জাতিসংঘ সম্মেলন- বাংলাদেশের যা অর্জন

প্রকাশিত: ১০:০৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪

জাতিসংঘ সম্মেলন- বাংলাদেশের যা অর্জন

 

ফয়ছল আহমদ মুন্না, যুক্তরাষ্ট্র :
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আসবে, অর্থনৈতিক সংস্কারে সহায়তা, চীনের সাথে বৈঠক, যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আহ্বান, অটোনমাস ইন্টেলিজেন্সের ব্যাপারে শঙ্কা

 

বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসেবে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে তিনি বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সাথে বৈঠকও করেছেন। অধ্যাপক ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ ১২টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সাইডলাইনে ৪০টি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও অংশ নেন। নানা কারণে প্রধান উপদেষ্টার এই সফরটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

 

তারা বলছেন, নানা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের একপ্রকার সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। এই সফরে সেই সংকট অনেকটাই কেটেছে।

 

বিশেষ করে গণতন্ত্র, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি সংকট ছিল, এই সফরে সেটা কাটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, এই সফরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা গেছে এবং তাদের কাছে আস্থার জায়গাটা তৈরি করা গেছে।

 

এছাড়াও অর্থনৈতিক সংস্কারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিশ্রুতিসহ নানা কারণে এই সফরটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন তারা। তবে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সাথে বাংলাদেশের নতুন সরকারের এক ধরনের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল।

 

যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে বাংলাদেশের একটি বৈঠকের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় নি সফরসূচীতে মিল না থাকায়।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিবেশী দু’টি দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে এই মূহুর্তে একটি বৈঠক হলে তাতে সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতো।

 

যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ সফর
গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের পর মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে এবারে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেয় বাংলাদেশ। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে মাত্র চার দিনের এই সফরে বাংলাদেশের সরকার প্রধান অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ ১২টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাথে। এছাড়াও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, আইএমএফের প্রেসিডেন্টসহ অধ্যাপক ইউনূস অংশ নিয়েছেন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদসহ ৪০টি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে।

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অধ্যাপক ইউনূস এই সফরে বিভিন্ন ইস্যুতে যে সব মিটিং করেছেন তা বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে বাংলাদেশ যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে অংশ নিয়েছে তার সবগুলোই এখনকার বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ও প্রয়োজনের আলোকে হয়েছে বলেই আমি মনে করি।

 

এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলেও মনে করছেন এই কূটনীতিক।

 

যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে গত বুধবার অধ্যাপক ইউনূসের সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ। জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নেওয়া সংস্কারমূলক কাজের জন্য বিশ্ব ব্যাংক অধ্যাপক ইউনূসের সরকারকে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা দেন।

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে উন্নয়ন হলেও বাংলাদেশে দুর্নীতি ও মূল্যস্ফীতিসহ নানা কারণে তার সুফল সাধারণ মানুষ পায় নি। যে কারণে বিশ্ব সম্প্রদায় এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত সংস্কারে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।

 

অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংস্কারের জন্য বাংলাদেশকে সব ধরনের সাপোর্ট দিচ্ছে। কিন্তু তারা চাইছে এই সংস্কার যেন হয় গণতান্ত্রিকভাবে, যেটাকে টিকিয়ে রাখা যায়। এর সুফল যেন সাধারণ মানুষের কাছে পৌছায়।

 

এই বিশ্লেষক বলছেন, আর্থিক ক্ষেত্রে সুশাসন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের দায়িত্ব শুধুমাত্র অন্তর্র্বতী সরকারের না, রাজনৈতিক দলগুলোরও রয়েছে।

 

সাবেক রাষ্ট্রদূত মি. কবির বলেন, অর্থনীতির বাইরেও আরো যে সব খাত সংস্কারে সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে সে সব সহযোগিতাও বাংলাদেশ পাবে বলে আমি মনে করি।

 

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আসবে
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে।

 

অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছে।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তা ফেরত আনতে টেকনিক্যাল, ফাইন্যান্সিয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

 

বিশ্লেষক মি. কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, প্রক্রিয়াটা বেশ জটিল হলেও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে টাকাগুলো ফেরত আনা যায় সরকার সেই চেষ্টা করছে।

 

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অবৈধ অর্থের প্রবাহ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদের পাচার বন্ধ করার বিষয়ে জোর দেন।

 

এসময় তিনি বিশ্বব্যাপী পাচার হওয়া অর্থ নিজ নিজ দেশের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও কামনা করেন।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে কিংবা সুসম অর্থনীতি চালু করতে হলে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতেই হবে।

 

অধ্যাপক খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, “মধ্যপ্রাচ্য কিংবা ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ রয়েছে যেখানে বাংলাদেশে থেকে টাকা পয়সা পাচার হয়ে গেছে। সে সব দেশগুলোকেও চাপ দিতে হবে। এ জন্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সাথেও যোগাযোগ রাখতে হবে”।

 

সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সাথে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই শিক্ষক।

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, “চীন নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ অন্যান্য বিষয়েও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ জায়গায় হয়তো আমাদেরও চিন্তা ভাবনার সুযোগ রয়েছে”।

 

এই সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক হতে পারে এমন একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা আলোচনাও চলছিল।

 

তবে শেষ পর্যন্ত দুই সরকার প্রধানের সময় না মেলার কারণে বৈঠক হবে না বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। এমন অবস্থায় একটি বৈঠক করার জন্য ভারতেরও এক ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল।
অধ্যাপক খান বলেন, প্রতিবেশী দুই সরকার প্রধানের মধ্যে দেখা হলে হয়তো ভাল হতো। এতে সম্পর্কের বিভিন্ন দিক ঝালিয়ে নেয়া যেত। তবে, এখনই বৈঠক না হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্কে যে খুব নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, সেটিও বলা যাবে ন।

 

যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আহ্বান
বহুমুখী সংকটে জর্জরিত বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ এবং সংঘাতের ফলে ব্যাপকভিত্তিতে মানুষের অধিকার খর্ব হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, বিশ্ববাসীর উদ্বেগ এবং নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় গণহত্যা থামছে না। ফিলিস্তিনের বিদ্যমান বাস্তবতা কেবল আরব কিংবা মুসলমানদের জন্যই উদ্বেগজনক নয়, বরং তা সমগ্র মানবজাতির জন্যই উদ্বেগের। একজন মানুষ হিসেবে প্রত্যেক ফিলিস্তিনির জীবন অমূল্য। ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ হচ্ছে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়বদ্ধ করতে হবে।

 

ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর চলমান নৃশংসতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশেষত নারী এবং শিশুদের সাথে প্রতিনিয়ত যে নিষ্ঠুরতা বিশ্ব দেখছে, তা থেকে নিস্তারের জন্য বাংলাদেশ অনতিবিলম্বে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির (ইমিডিয়েট অ্যান্ড কমপ্লিট সিসফায়ার) আহ্বান জানাচ্ছে। দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই (টু স্টেট সল্যুশন) মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি আনতে পারবে, তাই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সকলকে এর বাস্তবায়নের জন্য এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।

 

তিনি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, গত আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই যুদ্ধের প্রভাব সর্বব্যাপী। এমনকি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব অনুভূত হচ্ছে। আমরা তাই উভয়পক্ষকেই সংলাপে বসে বিরোধ নিরসনের মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
অটোনমাস ইন্টেলিজেন্সের ব্যাপারে শঙ্কা

 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় বিকাশ এবং এর বহুমাত্রিক প্রয়োগে বাংলাদেশ বিশেষভাবে আগ্রহী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের তরুণ সমাজ জেনারেটিভ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সম্ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। একজন বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তারাও চায় নতুন পৃথিবীতে নিয়োজিত হতে, কর্মক্ষম হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে। বাংলাদেশের মতো বৃহৎ তরুণ জনগোষ্ঠীর দেশ যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগজনিত অর্জিত সুফল থেকে পিছিয়ে না পড়ে, বিশ্ব সম্প্রদায়কে তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে, নিশ্চিত করতে হবে যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে কর্মক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা সংকুচিত হয়ে না যায়।

 

এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, আমরা অটোনমাস ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সম্প্রসারিত করতে পারে, মানুষের কোনও হস্তক্ষেপ ব্যতিরেকে, তার ব্যাপারে আমরা বৈজ্ঞানিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, তারা যেন এক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার আগে মানুষের ওপর এর প্রভাব সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে অগ্রসর হন। আমাদের ধারণা, অটোনমাস ইন্টেলিজেন্স মানুষের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলতে পারে।

 

নতুন ধরনের সহযোগিতা কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান
বৈশ্বিক ব্যবসা ও জ্ঞানের অধিকারী-গোষ্ঠী মানুষের চাহিদাগুলোকে যথাযথভাবে অনুধাবন করে নতুন ধরনের সহযোগিতা কাঠামো দরকার বলে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এমন একটি রূপান্তরকারী ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যা কর্মসংস্থান, আর্থসামাজিক প্রতিকূলতা বা জীবিকার জন্য জুতসই সমাধান নিশ্চিত করবে।

 

ড. ইউনূস বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা, সক্ষমতা ও সম্পদ একত্রীকরণের মাধ্যমে সবার সামর্থ্য, উদ্ভাবনী শক্তি এবং সমৃদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে। আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীলতা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছি, সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে তার মোকাবিলা করতে হবে।

 

বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলের দেশগুলোর অনন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিভুজীয় সহযোগিতা এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে বলে আমি মনে করি’, যোগ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, বৈশ্বিক দক্ষিণের আওয়াজকে বিশ্বব্যাপী জোরালোভাবে তুলে ধরার জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ। সেজন্য বৈশ্বিক অ্যাজেন্ডা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলোর মতামতকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
জনস্বাস্থ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ

 

অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে শেষ পর্যায়ে এসে কোভিড অতিমারির অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, করোনার সময় আমরা দেখেছি, জনস্বাস্থ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) বৈশ্বিক অতিমারি চুক্তির চলমান আলোচনায় বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা চাই কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অর্থায়ন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, গবেষণা ও উন্নয়ন, চিকিৎসা, পরীক্ষা, ভ্যাকসিন, থেরাপিউটিক্সের উৎপাদন বহুমুখীকরণে এবং সব ভ্যাকসিনকে মেধাস্বত্ব-অধিকার (ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস) মুক্ত ঘোষণা করার ব্যাপারে ঐকমত্য।

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন