প্রকাশিত: ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক : একই দিনে সিলেটের রাজপথে নিজেদের শক্তি দেখাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। শনিবার দুপুরে নগরের পৃথক স্থানে কর্মসূচি আছে এই দুই দলের। এই কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে চায় দলগুলো।
স্থানীয় রাজনীতিবিদরা বলছেন, প্রায় পাঁচ বছর পর পৃথক কর্মসূচি নিয়ে সিলেটের রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটে মুখোমুখি হয় প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। ওই দিন খালেদা জিয়ার সাজার রায় ঘিরে নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় দুই দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে আহত হন অনেকে। এরপর উভয় দল নানা ইস্যুতে রাজপথে সরব থাকলেও কখনো মুখোমুখি হয়নি।
এরপর পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি না থাকলেও গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাতে নগরের রিকাবীবাজারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। তবে এবার ঘোষণা দিয়েই একই দিনে কর্মসূচিতে মুখোমুখি হচ্ছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল।
সংঘাতের শঙ্কা
শনিবার ‘বিভাগীয় সমাবেশ’ ও ‘শান্তি সমাবেশের’ মাধ্যমে আবার রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। দীর্ঘদিন পর একই দিনে দুই দলের কর্মসূচির কারণে সংঘাতের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আর শোডাউন প্রস্তুতির কারণে হঠাৎ করেই সিলেটের রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে উত্তাপ। তবে দুই দলের নেতাদের আশা, শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে সমাবেশ।
বিএনপির প্রস্তুতি
‘আওয়ামী সন্ত্রাসবাদ, সরকারের দমন-নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিরোধী দলের গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে গত জানুয়ারিতেই সিলেটসহ সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। আজ বেলা ২টায় সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে এই সমাবেশ শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
সমাবেশ সফলে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেটজুড়ে কর্মিসভা, পথসভা, জনসংযোগের মাধ্যমে সমাবেশে জনসমাগমের চেষ্টা করছেন তারা। সমাবেশের বিষয়টি অবহিত করে দলটির পক্ষ থেকে মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর চিঠিও দেয়া হয়েছে।
সমাবেশ সফল করতে নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার প্রস্তুতি সভা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ইতিহাস গড়বে। সমাবেশ ঘিরে কেবল জাতীয়তাবাদী শক্তি নয়, গণতন্ত্রকামী সিলেটবাসীর মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সূচনা হয়েছে। সিলেটবাসী সব বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে সমাবেশ সফলে অপেক্ষা করছে।
আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি
একই দিনে সিলেটে ‘শান্তি সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রথমে এই সমাবেশ বিএনপির সমাবেশস্থল রেজিস্ট্রারি মাঠেই করার ঘোষণা দেয় দলটি। পরে স্থান পরিবর্তন করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা ৩টায় এই সমাবেশ শুরু হবে। শান্তি সমাবেশ সফল করতেও প্রচার চালাচ্ছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এই সমাবেশের মাধ্যমে রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চায় দলটি।
শান্তি সমাবেশ সফলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রস্তুতি সভা করে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। এতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাদের নিজ নিজ ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশ নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নি-সন্ত্রাস রুখে দিতে আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। কোনোভাবেই তাদের সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি করার সুযোগ দেয়া হবে না।
বিশৃঙ্খলা চায় না কেউই
বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চায় জানিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘সিলেটের রাজনীতিতে সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা আশাবাদী, সেই সম্প্রীতি কেউ নষ্ট করার চেষ্টা করবে না। যার যার কর্মসূচি নিজেদের মতো করে পালন করবে। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা এলে তা জয় করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা সমাবেশ সফল করবেন।’
বিএনপি বিশৃঙ্খলা তৈরি না করলে সংঘাত হবে না জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় শান্তিপূর্ণ রাজনীতির পক্ষে। রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে। তাই আমরা উদারতা দেখিয়ে নিজেদের কর্মসূচির স্থানও পরিবর্তন করেছি। এখন বিএনপি যদি বিশৃঙ্খলা না করে, তাহলে শান্তি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে।’
সতর্কতায় পুলিশ
দুই দলের পৃথক কর্মসূচির কারণে বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশও। শুক্রবার বিকেল থেকেই নগরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, নগরের সব মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নগরের প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, এ জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest