ন ছিল, ওরা তো মাঠে পানি দেয় না। ওখানে আমরা একটু আপসেট ছিলাম, কিন্তু এখন সব ঠিকঠাক আছে, দলের এটাই সঠিক ‘সেট-আপ।’ আগামীকাল কোনো অজুহাত নয়, আমাদের জিততে হবে।”

 

জামালের জিততে চাওয়ার এমন আকুতির কারণ সেই ২০১৬ সালের ভুটান ট্র্যাজেডি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ওই এক হারে ১৬ মাস আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে ছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ভরাডুবি হলে আবারও লম্বা সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে দূরে থাকতে হবে জামালদের। অধিনায়কের কাছে তাই এ ম্যাচটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

 

“আগামীকালের ম্যাচটি আমাদের জন্য হবে ‘ম্যাচ অব দা ইয়ার।’ গত কয়েকদিন ঢাকায় আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি, টেকটিক্যাল দিক নিয়ে কাজ করেছি। আমরা এই ম্যাচের জন্য প্রায় পুরোপুরি প্রস্তুত। এটা আমাদের জন্য বড় ম্যাচ, যেটা আমি এর আগেও বলেছি, ‘ফাইনাল অব দা ইয়ার।’ যে কোনোভবে জিততে হবে।”

 

চাওয়া পূরণে জিকো, মোরসালিন, তপুদের অনুপস্থিতিতে সুযোগ পাওয়া মিতুল মার্মা, শাকিল হোসেন এবং ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের মতো তরুণদের কাঁধে আস্থা রাখছেন জামাল।

 

“আমি মনে করি, যাদের রিপ্লেস করেছে, ওরা দারুণ খেলেছে। মিতুল (প্রথম লেগে) গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা সেভ করেছে, শাকিল ভালো খেলেছে, টপ পারফরম্যান্স করেছে। ফাহিম কিছুটা দুর্ভাগা, ও সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু গোল পায়নি। আমার মনে হয়, আরেকটু হলেই ও গোল পেতে পারত। সে নিজেকে জানে এবং এটাও জানে, সে আরও ভালো খেলতে পারে। আমার এবং অন্যদের দায়িত্ব তাকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া।”

 

মালের ড্রয়ের আগে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের দেখায় পিছিয়ে পড়ে মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার জিকো, তপুদের নিয়ে পূর্ণ শক্তির দল পেয়েছিলেন কাবরেরা। তরুণদের নিয়ে মালদ্বীপকে রুখে দেওয়া বাংলাদেশকে তাই সমীহ করছেন অতিথি দলের কোচ আলি সুজেইন।

 

“দুটি দলের জন্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। মালের ম্যাচটি ড্র হয়েছিল, দুই দল বলতে গেলে প্রায় একই রকম খেলেছিল, এটা দুর্ভাগ্য যে, আমরা গোল করে তা আগলে রাখতে পারিনি, শেষ দিকে যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ গোল করল।”

 

সংবাদ সম্মেলনে দলটির মিডফিল্ডার ইব্রাহিম আইসাম অবশ্য বাংলাদেশকে নিয়ে সতর্ক থাকলেও জানালেন জয় নিয়ে দেশে ফেরার আশাবাদ।

 

“আমরা আগামীকালের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। এ ম্যাচের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি আমরা। আমরা জানি, বাংলাদেশে খেলা কঠিন, কিন্তু তাদের বিপক্ষে জিততে প্রস্তুত আমরা।”