বিশ্বনাথে পৌর সভার মালামাল মেয়রের বাসায়!

প্রকাশিত: ৮:৫৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

বিশ্বনাথে পৌর সভার মালামাল মেয়রের বাসায়!

নিজস্ব প্রতিবেদক : পৌরসভার সব মালামাল নিজের বাসায় নিয়ে গেছেন বিশ্বনাথের পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান। সোমবার মেয়র পৌরসভার সকল মেশিনারি, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্রসহ মালামাল বাসায় নিয়ে যান। ‘পৌরসভা অফিসে হামলার আশংকা’র অজুহাতে মালামাল বাসায় নিয়ে গেলেও জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পৌরসভাকে দেশ ও জনগণের সম্পদ মনে না করে নিজের সম্পত্তি বানিয়ে নিয়েছেন মেয়র- এমন মন্তব্যও করছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন, এসব সম্পত্তি রাষ্ট্রের। এসবের নিরাপত্তা দিবে রাষ্ট্র, মেয়র নয়। মেয়র মূলত পৌরসভার সামগ্রী আত্মসাৎ ও সাম্প্রতিক সৃষ্টি পরিস্থিতে পানি ঘোলা করবার জন্য এটি করেছেন।

 

বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুনু মিয়া বলেন, সরকারি সকল মালামাল মেয়র তার বাসায় নিয়ে গেছেন। এটি তিনি পারেন না। এগুলো ব্যক্তিগত সম্পদ নয়, রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র এই সম্পদ দেখবাল করবে। নিজের সম্পত্তির মতো মনে করবার কোনো সযযোগ নেই। এটি করে তিনি ফৌজদারী অপরাধ করেছেন। শোনার পর বিষয়টি দেখার জন্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, আমি বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি।

 

এদিকে আসবাবপত্র ও মূল্যবান সামগ্রী মেয়রের বাসায় নিয়ে যাওয়ার ফলে কার্যত পৌর এলাকার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। পৌর অফিসে কার্যত ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করছে। রোববার বিশ্বনাথ পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের মধ্যকার ঘটনার পর পরদিন সোমবার সকাল ১১টায় মেয়রের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভূতুড়ে অবস্থা। বিশ^নাথ পুরান বাজারের সুলেমান মিয়া, মানিক মিয়া, কালিগঞ্জ বাজারের আবু তাহির, কামালপুরের তুরণ মিয়া, জানাইয়া গ্রামের রাবিয়া বেগমসহ আরো অনেকেই এসেছিলেন ট্রেস লাইসেন্স, মৃত্যু সনদ ও ভাতা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। কিন্তু মেয়রের কার্যালয় বন্ধ থাকায় তারা নিরূপায় হয়ে ফিরে যান। এ প্রতিবেদককে তারা বলেন, অবাক হয়েছি, রাতারাতি পৌর অফিস খালি দেখে!

 

বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামন আসাদ, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ এক ফেসবুক লাইভে বলেছেন, মুহিবুর রহমান পৌরসভাকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করে শান্ত বিশ্বনাথকে গায়ে জোরে ও সন্ত্রাসী দিয়ে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। অভিলম্বে তাকে অপসারণ করে বিশ্বনাথের মান সম্মানকে অক্ষুন্ন রাখতে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান। পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

এদিকে এমনিতেই বিশ^নাথ পৌরমেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলররা অনাস্থা প্রস্তাবের পর থেকে পৌরসভার কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে পৌরসভা এলাকা ঘুরে মেয়র কিংবা কর্মকর্তা কর্মচারি কাউকে অফিস করতে দেখা যায়নি। পৌরসভার নাগরিকরা তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত। লোকজন প্রতিদিন মেয়রের অফিসে প্রবাসিরা এসেও কাউকে না পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন। অনেকের প্রত্যয়ন পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, কর প্রদানের তথ্য জানা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাতাসহ সামাজিক নিরাপত্তা জন্য অসহায় গরিব লোকরা থানা সদরের অফিসে অফিসে ঘুরছেন। কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না।

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন