সীমান্তে আটকের পর যা বললেন সাবেক বিচারপতি মানিক

প্রকাশিত: ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২৪

সীমান্তে আটকের পর যা বললেন সাবেক বিচারপতি মানিক

নিউজ ডেস্ক : সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারত পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক হয়েছেন আলোচিত-সমালোচিত সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে আটক করা হয়। রাত ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি বিজিবি ক্যাম্পে রয়েছেন।

 

এদিকে বিচারপতি মানিক আটকের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

 

এর মধ্যে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক বিচারপতি মানিক জঙ্গলের ভেতরে কয়েকটি কলাপাতা বিছিয়ে তার মধ্যে একপাশ ফিরে শুয়ে আছেন। তার পরনে গাঢ় নীল চেকের হাফ হাতা শার্ট আর ময়লা ভেজা প্যান্ট পরনে। পেটের কাছাকাছি সাদা রঙের টুপি উল্টো করে পড়ে আছে। তাঁকে ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল।

 

তিনি স্থানীয় একাধিক যুবকের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তার অবস্থান ঠিক কোন জায়গায় সেটি নিশ্চিত হওয়া না গেলেও স্থানীয়দের সঙ্গে কথোপকথন থেকে ধারণা করা যাচ্ছে তিনি সীমান্তের ওপারে ছিলেন। তবে আলো দেখে মনে হচ্ছিল ভিডিওটি বিকেলে ধারণ করা।
১৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর শুরুতেই ওই যুবকদের (ভিডিওতে দেখা যায়নি) উদ্দেশ্যে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি তোমাদের পয়সা দিয়ে দেব।

 

’ তখন যুবকদের একজন বলেন, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে।’

মানিক আবার বলেন, ‘পয়সা আমি দেব। আমার ভাই বোন দিয়ে দেবে।’

 

জবাবে যুবক বলেন, ‘আমাদের পয়সার কোনো প্রয়োজন নেই। ঠিক আছে? আপনি যদি সেফটি মানে…’।

 

কথার মাঝখানে তাকে থামিয়ে শামসুদ্দিন মানিক বলেন, ‘ওই ফালতু লোক দুইটারে আনিও না। আমি এই দেশে এত কষ্ট করে এসেছি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য?

 

আরেকটি ভিডিও ২ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের। সেটি রাতে তিনি বিজিবির হাতে আটক হওয়ার পর ধারণ করা। সেখানে দেখা যায় সাবেক বিচারপতি মানিকের গলায় গোলাপী রঙের মাফলার পরা। মাফলারে ধরে আছেন একজন। তাকে নানা প্রশ্ন করা হচ্ছে। সাদা দাড়ির মানিককে তখনো খুব বিধ্বস্ত ও হতাশ দেখাচ্ছিল।

 

ভিডিওর শুরুতে একজন (ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল না। সম্ভবত বিজিবির লোক) প্রথমে প্রশ্ন করেন, আপনার বাড়ি কোথায়?

 

উত্তরে তিনি বলেন, ‘বাড়ি মুন্সিগঞ্জ।’

 

পরে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘নাম জিজ্ঞাস করিনি। নাম কি?’

 

তখন তিনি বলেন, ‘আমার নাম বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।’

 

এসময় একজন খ্যাত প্রকাশ করে বলেন, ‘মানিক্যা? কয়েকদিন আগে উপস্থাপিকাকে ইয়ে করছ? সেই মানিক্যাই?

 

তিনি তখন ওপর নিচে মাথা নেড়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ।’

 

প্রশ্নকর্তা বলেন, ‘আপনার পিতার নাম?’

 

তিনি উত্তরে বলেন, ‘পিতার নাম মরহুম আব্দুল হাকিম চৌধুরী।’

 

প্রশ্নকর্তা বলেন, ‘আব্দুল হাকিম চৌধুরী। গুড। আপনে ইন্ডিয়া পালাইতেছিলেন কেন? বলেন?’

 

মানিক বলেন, ‘ভয়ে পালাইতেছি।’

 

প্রশ্নকর্তা, ‘কার ভয়ে?’

 

মানিক, ‘প্রশাসনের ভয়ে।’

 

প্রশ্নকর্তা, ‘ওই যে একটি মেয়েকে (উপস্থাপিকা) বলেছিলেন ইয়ের বাচ্চা।’ পাশ থেকে তখন আরেকজন বলে উঠেন, ‘দিপ্তি চৌধুরীকে বলেছিলেন।’

 

মানিক, ‘তার জন্য আমি ক্ষমাও চেয়েছি। আমি বলি আপনারে আমি ইয়ের রোগী (শার্ট তোলে বুকের অপারেশনের দাগ দেখানোর চেষ্টা করেন)।’

 

তাকে থামিয়ে দিয়ে প্রশ্নকর্তা বলেন, ‘কত রোগী.. মিডিয়াতে তো খুব সুন্দর করে বলেন।’

 

প্রশ্নকর্তাকে থামিয়ে দিয়ে আরেকজন বলেন, ‘আচ্ছা আচ্ছা শোনেন, আপনাকে যখন ধরেছে তখন কি কি ছিল আপনার সাথে?’

 

মানিক বলেন, ‘আমার সাথে ছিল ব্রিটিশ পাসপোর্ট, বাংলা পাসপোর্ট, টাকা আর কয়টা ডেবিট কার্ড আর ক্রেডিট কার্ড?

 

ওই প্রশ্নকর্তা ফের প্রশ্ন করেন, ‘কালকে যে টাকাগুলো ছিল, আজকে কি কোনো টাকা ছিল সাথে?’

 

মানিক বলেন, ‘আজকে টাকা ছিল না। কত জানি চল্লিশ হাজার টাকা ছিল।’

 

প্রশ্নকর্তা জানতে চান, ‘কালকে যে দুজন টাকা নিয়েছিল ওদের কাছে কত টাকা ছিল?’

 

মানিক বলেন, ‘ধরেন ৬০-৭০ লাখ। ওরা নিয়ে গেছে।’

 

প্রশ্নকর্তা বলেন, ‘নৌকাওয়ালাও নিয়ে গেছে?’

 

মানিক বলেন, ‘না ওই দুই ছোকরা নিছে। আর কেউ ছিল না। ’

 

প্রশ্নকর্তা, ওদের ফোন নম্বর টম্বার আছে?’

 

উত্তরে মানিক বলেন, ‘কিচ্ছু নাই। আমার ফোন নম্বর টম্বার সব নিয়ে গেছে।’

 

প্রশ্নকর্তা, ‘আপনি কত টাকা কন্ট্রাকে আসছিলেন?’

 

মানিক বলেন, ‘আমি ওদের ১৫ হাজার বলেছিলাম। ওইটা আমি দিছি। কিন্তু পরে ওই দুই ছেলে আমারে মাইরা ধইরা টাকা নিয়ে গেছে।’

 

তখন নীল রঙের শার্ট পরা (ভিডিওতে চেহারা দেখা গেছে) আরেকজন স্থানীয় লোক প্রশ্ন করেন, ‘কোন জায়গায় আপনাকে মারছে ভাইয়া? বর্ডারের বাইরে এনে মারছে (বাংলাদেশ সীমান্তে) নাকি তারার ওদিকে (ভারত সীমান্তে)।

 

উত্তরে মানিক বলেন, ‘ইন্ডিয়ার ভিতরে।’

 

তখন আরেকজন প্রশ্ন করেন, ‘আপনে তো আমাদের বাংলাদেশের অনেকের নামে অন্যায় করেছেন, জুলুম করেছেন। এটা সঠিক?’

 

মানিক প্রতিবাদ করে বলেন, ‘আমি জুলুম করি নাই। বিচারপতি হিসেবে যেগুলো রায় করার সেগুলো দিছি।

 

তখন আরেকজন বাধা দিয়ে বলেন, ‘এইগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় চলবে। এগুলো আমরা কথা বলতে পারি না। বাকিগুলো জিজ্ঞাস করেন। এগুলো আমাদের ঊর্ধ্বতন জিজ্ঞাসা করবে। চলেন আমরা যাই।’

 

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও টেলিভিশন টক শোতে কথা বলতেন তিনি।

 

শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে আলোচক হিসেবে অংশ নিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আলোচনার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালকের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার সঞ্চালকের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন।

 

এখানেই শেষ নয়, অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে সঞ্চালককে প্রকাশ্যে অযোগ্য ভাষায় গালি দেন বিচারপতি মানিক। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে অবশ্য তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন এ বিষয়ে।

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন