সিলেট-২ আসনে পুণ:নির্বাচনের দাবি চার প্রার্থীর : না হলে আন্দোলন

প্রকাশিত: ১:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২৪

সিলেট-২ আসনে পুণ:নির্বাচনের দাবি চার প্রার্থীর : না হলে আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সিলেট-২ আসনের ফলাফল বাতিল করে পুণরায় নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুই এমপি, মেয়রসহ চার প্রার্থী।

 

তারা হলেন, গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান (ট্রাক) এবং তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আবদুর রব (সোনালী আঁশ)। সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে মহানগরের পূর্ব জিন্দাবাজারের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন তাদের অভিযোগগুলো বিস্তারিত তুলে ধরেন।

 

এরআগে রোববার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে নিজেদের এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে এই চার প্রার্থী ভোট বাতিল করে পূণ:ভোটের দাবি জানান। না হলে তারা আইনি লড়াইসহ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুশিয়ারি দেন তারা।

 

স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন- নির্বাচনের দিন রবিবার যেটি হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ একটি প্রহসনের নির্বাচন। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও ইলেকশন কমিশনের কথায় বিশ্বাস করে প্রতারিত হয়েছি। রোববারের এটি কোনো নির্বাচনই ছিলো না তাই আমরা বর্জন করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের এজেন্টদের মারধর, জোরপূর্বক বের করে দেওয়া, কেন্দ্র দখল করে টেবিল কাস্টসহ ব্যাপক অনিয়মের কারণে আমরা নির্বাচনের দিন দুপুর ১২টার আগেই ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেই। পরে বেলা ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেই আমরা চারজন।

 

আমরা সবাই রোববারের সিলেট-২ আসনের সব কেন্দ্রের ভোট ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং আবারও নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। আমরা আমাদের আইনজীবির সঙ্গে পরামর্শ করে দু-এক দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবো। জনগনকে সাথে নিয়ে পাশাপাশি আমরা আন্দোলনও চালিয়ে যাবো।

 

গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান বলেন- নির্বাচনের দিন আমরা পদে পদে বাধাগ্রস্থ হয়েছি। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় ও ইলেকশন কমিশন থেকে আমাদেরকে বার বার বলা হয়েছে- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফ্রি এন্ড ফেয়ার হবে। কিন্তু তাদের কথায়-কাজে মিল পাওয়া যায়নি, প্রহসনের নির্বাচন উপহার দেওয়া হয়েছে।

 

জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন- আমাকে একটি সেন্টারে অবরুদ্ধ করে রেখে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা টেবিল কাস্ট করেছেন। আমি বার বার ফোন করেও নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমি প্রায় দুই ঘণ্টা তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিলাম। এরপরই আমরা ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেই। আমাদের এজেন্টদের নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা অনেক কেন্দ্রে ঢুকতেই দেয়নি, অনেক কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচন বর্জন করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিলো না। তাছাড়া প্রহসনের নির্বাচন দেখে আমি নিজেও ভোট দেই নি।

 

তৃণমূল বিএনপির আব্দুর রব মল্লিক বলেন- আমি একটি সূত্রে জানতে পেরেছি, আগের রাতেই ৩৮টি কেন্দ্রের ব্যালট প্যাপারে নৌকায় সিল মারা হয়ে গিয়েছিলো। আমরা এই ৪ প্রার্থী দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়েছি। সেখানকার সুস্থ ধারার রাজনীতি চর্চা এখানেও করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। একটি প্রহসনের নির্বাচন আমাদেরকে উপহার দেওয়া হয়েছে। আমরা এ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃভোটের আবেদন করছি। পাশাপাশি আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো।

 

উল্লেখ্য, ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সিলেট-২ আসনে নৌকা প্রাতীকে ৭৮হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান ট্রাক প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬১টি। জাতীয় পার্টির ইয়হইয়া চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে ৬ হাজার ৮৭৪, গণফোরাম প্রার্থী মোকাব্বির খান উদীয়মান সূর্য প্রতীকে ১হাজার ৯২২টি এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আব্দুর রব মল্লিক সোনালী আঁশ প্রতীকে ৯৪৪টি ভোট পেয়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন