এনআইডি দিয়ে ট্রেনের টিকিট: কিছু ভোগান্তি সত্ত্বেও খুশি সিলেটের যাত্রীরা

প্রকাশিত: ১:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২৩

এনআইডি দিয়ে ট্রেনের টিকিট: কিছু ভোগান্তি সত্ত্বেও খুশি সিলেটের যাত্রীরা

নিউজ ডেস্ক : সকাল থেকে সিলেট রেলস্টেশনে আসতে শুরু করেন যাত্রীরা। লাইনে দাড়িয়েও নিবন্ধন না থাকায় ট্রেনের টিকিট কাটতে পারছিলেন না অনেকে। পরে লাইন থেকে বের হয়ে তারা রেলস্টেশনের প্রবেশমুখে স্টেশনের ‘হেল্পডেস্কে’ গিয়ে সহযোগিতা নিচ্ছিলেন। সেখানে তাদের মুঠোফোনে খুদে বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করে দিচ্ছিলেন রেলস্টেশনের কর্মীরা। বুধবার সকাল থেকে নতুন নিয়মে টিকিট কাটতে গিয়ে যাত্রীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন। তবে এই পদ্ধতিকে টিকিট কাটতে পেরে অনেকে খুশিও হয়েছেন।

 

এ বিষয়ে সিলেট রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট করতে আসা কয়েকজন সাধারণ যাত্রী বলেন, এমন পদ্ধতির ফলে টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য কমবে। টিকিট পাওয়া যাবে অনলাইনে কিংবা স্টেশনে গিয়ে।

 

সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. নুরুল ইসলাম এমন পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে নির্ভার লাগছে বলেও মন্তব্য করলেন। তিনি বলেন, ‘আগে অনেকে স্টেশনে আসার পর টিকিট না পেয়ে কর্মকর্তাদের সন্দেহের চোখে দেখতেন। সরাসরি কেউ কিছু বলতে না পারলেও ভাবতেন, আমরাই এগুলো বাইরে বেশি দামে বিক্রি করে দিচ্ছি।’

 

তিনি আরও বলেন, এখন যে যার টিকিট নিজের ভোটার আইডি অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন করে কাটতে পারছেন। এতে কালোবাজারে টিকিট কাটার প্রবণতা কমবে। রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সম্পর্কে ধারণাও পাল্টাবে।

 

সকাল ১০টার দিকে আগামী শনিবারের ঢাকার টিকিট কাটার জন্য সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের বাসিন্দা রথীন্দ্র দেবনাথ। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও নিবন্ধন না থাকায় তিনি টিকিট কাটতে পারছিলেন না। পরে লাইন থেকে বের হয়ে রেলওয়ের প্রবেশমুখে যান তিনি। সেখানে রেলস্টেশনের কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানা যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করে দিচ্ছিলেন। রথীন্দ্র দেবনাথ রেলওয়েতে কর্মরত সোহেল রানার সহযোগিতায় নিবন্ধন করে আবার সারিতে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটেন।

 

রথীন্দ্র দেবনাথ বলেন, প্রথমে সারিতে দাঁড়িয়েও টিকিট কাটতে না পেরে ক্ষোভ হচ্ছিল। এখন টিকিট কাটতে পেরে ক্ষোভ কমেছে। সেই সঙ্গে এমন পদ্ধতি যাত্রীদের টিকিট প্রাপ্তিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

বেলা ১১টার দিকে রোববার রাতে ঢাকা যাওয়ার জন্য টিকিট কাটতে গিয়েছিলেন তোফায়েল আহমদ। তিনি বলেন, সাধারণত পাঁচ দিন আগের পর্যন্ত টিকিট অনলাইনে ও স্টেশনে এসেও পাওয়া যায় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সকাল সাড়ে আটটা কিংবা নয়টার মধ্যে সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। তবে আজ বুধবার বেলা ১১টা পর্যন্ত টিকিট ছিল। নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করতে গিয়ে সামান্য ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এরপরও টিকিট পেয়ে তিনি খুশি।

 

সিলেট রেলস্টেশনের কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানা বলেন, সকাল থেকে স্টেশনের কয়েকজন যাত্রীদের সেবা দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা নিজেও। অনেকের খুদে বার্তার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিলেও জন্মতারিখে ভুল করায় ফিরতি খুদে বার্তায় নিবন্ধন হয়ে আসছে না। আবার অনেকে জন্মনিবন্ধন সনদের ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এতে সমস্যা হচ্ছে। এরপরও যাচাই করে সঠিক নিয়মে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন তাঁরা।

 

টিকিট কাটতে বিলম্ব হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, টিকিট কাটতে বিলম্ব হচ্ছে না। যাত্রীরা গন্তব্য এবং যাত্রার দিন বলার পর মুঠোফোনের নম্বর বলতে হচ্ছে। নিবন্ধিত হয়ে থাকলে টিকিট কাটতে পারছেন যাত্রীরা। নিবন্ধিত না থাকলে নিবন্ধনের পরই টিকিট কাটতে পারছেন।

 

সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আরও বলেন, আগে সকাল আটটার মধ্যে অনেকে টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলতেন। তবে আজ বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। নুরুল ইসলাম আরও বলেন, যাঁর ভোটার নিবন্ধন দিয়ে টিকিট কাটা হবে, তিনিই কেবল ভ্রমণ করতে পারবেন। সঙ্গে আরও তিনজনের জন্য টিকিট কাটতে পারবেন। এর বাইরে অন্যের নিবন্ধন করা মুঠোফোন নম্বর দিয়ে ভ্রমণ করলে জরিমানা গুণতে হবে যাত্রীদের।

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন