বিদেশে মিশন পরিদর্শন নৈতিক দায়িত্ব মনে করছে সংসদীয় কমিটি

প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২

বিদেশে মিশন পরিদর্শন নৈতিক দায়িত্ব মনে করছে সংসদীয় কমিটি

অনলাইন ডেস্ক : এ মুহূর্তে সরকার বিদেশ ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করলেও শান্তিরক্ষা মিশনগুলো ঘুরে দেখাকে নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

 

করোনার আগে সেনাবাহিনীর টাকায় কঙ্গো গেলেও এখন কমিটির সদস্যরা কুয়েত, দক্ষিণ সুদান ও লেবানন পরিদর্শনে যেতে চান। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় এই পরিদর্শন কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। তবে এখন এসব দেশে যেতে তোড়জোড় শুরু করছে কমিটি। এমনকি সুপারিশও করেছে। আর সে সুপারিশের সবশেষ তথ্য জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

 

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে কমিটির ২০তম বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

এর আগের বৈঠকে কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ বিদেশে বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। বিদেশে এসব শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শন করলে তাদের সুযোগ-সুবিধা এবং সমস্যা নির্ধারণ সহজ হবে। পরিদর্শনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

 

তিনি কমিটিকে বলেন, কুয়েতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অনেক সদস্য কাজ করছেন। কুয়েত পুনর্গঠন (ওকেপি) এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দেখতে যাওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তারা হাজার হাজার মাইল দূরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষার দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনছেন।

 

সভাপতির জিজ্ঞাসার পরিপ্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি জানান, বর্তমানে কুয়েত ওকেপিতে সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ হাজার ৬৫ জন সদস্য নিয়োজিত আছেন।

 

কুয়েত ওকেপি সরেজমিন পরিদর্শনের প্রস্তাবের বিষয়ে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে একমত পোষণ করেন তিনি।

 

কমিটির সদস্য মো. নাসির উদ্দিন বলেন, কমিটির সপ্তম বৈঠকে কুয়েত পুনর্গঠন কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শনের সুপারিশ করা হয়। পরিদর্শনের জন্য প্রথমে কুয়েত, এরপর যথাক্রমে দক্ষিণ সুদান ও লেবাননের নাম প্রস্তাব করা হয়।

 

তিনি জানান, কমিটি কোন দেশের মিশন পরিদর্শন করবে সেটি নির্ধারণ করে থাকে সংসদীয় কমিটি। কিন্তু এবারের পরিদর্শনের ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ কর্তৃক আনমিস (দক্ষিণ সুদান) মিশন পরিদর্শনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রতিনিধিদলের নাম চেয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

 

মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ২০১৯ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি মনুস্কো (ডিআর কঙ্গো) শান্তিরক্ষা মিশন পরিদর্শন করেছিল। উক্ত সফরে কমিটির সভাপতিসহ পাঁচজন সদস্য এবং সাচিবিক সহায়তার জন্য জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের দুজন কর্মকর্তা ছিলেন। তাদের ব্যয় বহন করেছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

 

কমিটির সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ বলেন, কমিটি মূলত বিদেশে নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক কার্যক্রম এবং তাদের সুবিধা, অসুবিধা দেখার ব্যাপারে আগ্রহী। এখানে পরিদর্শন করার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন হতে হবে এমন কোনো বিষয় নেই। কমিটির পূর্ববর্তী বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথমে কুয়েত ওকেপিতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ সুদান এবং লেবাননে যাওয়া যেতে পারে।

 

মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ গোলাম কবির সই করা সুপারিশ বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন এলাকা পরিদর্শনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ফিল্ড মিশনসহ জাতিসংঘ সদর দপ্তরের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে ফিল্ড মিশনের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, হোস্ট কান্ট্রির অনুমোদন ইত্যাদি বিবেচনায় নিতে হয়। এসব দিক বিবেচনায় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৯তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠন পরিদর্শনের পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে সেনাসদর ও বাংলাদেশ মিলিটারি কমান্ড-বিএমসি সদর দপ্তর, কুয়েতের সমন্বয়ে একটি সফর পরিকল্পনা শিগগির পাঠানো হবে।