প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০২৫
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গ্রাফ ডায়মন্ডস হ্যালুসিনেশন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘড়ি। গ্রাফ ডায়মন্ডসের স্বপ্নদ্রষ্টা চেয়ারম্যান লরেন্স গ্রাফ প্রথম এই ঘড়ির ধারণা দেন। প্লাটিনামের ব্রেসলেটের ওপর ১১০ ক্যারেটের নানা রঙের হীরার টুকরা বসিয়ে এই ঘড়ি তৈরি করা হয়। একেকটি হীরা কাটা হয় ভিন্ন ভিন্ন আকৃতিতে। ঘড়িটি ফ্যাশনজগতে আভিজাত্যের এক অনন্য প্রতীক।
২০১৪ সালে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বাসেলওয়ার্ল্ড প্রদর্শনীতে ঘড়িটি প্রথম উন্মোচন করা হয়। যাঁরা চকমকে এবং চিত্তাকর্ষক ঘড়ি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য আদর্শ গ্রাফ ডায়মন্ডস হ্যালুসিনেশন। এটির দাম ৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার (টাকায় ৬৫৮ কোটি ২৪ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা)।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়ির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে গ্রাফ ডায়মন্ডস দ্য ফ্যাসিনেশন। এটিও বিখ্যাত যুক্তরাজ্যের জুয়েলারি ব্র্যান্ড গ্রাফ ডায়মন্ডস তৈরি করেছে। দ্য ফ্যাসিনেশন নামের ঘড়িটি ব্রেসলেট হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এটিতে ১৫২ দশমিক ৯৬ ক্যারেটের একটি চিত্তাকর্ষক সাদা হীরা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ৩৮ দশমিক ১৩ ক্যারেটের একটি বিরল হীরা। হীরাটির আকৃতি নাশপাতির মতো। এটি ঘড়ির ডায়াল হিসেবে কাজ করে। নাশপাতি আকৃতির হীরাটি আলাদা করে আংটি হিসেবেও পরা যায়। ঘড়িটির দাম ৫ কোটি ডলার।
সুইজারল্যান্ডের পাতেক ফিলিফ কোম্পানির সবচেয়ে দামি ঘড়ি পাতেক ফিলিপ গ্র্যান্ডমাস্টার চাইম। এই ঘড়ি ২০১৪ সালে কোম্পানিটির ১৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উন্মোচন করা হয়। দুটি ডায়ালের কারণে ঘড়িটি ব্যতিক্রম। দুটি ডায়ালই নীল ওপালাইন (একধরনের দামি সাদা কাচ) দিয়ে সুসজ্জিত।
ঘড়ির ডায়াল প্লেট ১৮ ক্যারেটের নিখুঁত স্বর্ণ দিয়ে তৈরি। সময় নির্দেশক সংখ্যাগুলোও সোনায় মোড়ানো। ঘড়ির খোলসটি সাদা সোনা দিয়ে তৈরি। বেল্ট তৈরি কুমিরের চামড়া দিয়ে, যেটির রং নীল। এই ঘড়ির দাম ৩ কোটি ১০ লাখ ডলার।
ফরাসি রানি মেরি অন্টোইনেটের জন্য তাঁর এক অনুরাগী প্রাথমিকভাবে এই ঘড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন বলে ধারণা করা হয়। ব্যয়বহুল ঘড়িটি তৈরির ইতিহাস ৪০ বছর ধরে বিস্তৃত। ঘড়িটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি মর্মান্তিক ঘটনা। এটি তৈরির কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফরাসি বিপ্লবে মেরি অন্টোইনেটকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ঐতিহাসিক পটভূমির কারণে ঘড়িটির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী।
আব্রাহাম-লুই ব্রেগেইট এই ঘড়ির নকশা করেছিলেন। ১৮২৭ সালে তৈরি স্বর্ণে মোড়ানো ঘড়িটিতে চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার, থার্মোমিটারসহ এমন সব বৈশিষ্ট্য ছিল, যা ওই সময়ে কেউ ভাবতেও পারত না। এটির দাম ৩ কোটি ডলার।
জেজের লোকুত্র কারুকার্যের জন্য শীর্ষ স্থানীয় একটি বিখ্যাত ব্র্যান্ড। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাজত্বের হীরকজয়ন্তী উপলক্ষে তাঁর জন্য উপহার হিসেবে ব্র্যান্ডটি জেজের লোকুত্র জুয়াইরি ১০১ মনচেট ঘড়িটি তৈরি করে। এটি সাদা সোনা দিয়ে তৈরি করা হয়।
ঘড়িটি একটি নীলকান্তমণি কাচে আচ্ছাদিত। নকশায় ৫৭৭টি হীরা ব্যবহার করা হয়েছে, যা এটিকে আভিজাত্য ও কারুকার্যের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ২০১২ সালে ঘড়িটি তৈরি করা হয়েছিল। এটির দাম ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
মার্কিন ব্যাংক কর্মকর্তা হেনরি গ্রেভসের জন্য ১৯৩৩ সালে ঘড়িটি তৈরি করা। এই সোনার পকেট ঘড়িটি এমন সময় বানানো হয়েছিল, যখন ঘড়ি তৈরি কারিগরদের দক্ষতার ওপর নির্ভর করত। এটির নকশা ও নির্মাণশৈলী অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। এটি তৈরিতে সাত বছর সময় লেগেছে। ঘড়িটি ইতিহাসের সবচেয়ে জটিল পকেট ঘড়িগুলোর একটি।
এই ঘড়িতে একটি ক্যালেন্ডার, একটি মিনিট রিপিটার, সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময়ের বিশদ বিবরণসহ চমকপ্রদ অনেক বৈশিষ্ট্য আছে। এটির দাম ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
এই ঘড়িতে খচিত আছে মোট ২০১ ক্যারেটের ৮৭৪টি চমকপ্রদ হীরা। রয়েছে বর্ণালি রঙের ছড়াছড়ি। ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার মূল্যের ঘড়িটি সুইস ঘড়ি প্রস্তুতকারক তৃতীয় কার্ল শ্যুফেলের সেরা কাজ। এই ঘড়ির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর ঔজ্জ্বল্য। এতে স্প্রিং-লোড নামের একটি পদ্ধতি আছে, যাতে চাপ দিলে তিনটি হৃদয় আকৃতির হীরা (১৫ ক্যারেটের গোলাপি, ১২ ক্যারেট নীল এবং ১১ ক্যারেট সাদা) ফুলের পাপড়ির মতো ফুটে ওঠে।
এই ঘড়িতে তিনটি নাশপাতি আকৃতির হলুদ হীরা রয়েছে, যা মোট ৮ দশমিক ৪৫ ক্যারেটের। ঘড়িটি ২০০০ সালে তৈরি করা হয়েছিল।
চমৎকার টাইমপিসের প্রতি আবেগ এবং রেসিং গাড়ির প্রতি ভালোবাসার জন্য খ্যাতিমান অভিনেতা পল নিউম্যান বেশ পরিচিত ছিলেন। এই ঘড়ি তৈরির সঙ্গে তিনি যুক্ত। কারণ, পলের জন্য তাঁর স্ত্রী ১৯৬৮ সালে ঘড়িটি তৈরির কাজ শুরু করেন। পল নিউম্যানের স্ত্রী জোয়ান উডওয়ার্ড এই ঘড়ি কিছু শব্দ দিয়ে খোদাই করেছিলেন। এতে লেখা ছিল, ‘ড্রাইভ কেয়ারফুলি মি’।
২০১৭ সালে ঘড়িটি নিলামে তোলা হয়েছিল। নিলামে ওঠার ১২ মিনিটের মধ্যেই সেটি বিক্রি হয়ে যায়। ঘড়িটি স্টেইনলেস ইস্পাত দিয়ে তৈরি। এটির দাম ১ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
জ্যাকব অ্যান্ড কোং বিলিয়নেয়ার ঘড়িটি তার নামের মতোই চমকপ্রদ। এটিতে খচিত আছে ১৮৯ ক্যারেটের অত্যাশ্চর্য আকোশা হীরা। হীরাগুলো এমনভাবে কাটা হয়েছে যে দেখতে মনে হয় একটি আদর্শ পান্না কাটা হীরার চেয়ে ৩০ শতাংশ বড় এটি।
ঘড়িটি ১৬৭টি উপাদান ও ১৮টি রত্ন দিয়ে বানানো। এতে ১৮ ক্যারেটের সোনা দিয়ে কারুকাজ করা হয়েছে। এটির ব্রেসলেট ও ডায়াল— উভয়ই বিলাসবহুল। ২০১৫ সালে এটি তৈরি করা হয়। ঘড়িটির দাম ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
অনন্য খোলসের জন্য ঘড়িটি বিখ্যাত। রেফারেন্স ১৫১৮ মডেলের ঘড়িটি পাতেক ফিলিপ কোম্পানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি যেমন বিপ্লবের প্রতিনিধিত্ব করে, তেমনি কোম্পানির মূলনীতি ঐতিহ্যের সঙ্গে উদ্ভাবনকে সমন্বয় করার চিহ্ন বহন করে। ঘড়িটি উচ্চ গ্রেডের স্টেইনলেস ইস্পাত থেকে তৈরি। এটি পাতেক ফিলিপের বিলাসবহুল ঘড়িগুলোর থেকে আলাদা। এটির দাম ১ কোটি ২০ লাখ ডলার।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest