বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৩:০৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২২

বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক :: সিলেট জেলার বিশ্বানাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওনপুর গ্রামের মৃত মো. ইন্তাজ উল্লাহ (ইউনুছ আলী)-এর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. তোতা মিয়া প্রতিহিংসা, ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের শিকার বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তোতা মিয়ার ভাগ্নে মহানগরের মধুশহিদ এলাকার বাসিন্দা নুর আহমদ কামাল।

লিখিত বক্তব্যে কামাল জানান- নিজেরই গোষ্ঠীর ভাই-ভাতিজার প্রতিহিংসা, ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়া। তোতা মিয়া ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ বলে তারা নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসবের নেপথ্যে রয়েছেন বাওনপুর গ্রামের মিন্টু মিয়া ও তার ভাই এমরান মিয়া, সাদেক মিয়া, রাজু আহমদ, আজাদ মিয়া ও তার ভাই সুহেল মিয়া, ফয়েজ আহমদ ও তার ভাই গৌছ মিয়া, আব্দুল্লাহ, জুয়েল মিয়া ও তার ভাই সাইফুর রহমান, সিরাজ মিয়া, চান্দালী ও তার ভাই মশ্রব আলী, ফয়জুর রহমান, ফেরদৌস মিয়া, মাশুক মিয়া, আকবর, দুদু মিয়া, আব্দুল লতিফ, মইনুদ্দিন, আশিক মিয়া, আবদুল বশর, ফারুক মিয়া, আবদুল বাছিত এবং তাদের সহযোগীরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও অভিযুক্তরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন উল্লেখ করে কামাল বলেন- এই চক্রের সবাই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জামাত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়া প্রবাসে পাড়ি জমানোর পর তাঁর সঙ্গে অভিযুক্তরা সখ্যতা গড়েন এবং বিভিন্ন সময় নানা সহযোগিতা গ্রহণ করেন। এছাড়াও ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা ঋণ নেন। কিন্তু একপর্যায়ে তারা লোভে পড়ে সে টাকা আত্মসাৎ করে তোতা মিয়ার সঙ্গে শত্রুতা শুরু করেন। এছাড়াও তারা তোতা মিয়ার ১৫ কেদার জমি জবরদখলের পায়তারা শুরু করেন। তবে তোতা মিয়া আইনের আশ্রয় নেওয়ায় তাদের সে অপপেষ্টা ব্যর্থ হয়। সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হবার পর তোতা মিয়াকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে প্রতিপক্ষরা তাঁকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে অপপ্রচার চালাতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে তোতা মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের দাবিতে একটি ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের আয়োজন করেন। পরে সিলেটের দু-একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় এ মানববন্ধনের সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সে মানববন্ধনে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের’ উপস্থিতির কথা উল্লেখ করা হলেও সেখানে উপস্থিতিতের মধ্যে কেউই সম্মুখসারীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। এছাড়াও লোকমুখে শুনা যাচ্ছে- কথিত মানববন্ধনে টাকা-পয়সা দিয়ে মানুষ নিয়ে আসা হয়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন- ‘তোতা মিয়া তাঁর পিতার নাম পরিবর্তন করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজেছেন।’ কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তোতা মিয়ার বাবার নামের একাংশ ‘মো. ইন্তাজ উল্লা’ উল্লেখ করে বাকি অংশ ‘ইউনুছ আলী’ বাদ দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তোতা মিয়ার বাবার পুরো নাম ‘মো. ইন্তাজউল্লা (ইউনুছ আলী)’। বিষয়টি তোতা মিয়ার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির সরকারি সকল সনদপত্রে উল্লেখ আছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট সিলেটের মুক্তিযুযোদ্ধা কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট এবং যুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডারদের বিভিন্ন সময় তোতা মিয়াকে দেওয়া প্রত্যয়নপত্রেও তাঁর বাবার নাম ‘মো. ইন্তাজ উল্লা (ইউনুছ আলী)’ উল্লেখ রয়েছে। কামাল জানান- বীর মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়া তাঁর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে একটি শহীদ মিনার এবং নিজের জায়গাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি পাঠাগার নির্মাণ করতে চাচ্ছেন। তিনি উদ্যোগ নিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনের মাধ্যমে আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শহীদ মিনার ও পাঠাগার নির্মাণের অনুমোদন দিয়ে অর্থও বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী এই চক্র এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে। এ দুটি কাজ ছাড়াও তোতা মিয়ার বাড়ির সামনের অনুমোদিত দেড় কিলোমিটার একটি রাস্তা পাকাকরণেও বাধা দিচ্ছে এই চক্র। তাই স্বাধীনতাবিরোধী এই চক্রের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে ও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তোতা মিয়ার ভাগ্নে কামাল।