লাউয়াছড়া বনে মাঝে নিয়মিতই আটকা পড়ছে ট্রেন

প্রকাশিত: ৭:৪৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২৪

লাউয়াছড়া বনে মাঝে নিয়মিতই আটকা পড়ছে ট্রেন

অনলাইন ডেস্ক : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া বনাঞ্চল এলাকায় সিলেট-আখাউড়া রেলপথের নিয়মিতই আটকা পড়ে ট্রেন। রীতিমতো এ ঘটনা এখন স্বাভাবিক। ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা যাওয়া করা বিভিন্ন ট্রেন এ বনের ভেতরে পাহাড়ি উঁচু এলাকায় অতিক্রমের সময় এ সমস্যায় পড়ে। আটকা পড়া ট্রেন কখনো পেছন দিকে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনে নিয়ে আসা হয়। আবার কখনো হুইল স্লিপ বা চাকা ঘোরানোর মাধ্যমে উঁচু এলাকায় ওঠাতে হয়। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীরা।

গত রবিবার রাত সৌয়া ৮ টা থেকে সৌয়া ৯ টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কালনী ট্রেন আটকা পড়লে এক ঘন্টা পর হুইল স্লিপ চাকা ঘোরানোর মাধ্যমে উঁচু এলাকায় ওঠিয়ে নিয়ে আসা হয়।

 

যাত্রী আব্দুল মালিক অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে এত বেশি ট্রেন আর কোথাও আটকা পড়ে কি না তাতে সন্দেহ আছে। যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোতে শক্তিশালী ইঞ্জিন লাগালেই এই সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি। সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, লাউয়াছড়া বনাঞ্চল এলাকাটা উঁচু থাকায় ও রেললাইনের ওপর গাছের পাতা পড়ার কারণে চাকা স্লিপ করে। এ জন্য মাঝেমধ্যে ট্রেন আটকা পড়ে। এ ছাড়া বৃষ্টি বা কুয়াশার কারণেও চাকা স্লিপ করে কখনো।

 

তিনি আরও বলেন, এই সমস্যা দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হবে। এই লাইনে প্রয়োজন হলে নতুন ইঞ্জিন সংযোজন করা হবে।

 

ট্রেনে থাকা যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাসে ৩/৪দিন ঢাকা-সিলেট রেলপথের উপবন এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, মালবাহী ট্রেন ও সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথের পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও উদয়ন এক্সপ্রেসের প্রায়ই লাউয়াছড়া বনে আটকা পড়ার ঘটনা ঘটে। যাত্রীরা মনে করেন এসব ট্রেনের ইঞ্জিন দুর্বল হওয়ার কারণে এমন ঘটনা ঘটছে।

 

২২ মার্চ রাত ৩টার সময় সিলেটগামী উপবন এক্সপ্রেস লাউয়াছড়া বনে আটকা পরে। পরে প্রায় এক ঘণ্টা ট্রেন ধাক্কা দেওয়ার পর ট্রেনের ইঞ্জিন চালু হয় ৪টায়। ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি অনেকেই। এর আগে ১৯ মার্চ পারাবত এক্সপ্রেস বনের ভেতর এক ঘণ্টা আটকা পরে। ১৮ মার্চ ঢাকাগামী আরও একটি ট্রেন আটকা পরে। ২৪ মার্চ রাত সৌয়া ৮টার সময় সিলেট গামী কালনী এক্সপ্রেস লাউয়াছড়া বনে আটকা পরে। পরে প্রায় এক ঘণ্টা ট্রেন ধাক্কা দেওয়ার পর ট্রেনের ইঞ্জিন চালু হয় সৌয়া ৯টায়। ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি অনেকেই। এর আগে একই কারণে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস পেছনের দিকে চালিয়ে ভানুগাছ রেলস্টেশনে আনা হয়।

 

ঢাকা থেকে শমশেরনগর রেলস্টেশনে আসা যাত্রী মালিক, ফারুক আহমেদ জানান, ব্যবসা করার কারণে সপ্তাহে দু-তিনবার ঢাকা যেতে হয় তাঁদের। কয়েক মাস ধরে লাউয়াছড়া বনে ট্রেন আটকা পড়ার ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে ৪ বার আটকা পড়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে। দুর্বল ইঞ্জিন থাকার কারণে বনের উঁচু জায়গা ট্রেন উঠতে পারে না। তাঁরা আরও বলেন, ভানুগাছ স্টেশন থেকে শ্রীমঙ্গল স্টেশন যেতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। সর্বশেষ ২২ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উপবন এক্সপ্রেস বনের মধ্যে আটকা পড়ে এক ঘণ্টা। পরে অনেক যাত্রীও ট্রেনকে ধাক্কা দিয়ে ইঞ্জিন চালু করতে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেন। দ্রুত সময়ে এই সমস্যা সমাধান করার দাবি জানান তাঁরা।

 

 

শমশেরনগর রেলস্টেশনের মাস্টার জামাল আহম বলেন, অনেক সময় দুর্বল ইঞ্জিনের কারণে বনের উঁচু জায়গা উঠতে পারে না। আবার কখনো বৃষ্টির কারণে চাকা স্লিপ করে। তবে এসব ট্রেনের ইঞ্জিন সমতল জায়গায় কোনো সমস্যা করে না। তবে বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন