দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজে জোর জবরদস্তির কাণ্ড!

প্রকাশিত: ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪

দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজে জোর জবরদস্তির কাণ্ড!

অনলাইন ডেস্ক : তথ্য গোপন করে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজে ‘সহকারী অধ্যাপক’ পদে ভূতাপেক্ষ নিয়োগ (পেছনের তারিখ থেকে কার্যকর) নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শামসুল ইসলাম নামে এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

 

কলেজটি বেসরকারি থাকাকালেও তিনি একই কায়দায় সহকারী অধ্যাপক পদেও পদোন্নতি নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। শুধু তাই নয়, উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকা এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ নিষ্পত্তি না হলেও অবসরে গিয়ে কল্যাণ ফান্ডের ২০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন তিনি।

 

কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক। বললেন, ‘অভিযোগ মিথ্যা। আগে তদন্ত হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। এখনও তদন্ত চলছে।’

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএ পরীক্ষায় কম্পার্টমেন্টাল (গ্রেস মার্ক দিয়ে) পাস করে ১৯৯৩ সালে দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক পদে নিয়োগ পান শামসুল ইসলাম। ২০১০ সালের পরিপত্র অনুযায়ী কাম্য যোগ্যতার বিপরীতে বিএ পাস কোর্স ও কম্পার্টমেন্টাল পাস ছিলেন এই শিক্ষক। এই পদে আর কোনও প্রার্থী না থাকলেও পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। একক প্রার্থী হিসেবে তিনি নিয়োগ পান। ১৯৯৩ সালের ১০ অক্টোবর যোগদানের পর একই বছর এমপিওভুক্ত হন তিনি।

 

অভিযোগ উঠেছে, প্রভাষক পদে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে মাত্র চার বছরের মাথায় তথ্য গোপন করে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। সহকারী অধ্যাপক হওয়ার পর ২০০৬ সালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হন এবং ২০১১ সালে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন।

 

কলেজটি ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট সরকারি হয়। শামসুল ইসলাম অবসরে যান ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর। অবসরের দুই বছর পর ভূতাপেক্ষ সহকারী অধ্যাপক পদে অ্যাডহক নিয়োগ পান তিনি। নিয়োগ পেয়ে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট থেকে অবসর পর্যন্ত সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। কল্যাণ ফান্ডের ২০ লাখ টাকাও উত্তোলন করেন তিনি।

 

বেসরকারি থাকাকালে কলেজে প্রভাষক পদে নিয়োগ নিয়ে আপত্তি দেখা দিলে ২০০৩ সালের ৭ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষকে। এই নিয়োগ বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে শামসুল ইসলাম উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। এই রিট নিষ্পত্তি না হলেও প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক, তারপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, অধ্যক্ষ এবং পরে সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বনে যান।

 

সম্প্রতি দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের অ্যাডহক নিয়োগ পাওয়া সহকারী অধ্যাপক শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। কল্যাণ ফান্ডের টাকা তুলে নিলেও অবসরের টাকা যাতে না ওঠাতে পারেন সেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

 

এর আগে এসব অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে। এখনও অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি।

 

এসব ঘটনার পর গত ২৮ জানুয়ারি মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরে লিখিত অভিযোগ করেন কলেজটির রসায়ন বিষয়ের প্রদর্শক মোছা. নাজনীন খান ইভা এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ের সাবেক সহকারী অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ।

 

জানতে চাইলে শামসুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ মিথ্যা। আগে তদন্ত হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। এখনও তদন্ত চলছে। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমি ভূতাপেক্ষ হিসেবে দুই বছর পর আমার সরকারি হিসেবে নিয়োগ হয়েছে। ভূতাপেক্ষ যোগদান করেছি, গেজেট হয়েছে।’

 

অবৈধ নিয়োগ প্রসঙ্গে শামসুল ইসলাম বলেন, ‘হ্যাঁ, রিট মামলা পেন্ডিং আছে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে তো কেউ মামলা করেনি। আমি রিট মামলা করেছি। যে কোম্পানির অডিট করার ক্ষমতা নেই, সেই কোম্পানি অডিট করে বলে দিয়েছে—আমি একক প্রার্থী ছিলাম। ইন্টারভিউ বোর্ডে একাধিক প্রার্থী থাকতে হবে, কোন নীতিমালায় বলা আছে? তিন জন প্রার্থী থাকতে হবে, কোন নীতিমালায় বলা আছে?’

 

চার বছরে কীভাবে সহকারী অধ্যাপক হলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই কলেজে চার বছর, অন্য কলেজে… আগে অন্য কলেজে ছিলাম। এমপিও হলেও তো যোগদানের তারিখ থেকে সার্ভিস কাউন্ট করে।’

 

তবে আগে প্রভাষক হিসেবে চাকরি করা সিলেটের বিয়ানি বাজারের সৈয়দ নবীব আলী মহাবিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, শামসুল ইসলাম ১৯৯০ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে ১৯৯৩ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। আর কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়েছে চাকরি ছেড়ে যাওয়ার পর, ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি। তথ্য অনুযায়ী, তিনি এমপিওভুক্ত শিক্ষক ছিলেন না। প্রথম এমপিওভুক্ত শিক্ষক হন নতুন জাতীয়করণকৃত দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজে। তথ্য অনুযায়ী, সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন এমপিওভুক্ত হওয়ার চার বছরের মাথায়।

 

নীতিমালা অনুযায়ী, এমপিও হওয়ার পর সাত বছর প্রভাষক পদে চাকরি করলে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। অথচ মাত্র চার বছরেই সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন; যা নীতিমালা পরিপন্থি।

 

মামলা চলাকালে কল্যাণ ফান্ডের টাকা উত্তোলনে করেছেন কিনা জানতে চাইলে শামসুল ইসলাম বলেন, ‘কল্যাণের টাকা পেয়েছি, অবসরের টাকা উত্তোলনের কাজ চলছে।’

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন