প্রকাশিত: ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
দক্ষিণ সুরমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনিয়ম ও অ-ব্যবস্থাপনা চরম
জনি শর্মা/ছায়াদ আলী :: নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।চিকিৎসকরা সঠিক সময়ে হাসপাতালে আসেন না।চিকিৎসকদের পরিবর্তে বেশিরভাগ সময়ে জরুরি বিভাগে রোগী দেখেন সেকমো ও নার্স-মিডওয়াইফরা।
জানা যায়,মূল ভবন ছাড়াও সার্জন,ডাক্তার,নার্স ও কর্মচারীদের আবাসনের জন্য তৈরি করা হয় আরও বেশ কয়েকটি বিশিষ্ট ভবন।হাসপাতাল ভবনে অপরিচ্ছন পরিবেশে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে রোগীদের।বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায়,বর্তমানে সেখানে কর্মরত আরএমও রুবাইয়া স্টাফ নিয়োগে উদাসিন।এখানে পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মী,ওয়ার্ডবয় নেই এতে মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই।অন্যসকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেখানে স্টাফ নিয়োগের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে বার বার ধর্ণা দিচ্ছে,সেখানে এই হাসপাতালের কর্তারা যোগাযোগও করেন না।
এদিকে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছেন আরএমও ডাঃ রুবাইয়া আহমেদ।নিজের ইচ্ছে মতো হাসপাতালে যাওয়া আসা করেন তিনি।অফিস সময়ের অধিকাংশ সময়ই তিনি অনুপস্থিত থাকেন।হাসপাতালে দেরীতে আসা ও দ্রুত সময়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি লক্ষণীয়।আরএমও’র সখ্যতা রয়েছে বিভিন্ন ঔসধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টিভদের সাথে।অফিস সময়ে রিপ্রেজেন্টিভদের হাসপাতালে আসা নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টিভরা নির্দিধায় ঘুরাঘুরি করেন হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে।দেখলে এমন মনে হবে যেন তারাই এই হাসপাতালের কর্মকর্তা।আর তাদের এমন দূঃসাহসাকিতার পেছনে যত অবদান তার সবটুকুই ডাক্তার রুবাইয়া আহমেদের।অফিস সময়ে রিপ্রেজেন্টিভদের কক্ষে নিষেধ করাতো দূরের কথা, উল্টো তিনি নিজের টেবিলে বসে তাদের সাথে চা আড্ডায় ব্যস্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে বিস্তর।এসময় রুগী আসলে রুগীর সাথে খুবই রুঢ় আচরণ ও চিল্লাচিল্লি করেন তিনি।এছাড়াও তাদেরকে পেছনে থেকে সহযোগিতা করেন কয়েকজন প্রভাবশালী।তাই তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতার নাম ভাঙিয়ে আরএমও চলেন বীরদর্পে,কোনও কর্ণপাত করেন না।জন্ম নিবন্ধন ও বিভিন্ন ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে সাইনবোর্ডে দু’দিন নিয়ম থাকলেও আরএমও রুবাইয়া সপ্তাহে একদিন ১ ঘন্টা স্বাক্ষর করেন।এতে সারা সপ্তাহে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকেনা।ভাতা স্বাক্ষর সংক্রান্ত বিষয়েও তিনি নিজের ইচ্ছে মতো মন চাইলে স্বাক্ষর করেন নতুবা মানুষকে ফিরিয়ে দেন।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ- প্রায়ই রিপ্রেজেন্টিভদের সাথে চা-আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন আরএমও।বিভিন্ন উন্নতমানের গিফট সামগ্রী নিয়মিত আরএমও’র হাতে তুলে দেন মেডিকেলে আসা রিপ্রেজেনটেটিভরা।
আউটডোরে ডাক্তাররা সকাল এগারোটার পরে আসেন ও দুপুর ১টার মধ্যে শেষ করে তাড়াহুড়ো করে চলে যান।জরুরি বিভাগের ডাক্তার জরুরি বিভাগে না থেকে রাতের বেলা ভেতরের ১০১ নাম্বার রুমে সিটকিনি আটকিয়ে বসে খোশগল্পে মেতে থাকেন প্রায়ই।রাত্রিবেলায় ডাক্তার ও নার্স/মিডওয়াইফ,ওয়ার্ড বয়,নাইটগার্ড-ও ঘুমিয়ে পড়েন যার যার কক্ষে।বাহিরে হাসপাতালের গেইট থাকে তালা লাগানো,রুগীরা এসে চিৎকার-চেচামেচি করলে দীর্ঘক্ষণ পরে গেইট খোলা হয়।কিছু ডাক্তার ও নার্স রাতে হাসপাতাল কোয়ার্টারে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যায়।ঘুম থেকে উঠে এসে তারা মানুষের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করেন।
হাসপাতালের ইনডোরে বিশেষ করে ভর্তি রুগীদের ওয়ার্ড সমূহ থাকে অপরিস্কার,ময়লা।সপ্তাহে ১ দিনও ময়লা পরিস্কার হয়না।রোগীদের বেডসীট পাল্টানো হয়না।হুইল চেয়ার ব্যবহারে ও যে কোনও দায়িত্ব পালনের পর ওয়ার্ড বয় রোগী ও স্বজনের কাছে চাহিদামতো টাকার অংক চেয়ে বসে।ইনডোরে বেশিরভাগ ওয়ার্ডের বাথরুম ও রোমগুলোতে কারেন্ট যাওয়ার পর বাতি জ্বলেনা।বাথরুমগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
হাসপাতালে সরকার থেকে আসা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মেশিন অনেক আগে আসলেও তা ব্যবহার না করায় ঝং ধরে ব্যবহারে অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে লোকবল নিয়োগ না হওয়ায়,এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।এতে সাধারণ মানুষের বাহিরে গিয়ে বেশি টাকা দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়,গরীব মানুষের দূর্ভোগের সীমা নেই!হাসপাতালে এম্বুলেন্স সার্ভিস থাকলেও ড্রাইভার এর অনুপস্থিতির কারণে দিনে-রাতে রুগিরা সেবা পাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়ার পর মাসের পর মাস চলে যায় কম্পিউটারে ডোজ আপডেট দেওয়া হয়না।এতে সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ বাড়ে,পরবর্তী ডোজ দিতে গেলে আগের ডোজ আপডেট না হলে ভ্যাকসিন দেন না দায়িত্বরতরা!অনেক দৌড়ঝাপ করে অফিসে ধর্ণা দিয়ে কিছু মানুষ কাগজ আপডেট করান এবং পরবর্তী ডোজ গ্রহণ করেন।এখানে দায়িত্বশীল যারা আপডেট কাজ পেন্ডিং রেখে খামখেয়ালিপনায় মত্ত থাকেন।সপ্তাহে ছয়দিন ১০ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত করোনা টিকা দেয়ার নিয়ম থাকলেও দুপুর ১ টার পর দায়িত্বশীলরা তাড়াহু