প্রকাশিত: ২:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩
মো: আবু বক্কর : আগামী ৭ জানুয়ারী দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ৩০টি দল প্রার্থী মনোনয়নসহ নানান কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলগুলো হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি- জেপি (মঞ্জু), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু), জাকের পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মুকিত), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট (মুফতী আমিনী প্রতিষ্ঠিত), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ কংগ্রেস, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) ও গণফোরাম।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি বয়কট করলেও অংশ নিয়েছে ৩০টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে সিলেট জেলার বিভিন্ন সংসদীয় আসনে প্রার্থী দিয়েছে ১২টি দল। জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলোর সাংগঠনিক অবস্থানই নেই সিলেটে। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা চেয়ে আছেন আসন ভাগাভাগির চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে।
তাই সিলেটের ৬টি সংসদীয় আসনের সবকটিতেই নৌকার প্রার্থী ছাড়া অন্য কোন দলের প্রার্থীর দেখা মিলছে না। নৌকার কান্ডারিরাই কেবল চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। তবে কোন কোন আসনে নৌকার মাঝিদের পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া দলের নেতারা।
সিলেট জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ সবকটিতে, জাতীয় পার্টি ৪টিতে, তৃনমূল বিএনপি ৪টিতে, ইসলামী ঐক্যজোট ৪টিতে, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ৩টিতে, বাংলাদেশ কংগ্রেস ৩টিতে, জাকের পার্টি ৩টিতে, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ২টিতে, গণফোরাম ১টিতে, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ১টিতে, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ১টিতে ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ১টিতে প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলোর সিলেটের সকল সংসদীয় আসনে সাংগঠনিক অবস্থান নেই। ফলে প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় আসতে পারছেন না এসব দলের প্রার্থীরা।
তবে, নির্বাচনী হিসেব-নিকেষ এখনো ঝুলে আছে মহাজোটের আসন ভাগাভাগিতে। কেন্দ্র থেকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা তাকিয়ে আছেন ঢাকার দিকে। তবে কোন কোন আসনে অন্য দলের প্রার্থীদের নিয়ে মাথাব্যথা না থাকলেও নৌকার মাঝিদের টেনশনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
সিলেটে অনেকটা নির্ভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী। সিলেট-১ আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইসলামী ঐক্যজোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, জাকের পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী।
এছাড়া আসনটি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তবে দলের নেতাকর্মীদের ভিড়াতে না পারায় তিনি নির্বাচনী মাঠে সুবিধা করতে পারছেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন আশাবাদী মিসবাহ সিরাজ শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন। এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিলেট-১ আসনে মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল ও প্রবাসী কল্যানমন্ত্রীর সিলেট-৪ আসনে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু তারা মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
গত বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জাতীয় পার্টির বাবুলের অফিসে গিয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এসেছেন। এসময় বাবুলও রাজনৈতিক সম্প্রীতি ও শ্রদ্ধা থেকে ড. মোমেনের বিরুদ্ধে প্রার্থী না হওয়ার কথা জানান।
সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের ৭ জন নেতা মনোনয়নপত্র কিনলেও শেষপর্যন্ত তারা ইমরান আহমদকে সমর্থন দিয়ে জমা দেননি। ওই আসনে ইসলামী ঐক্যজোট, জাকের পার্টি ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী থাকলেও নির্ভার প্রবাসী কল্যানমন্ত্রী। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যানমন্ত্রী নিয়মিত এলাকায় মতবিনিময় করছেন। দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের কাছে গিয়ে সরকারের উন্নয়নবার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। তার সাথে রয়েছেন জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহহিয়া চৌধুরী, বর্তমান সংসদ সদস্য গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোকাব্বির খান এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ কংগ্রেস ও জাকের পার্টির প্রার্থী।
শফিক চৌধুরীর সাথে সাবেক ও বর্তমান দুই সংসদ সদস্য প্রার্থী হলেও এলাকায় তাদের দলের শক্ত সাংগঠনিক অবস্থান না থাকায় মাঠে কেবল ঘুরে বেড়াচ্ছেন নৌকার কান্ডারি শফিক চৌধুরী।
জেলার ৬টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি সিলেট-৩, ৫ ও ৬ আসনে। সিলেট-৩ আসনে আপিলে মনোনয়ন ফিরে পাওয়ায় নৌকার মাঝি বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন-বিএমএ’র মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী।
এছাড়া জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিকও মহাজোটের শরীক হিসেবে আসনটি ছাড়িয়ে আনার চেষ্টায় রয়েছেন। সিলেট-৫ আসনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবীরের।
এছাড়া আসনটি থেকে প্রার্থী হয়েছেন ফুলতলী পীরের ছেলে আঞ্জুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দিন চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমদ।
সিলেট-৬ আসনে আবারও নৌকা ওঠেছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠ গরম করে রেখেছেন কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন। এছাড়া একই আসনের প্রার্থী তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীও প্রার্থী। এলাকার সাথে র্দীঘদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন শমসের মবিন নির্বাচনকে সামনে রেখে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest