স্মার্ট বাংলাদেশ’ হবে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র

প্রকাশিত: ১২:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩

স্মার্ট বাংলাদেশ’ হবে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র

পাশা মোস্তফা কামাল : তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে পাল্টে যাচ্ছে বিশ্বের চিত্র। দেরিতে হলেও আমরা প্রবেশ করেছি এই জগতে। ১৯৯১ সালে আমাদের বিনা পয়সায় সাইবার সংযোগ প্রদানের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি তখনকার সরকার। যার কারণে আমরা অনেক দূর পিছিয়ে পড়েছি। ১৯৯১ থেকে ২০০৯ অনেক সময়। জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিলে একটি বিশেষ মহল এটা নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করতেও ছাড়েনি। কিন্তু দমে যাননি বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। কারণ তাঁর ধমণীতে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তব ও দৃশ্যমান। ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন দৃশ্যমান তখন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। তো কেমন হবে সেই স্মার্ট বাংলাদেশ? একটু দেখার চেষ্টা করি।

 

বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রথম শিল্পবিপ্লবটি হয়েছিল ১৭৬৯ সালে। এরপর ১৮৭০ সালে বিদ্যুৎ ও ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেটের আবিষ্কার শিল্পবিপ্লবের গতিকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। আবার তিনটি বিপ্লবকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ডিজিটাল বিপ্লব। এ নিয়েই এখন সারা দুনিয়ায় তোলপাড় চলছে। এটিকে এখন বলা হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তিনির্ভর গ্লোবাল ভিলেজের এই বিপ্লবে বাংলাদেশও অন্যতম সৈনিক। এই বিপ্লবে জয়ী হওয়ার জন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির। আশার কথা হলো, আমাদের দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির আওতায় নিয়ে এসে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে ত্বরান্বিত করতে হবে। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন তরুণ সমাজকে প্রশিক্ষিত করা।

 

কম উপকরণ দিয়ে বেশি উৎপাদনই হলো জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির মূল কথা। বাংলাদেশে জমি কম কিন্তু লোকসংখ্যা বেশি। তাই কম জমিতে বেশি উৎপাদানের যে প্রযুক্তি তা রপ্ত করতে হলে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ সেই পথে হাঁটছে। সরকারি কেনাকাটায় ২৫ ভাগ পর্যন্ত ইলেক্ট্রনিক ট্রান্সফার হচ্ছে। বেসরকারি খাতেও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশে যেসব প্রকল্প চালু আছে সেখানেও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

 

বাংলাদেশের উন্নয়নমুখী অর্থনীতি, যা প্রতিবছর ৬ শতাংশ করে বেড়ে চলেছে, সেখানে সবার আগে উচ্চারিত হয় চিরচেনা পোশাক খাতের নাম। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল ঘটছে ধারণার। ধীরে ধীরে ভবিষ্যৎ উন্নয়নে শ্রমভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর স্থলে ঠাঁই করে নিতে যাচ্ছে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি। আশা করা হচ্ছে যে, ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ৩০তম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিশালী দেশ। ওই সময়ের মধ্যে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ৬ হাজার মার্কিন ডলার এবং এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বাংলাদেশ।

 

পৃথিবীজুড়ে এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব চলছে। সারা পৃথিবীর মতো আমরা এক প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের ভিত্তির ওপর শুরু হওয়া ডিজিটাল বিপ্লবের ফলে সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে গাণিতিক হারে, যা আগে কখনো হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, বিশ্বের প্রতিটি দেশের প্রতিটি খাতে এ পরিবর্তন প্রভাব ফেলছে, যার ফলে পাল্টে যাচ্ছে উৎপাদন প্রক্রিয়া, ব্যবস্থাপনা এমনকি রাষ্ট্র চালানোর প্রক্রিয়াও। আর এই বিপ্লবের জন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির। দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি আয়ত্ত করাতে পারলে দ্রুত দেশ এগিয়ে যাবে।”

 

আধুনিক যুগ হচ্ছে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া কোনো দেশ তার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করতে পারে না। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে সনাতন পদ্ধতির স্থলে ডিজিটাল টুলস ব্যবহারের বিকল্প নেই। দেশ থেকে দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকারি সকল কর্মকাণ্ডের চালিকাশক্তি হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ নামের আন্দোলন। এই আন্দোলনে নতুন যুক্ত হচ্ছে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি।”

 

বর্তমান সময়ে ই-লার্নিং খুবই আলোচিত একটি বিষয়। দেশে কিংবা বিদেশে সবখানেই এর জয়জয়কার। ধরাবাঁধা শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে হওয়ায় দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শিক্ষা ব্যবস্থাটি। প্রতিদিনই উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। মূলত প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি ক্লাস করা কিংবা কোনো বিষয়ের ওপর জ্ঞানার্জন করার পদ্ধতিই ই-লার্নিং নামে পরিচিত। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে ই-লার্নিংয়ের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পদ্ধতিতে ঘরে বসে সুবিধাজনক সময়ে পছন্দমতো বিষয়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব। ই-লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। বর্তমানে আমাদের দেশেও রয়েছে একাধিক ই-লার্নিং কার্যক্রম। ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারবাহিকতায় এসেছে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দর্শন। দেশের বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে যাদের হাতে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভর করছে। আশার কথা হচ্ছে, তরুণ জনগোষ্ঠী তথ্যপ্রযুক্তিকে লুফে নিয়েছে। তবে পুরো কাজটির জন্য সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জও রয়েছে। জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দেশ হিসেবে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

 

‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ মাথাপিছু আয় হবে কমপক্ষে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। এছাড়া আরো কিছু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যেমন : দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকবে ৩ শতাংশের কম মানুষ আর চরম দারিদ্র্য নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়; মূল্যস্ফীতি সীমিত থাকবে ৪-৫ শতাংশের মধ্যে; বাজেট ঘাটতি থাকবে জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে; রাজস্ব- জিডিপি অনুপাত হবে ২০ শতাংশের ওপরে; বিনিয়োগ হবে জিডিপির ৪০ শতাংশ। শতভাগ ডিজিটাল অর্থনীতি আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক সাক্ষরতা অর্জিত হবে। সকলের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাবে। স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেকসই নগরায়ণসহ নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সকল সেবা থাকবে হাতের নাগালে। তৈরি হবে পেপারলেস ও ক্যাশলেস সোসাইটি। সবচেয়ে বড় কথা, স্মার্ট বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা।

 

লেখক : উপপ্রধান তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর।

নামাজের সময়সূচী সেপ্টেম্বর মাস-২০২৪

নামাজের সময়সূচি
> ফজর- ৪:২৭ মিনিট।
> জোহর- ১১:৪৯ মিনিট।
> আসর- ৪:১৩ মিনিট।
> মাগরিব- ৬:0৩ মিনিট।
> ইশা- ৭:০৬ মিনিট।

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন