দ্য ইকোনমিস্ট ড. ইউনূসের সামনে ৩ চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ৮:১৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২৪

দ্য ইকোনমিস্ট ড. ইউনূসের সামনে ৩ চ্যালেঞ্জ

নিউজ ডেস্ক : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। নতুন সরকারের সদস্য সংখ্যা হবে প্রধানসহ ১৭ জন।

 

৫ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার হওয়ার কথা ছিল ঢাকার একটি আদালতে। একটি দুর্নীতি মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারত। তবে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঘুরে গেলো তার ভাগ্যের চাকা।

 

বিচারের মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ও সামাজিক উদ্যোক্তা ড. ইউনূস বাংলাদেশের সেনা-সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নিযুক্ত হন। তবে অস্থিতিশীল এই সময়ে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়তে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হবে তাকে।

 

এভাবেই ড. ইউনূসকে নিয়ে ঘটনাক্রম বর্ণনা করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকনোমিস্ট। দেশ চালাতে গিয়ে তিনি প্রধান ৩টি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন বলেও বিশ্লেষণে দাবি করেছে সাময়িকীটি।

 

প্রথম চ্যালেঞ্জ

 

দ্য ইকোনমিস্টের মতে, ৮ আগস্ট প্রত্যাশিতভাবে শপথ নেওয়ার পর ড. ইউনূসের প্রথম কাজ হবে দেশে আবার শান্তিপূর্ণ রাজনীতি ফিরিয়ে আনা। দেশের সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল।

 

আন্দোলনের তোপের মুখে অবশেষে কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দেয় আদালত। তবে তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল। ইতোমধ্যে কোটা সংস্কারের আন্দোলন বছরের পর বছর ধরে চলা শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের হতাশাকে উসকে দিয়েছিল।

 

চলতি সপ্তাহের শুরুতে তার বাসভবনে ভাঙচুর এবং পুলিশ স্টেশন ও আওয়ামী লীগ মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলার ঘটনাগুলো প্রতিবাদকারীদের ক্ষোভেরই প্রতিফলন। অব্যাহত এই অশান্তির ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ৭ আগস্ট দেশবাসীকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

 

দেশবাসীর ‍উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আপনার শান্ত থাকুন ও আপনার চারপাশের মানুষদের শান্ত থাকতে সহযোগিতা করুন।’

 

দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ

 

ড. ইউনূসের পরবর্তী কাজ হবে বাংলাদেশের রাজনীতির পুনর্গঠন করা। আর এ জন্য শুধু দ্রুত নতুন নির্বাচনের আয়োজনই যথেষ্ট নয়। তাকে আরও বেশি কিছু করতে হবে। দেশের আদালত ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাব কমাতে হবে।

 

দীর্ঘদিন ধরেই সেগুলো অস্থিরতার উৎস হিসেবে কাজ করছে। একইসঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার জন্য সময় ও সুযোগ দিতে হবে। এই পদক্ষেপগুলো ছাড়া একটি নতুন নির্বাচন সহজেই ইসলামপন্থি গোষ্ঠী বা একটি পুনর্গঠিত বিএনপির পক্ষে যেতে পারে। তবে এই শক্তিগুলোও দলকেন্দ্রিতায় ভুগছে।

 

তৃতীয় চ্যালেঞ্জ

 

ড. ইউনূসের জন্য তৃতীয় বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি জটিল ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি করা। এই পরিবর্তনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রভাবিত হবে বেশি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে দেশটির একটি ঘনিষ্ঠ ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। আওয়ামী লীগকে এই অঞ্চলে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে একটি ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি হিসেবে দেখে ভারত।

 

গত এক দশকে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় ভারত শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, জ্বালানি ও সামরিক সম্পর্ক সম্প্রসারিত করেছে। নির্বাসনে যাওয়া ‘লৌহ মানবী’ হিসেবে পরিচিত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে শেখ হাসিনাকে সমর্থন না করা অনেক বাংলাদেশির মনে ভারত বিরোধিতা আরও বাড়বে।

 

এছাড়া, বাংলাদেশে অবস্থান করা আনুমানিক ১০ হাজার ভারতীয় নাগরিক এবং সেই সঙ্গে ১ কোটি ৪০ লাখ হিন্দু সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় সহায়তা করার জন্য চাপের মধ্যে রয়েছে দিল্লি।

 

প্রকৃতপক্ষে, আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং যেকোনও উত্তরসূরি শেখ হাসিনার চেয়েও বেশি চীনের দিকে ঝুঁকতে পারেন। এমন না যে তিনি চীনের প্রতি বিরূপ ছিলেন। তার শাসনামলে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার, দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগকারী, তৃতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা এবং সামরিক প্রযুক্তির প্রধান উৎস হয়ে ওঠে। তবুও, চীনের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল না হওয়ার জন্য ভারত ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে সতর্ক ছিলেন শেখ হাসিনা।

 

বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শাসনামলে বাংলাদেশে নতুন এবং উদারপন্থি শক্তির উত্থান হয়নি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামপন্থি দলগুলো আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তারাও এখন নেতৃত্বের এই শূন্যস্থান পূরণ করতে চাইতে পারে। তবে এই চ্যালেঞ্জটি আরও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, বাংলাদেশ এখন চীন, ভারত এবং পশ্চিমাদের মধ্যে একটি ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে।

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন