প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২৪
অনলাইন ডেস্ক : আগামী ৯ মার্চ রাজধানীতে দশম জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী ও সাবে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। এরমধ্যে দিয়ে আবারো ব্র্যকেটবন্দী হচ্ছে প্রয়াত এরশাদের জাতীয় পার্টি। নিজের নেতৃত্বাধীন অংশকে দলের মূল অংশ দাবী করে জাতীয় পার্টির নামে এই সম্মেলনের আয়োজনের জোর প্রস্ততি চলছে রওশন শিবিরে। যদিও নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অনুয়ায়ী জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। যিনি বর্তমানে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা। দলের প্রতিক লাঙ্গল বরাদ্ধ দেওয়ার ক্ষমতাও গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের হাতে।
তবে রওশন পন্থী অংশের নেতারা বলছেন, জিএম কাদেরকে দলীয় চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে রওশন এরশাদ নিজেই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন। দলের সম্মেলনের পর তারা দলীয় প্রতিক বেগম রওশন এরশাদের নামে বরাদ্ধ দেওয়ার জন্য নির্বাচন কশিশনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি দেওয়া হবে। যদি নির্বাচন কমিশনে আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া না যায়, তাহলে আইনি প্রক্রিয়া মাধ্যমে লাঙ্গল নিজেদের নেতৃত্বাধীন জাপার অংশে নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির ( একাংশ ) চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদের রাজনীতিক সচিব সুনীল শুভ রায়। ভোরের ডাককে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি এক এবং অভিন্ন। বেগম রওশন এরশাদই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। আগামী ৯ মার্চ জাতীয় সম্মেলনের পর আমরা নির্বাচন কমিশনকে সকল বিষয় অবগত করে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি দিবো । আশা করছি, আইনগত ভাবেই নির্বাচন কমিশন আমাদের চেয়ারম্যানের নামেই লাঙ্গল প্রতিক বরাদ্ধ দেবে।
এদিকে বেগম রওশন এরশাদ পন্থী হিসেবে পরিচিত জাপা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির সম্মেলনে রাজধানীতে এরশাদ সমর্থকদের ব্যাপক শোডাউন করা হবে। দেশের প্রায় সকল জেলা উপজেলা থেকেই জাতীয় পার্টির হাজার হাজার নেতাকর্মী কাউন্সিলর ও ডেলিগেট হিসেবে সম্মেলনে অংশ নেবেন।
এ বিষয়ে সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সম্মেলনটা জাতীয় পার্টির ইতিহাসে একটা টার্নিং পয়েন্ট হবে। এর মাধ্যমে পার্টি ঘুরে দাঁড়াবে। ভোটে আমাদের যে বিরাট ক্ষতি হয়েছে, সেটা কাটিয়ে নতুন পরিকল্পনায় আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। সারাদেশে থেকে সাড়া পাচ্ছি। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো দল টিকে থাকতে পারে না জানিয়ে তিনি বলেন, কারও কাছ থেকে কোনো বাধা আসবে না। সম্মেলন বর্ণিল হবে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ন আহবায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির সম্মেলন হবে ঐতিহাসিক। ঐ সম্মেলন সফল ভাবে আয়োজনের জন্য সকল ধরণের প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। আশা করছি ,ঐ দিন ঢাকায় সারাদেশ থেকে এরশাদ সৈনিকদের ঢল নামবে। বাবলা আরো বলেন, জিএম কাদের এরশাদের আর্দশ থেকে যোজন যোজন দুরে সরে গেছে। দলকে ব্যাক্তি স্বার্থে পরিচালিত করে এরশাদের রেখে যাওয়া দলকে খন্ড বিখন্ড করে পার্টিকে একটি লিমিটেড ক্লাবে পরিনত করেছেন। আমরা বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিকে আবারো সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দাড় করাতে চায়। আমরা ৯ মার্চের পর একটি শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে রাজপথে সাধারণ মানুষের স্বার্থে নানামুখি কর্মসূচি দেবো। এর মধ্য দিয়ে জাপা আবারো সাধারণ মানুষের আস্থার রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে জাতীয় পার্টি।
রওশনপন্থী জাতীয় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুন ভোরের ডাককে বলেন, আগামী ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির রাজনীতির জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ । অত্যান্ত ঝাকজমকপূর্ণ ভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচেছ। সারাদেশ থেকে হাজার হাজার এরশাদ প্রেমিক জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী সমর্থকরা সম্মেলনে উপস্থিত হবেন। তাছাড়া এই সম্মেলন জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। বিরোধী দল হিসেবে রাজপথে জাতীয় পার্টি সক্রিয় ভুমিকা পালন করবে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, এই সম্মেলনকে সামনে রেখে নিজেদেরকে জাতীয় পার্টির মূল অংশ হিসেবে আর্বিভুত করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন রওশন পন্থীরা। বিগ বাজেটের পাশাপাশি জনস্রোত নামিয়ে রাজধানীতে ব্যাপক শোডাউন করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বিশেষ করে ঢাকা-৪ আসনের সাবেক সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু পন্থী জাপার নেতাকর্মীরা ঐ দিন রাজধানীতে শোডাউন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। এর পাশাপাশি ঢাকা-৬ আসনের সাবেক সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদও তার অনুসারীদের নিয়ে ব্যাপক জমায়েত করার জন্য ধারাবাহিত ভাবে প্রস্তুতি সভা করছেন।
ঢাকা মহানগরের উত্তর দক্ষিণের অধিকাংশ থানা থেকেই জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কাউন্সিলের অংশ নেবেন। এছাড়া ঢাকার পাশ্ববর্তি বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকেও জাতীয় পার্টির কর্মী সমর্থকরা দলে দলে সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপর দিকে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের মধ্যে যুব সংহতি, মহিলা পার্টি , ছাত্র সমাজ, ও ওলামা পার্টির নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্ততি নিচ্ছি।
তবে জিএম কাদেরপন্থিদের দাবি, এই সম্মেলন হালে পানি পাবে না। এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যখন তাদের (রওশনের) দলে কেউ যাবে, তখন দেখা যাবে। জাতীয় পার্টির নাম নিয়ে আরও ১০টি দল হতে পারে। এটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কাউন্সিল হলেও তাদের নিবন্ধন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এই সম্মেলন তিনি (রওশন এরশাদ) করতে পারেন না। এই সম্মেলন অবৈধ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest