প্রকাশিত: ৬:১৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০১৭
তাহমিনা আক্তার : বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারাকে বাধাগ্রস্ত করার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। এই জোট রাজনীতিকে গণমানুষের অধিকার আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে না দেখে একে বারবার সহিংসতা, ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড এবং অরাজকতা সৃষ্টির উপায় হিসেবে ব্যবহার করেছে। নির্বাচনের আগে কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে তারা সাধারণ মানুষের জানমাল, সম্পদ, পরিবহন ব্যবস্থা, এবং জাতীয় স্থিতিশীলতার ওপর আঘাত হেনেছে।
বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী রাজনীতির শেকড় বহু পুরনো। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতায় এসে তারা যে ভয়াবহ দমন-পীড়নের নজির স্থাপন করেছিল, তা জাতির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় । তখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর পরিকল্পিত হামলা, লুটপাট, ধর্ষণ এবং জমিজমা দখলের ঘটনা ঘটে। জামায়াতে ইসলামীর ক্যাডার এবং ছাত্রশিবিরের সদস্যরা এতে সরাসরি অংশ নেয়। এদের লক্ষ্য ছিল ভীতি ছড়িয়ে বিরোধী সমর্থকদের নিশ্চুপ রাখা এবং সামাজিক বিভেদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটা।
এরপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী চেহারাকে স্পষ্ট করে তুলে ধরে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, তা ছিল রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের এক নৃশংস উদাহরণ। এই হামলায় আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা নিহত হন এবং শেখ হাসিনা গুরুতর আহত হন। ওই হামলার পেছনে জামায়াত ও বিএনপির তৎকালীন শীর্ষ নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদ ও পরিকল্পনার প্রমাণ আদালতে উঠে আসে।
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যখন দেশজুড়ে গণআন্দোলন চলছিল, তখন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই দলটি ব্যাপক সহিংসতা চালায়। সারাদেশে রেললাইন কাটা, সড়কে আগুন লাগানো, নিরীহ মানুষকে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে হত্যা, যানবাহনে আগুন দেওয়া এসব ছিল তাদের প্রতিবাদের ভাষা। বিশেষ করে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় জামায়াত-শিবির সদস্যরা দেশজুড়ে প্রায় ২০টির বেশি থানায় হামলা চালায়, উপাসনালয় ধ্বংস করে এবং প্রশাসনের অনেক সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় এবং তার আগে-পরে বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বর্জন করে দেশব্যাপী সহিংস আন্দোলনে নামে। তারা সংলাপ ও আলোচনার পথ না বেছে সন্ত্রাসের পথকে বেছে নেয়। ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার পতনের উদ্দেশ্যে ‘নিষিদ্ধ’ অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষ ও পরিবহন ব্যবসায়ীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। শুধু ফেব্রুয়ারি মাসেই পেট্রোল বোমা ও আগুনে দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান অন্তত ৫০ জন নিরীহ মানুষ। এর মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থী, দিনমজুর, নারী ও শিশুরাও ছিল।
এছাড়াও তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর বারবার পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। পুলিশের গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, র্যাব সদস্যদের উপর হামলা, থানায় আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা তাদের
সন্ত্রাসী মানসিকতার পরিচয় বহন করে। জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ‘শিবির’ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্র মজুদ, সশস্ত্র মহড়া এবং ছাত্রলীগ বা অন্য মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় বারবার জড়িয়ে পড়েছে।
এই ধারাবাহিক সহিংসতা শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে বিপন্ন করছে না, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও বিরোধ থাকা স্বাভাবিক, তবে তা সহিংসতা ও সন্ত্রাসের রূপ নিলে তা শুধু রাজনৈতিক নীতিহীনতার প্রমাণ নয়, এটি রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
বিএনপি-জামায়াতের এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতি গণতন্ত্রের জন্য চরম হুমকি। তারা বারবার প্রমাণ করেছে যে, ক্ষমতা অর্জনের জন্য তারা গণতান্ত্রিক পথ নয়, বরং বিশৃঙ্খলা ও ভয়ভীতি ছড়ানোর পথকে বেছে নেয় ।
এখন সময় এসেছে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে জাতিকে এক হয়ে দাঁড়ানোর। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও সচেতন হতে হবে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করতে হবে। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাস জানিয়ে এদের আসল চেহারা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ সহিংস রাজনীতিকে স্বাভাবিক হিসেবে না দেখে ।
বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ, উন্নয়নশীল ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী রাজনীতিকে চিরতরে পরাজিত করতে হবে।
লেখিকা: তাহমিনা আক্তার




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest