প্রকাশিত: ৯:২৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
অনলাইন ডেস্ক : উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখতে কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ। প্রার্থী হতে পারবেন না তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের) পরিবারের সদস্য বা নিকটাত্মীয়রা। যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের সরে দাঁড়াতে কেন্দ্র থেকে দেওয়া হচ্ছে নির্দেশনা।
ইতোমধ্যে প্রভাবশালী কয়েকজন এমপিকে সতর্কও করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রীও। এ বিষয়ে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার কথাও জানানো হয়েছে তাদের। নির্দেশনা উপেক্ষিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন দলের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন-অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে শুরু থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের বিভাগীয় দায়িত্ব পাওয়া কয়েকজন নেতার সঙ্গে অনির্ধারিত বৈঠক করেন। এতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনার কথা জানান। একই সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরকে সারা দেশে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য যারা নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির নির্দেশনাও দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে দলীয় সভাপতির নির্দেশনা পাওয়ার পরেই দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী ও সংসদ-সদস্যদের দলের এ নির্দেশ জানাতে শুরু করেছেন। বৈঠক সূত্র জানায়, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার জন্য দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান এবং নোয়াখালীর এমপি একরামুল করিম চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজনকে তাৎক্ষণিক ফোন করে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা। এ সময় তাদের পরিবারের সদস্য বা নিকটাত্মীয় যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্যও বলা হয়।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। নির্বাচনকে কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। এটা আমাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কাজ শুরু করেছেন। কয়েকজনকে ফোন করে নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি যারা আছেন তাদেরও দলীয় সভাপতির এই নির্দেশনার কথা জানানো হবে। এই নির্দেশনা না মানা দলের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত অমান্য করা এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ বলেই বিবেচনা করা হবে।
একই বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল যুগান্তরকে বলেন, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আমাদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। নেত্রী বলেছেন, যারা এমপি-মন্ত্রী তাদের সন্তানসহ স্বজনরা যেন এই নির্বাচনে প্রার্থী না হয়। এ ব্যাপারে নেত্রীর পক্ষ থেকে বার্তাগুলো তাদের জানাতে বলা হয়েছে। আমরা নিজ নিজ বিভাগে সবাইকে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি।
সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে না। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শুরু থেকেই এমপি-মন্ত্রীদের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার বা প্রার্থীদের সমর্থন না দেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু দলের কোনো নির্দেশনাই তোয়াক্কা করছিল না তারা। উলটো নিজের পছন্দের প্রার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের অনেকেই তাদের আত্মীয়-স্বজন বা পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করার উদ্যোগ নেন। তাদের পক্ষে প্রকাশ্যে বা গোপনে মাঠেও নামেন অনেকেই। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যেতে হুমকি, তুলে নেওয়া এবং প্রচারণায় বাধা দেওয়াসহ নানা অভিযোগও উঠে কয়েকজন প্রভাবশালী এমপির বিরুদ্ধে।
এ কারণে দলের তৃণমূলে চেইন অব কমান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। ঘটে সংঘর্ষের ঘটনাও। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে অভিযোগও জমা পড়ে। এমন প্রেক্ষাপটে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন, যেসব এমপি-মন্ত্রী পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করছেন-তারা নির্বাচন করতে পারবেন না।
এবার চার পর্বে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম পর্বে ১৫০টি উপজেলায় ভোট হবে ৮ মে। এরপর ২১ মে দ্বিতীয় এবং ২৯ মে তৃতীয় ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া তফশিল না হলেও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মন্ত্রী ও সংসদ-সদস্যদের বিষয়ে দলীয় এই সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাচনের চার পর্বের জন্যই প্রযোজ্য বলে আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে। জানা গেছে, যারা নিকটাত্মীয়দের দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ দলীয় নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest