‘কেউ ঝাঁড়ু দিয়ে দৌড়ানি দিলে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরব’ মাহিয়া মাহি

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩

‘কেউ ঝাঁড়ু দিয়ে দৌড়ানি দিলে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরব’  মাহিয়া মাহি

বিনোদন ডেস্ক : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক প্রতীক) হিসেবে লড়ছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। নির্বাচনী এলাকায় মাহি এখন গণসংযোগে তুমুল ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। জনপ্রিয় এই নায়িকাকে এক পলক দেখতে তানোর-গোদাগাড়ীবাসী তার গণসংযোগে ভিড় করছেন। মাহি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোটারদের বুকে জড়িয়ে নিয়ে চাচ্ছেন দোয়া আর ভোট। ভোটাররাও তাকে দিচ্ছেন আশ্বাস। মাহি জয়ের ব্যাপারে এতটাই ডেডিকেটেড, তিনি বলেছেন, ‘আমাকে কেউ ঝাঁড়ু দিয়ে দৌড়ানি দিলেও আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করব।’

 

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর তানোরের উত্তর মুন্ডুমালা এলাকার নিজ বাসভবনে দৈনিক কালবেলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে এমন কথাই উচ্চারণ করেন। মাহির একান্ত এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কালবেলার রাজশাহী ব্যুরো প্রধান আমজাদ হোসেন শিমুল। কালবেলার পাঠকদের জন্য পুরো সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

 

কালবেলা : তানোর-গোদাগাড়ীতে ভোটের পরিস্থিতি কেমন দেখছেন?

 

মাহিয়া মাহি : ভালো আলহামদুলিল্লাহ। মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। সাধারণ জনগণের যে রেসপন্স সেটি খুব চোখে পড়ার মতো। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

 

কালবেলা : আপনি সিনেমার মানুষ। আস্তে আস্তে রাজনীতিতে আসা এবং এখন রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করছেন, কো জার্নিটা আসলে কীভাবে হলো?

 

মাহিয়া মাহি : আমি সিনেমার মানুষ। তবে রাজনীতির জার্নিটাতে অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে। কারণ, যে মানুষগুলো টিভি স্কিনে আমাকে দেখেছে সেই মানুষগুলোর কাছাকাছি আমি যেতে পারছি। তাদের ভালোবাসার হাতগুলো আমার মাথার ওপর রাখতে পারছি। বয়স্ক-বৃদ্ধ যারা আছেন, আমার দাদি-নানি টাইপের তারা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে, তারা এখানে পরিবর্তন চায়। তো এটি আসলে অনেক ভালো লাগার একটি জায়গা।

 

কালবেলা : আপনি তো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তো স্থানীয় আওয়ামী লীগের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

 

মাহিয়া মাহি : স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাড়া তো পাচ্ছি ভালো। সবাই তো আসলে ওপেন… করতে পারে না। বিকজ একটি দলীয় বিষয় আছে। কিন্তু আমার মনে হয় একদম কাছাকাছির মানুষও আসলে পরিবর্তন চায়।

 

কালবেলা : পদধারী আওয়ামী লীগের নেতা কেউ আপনার সঙ্গে আছে কি না?

 

মাহিয়া মাহি : হ্যাঁ আছে। প্রকাশ্যে ওভাবে কেউ না থাকলেও আত্মিকভাবে অনেকেই আছে।

 

কালবেলা : ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আপনি কী ধরনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন?

 

মাহিয়া মাহি : ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তারা যে পরিবর্তনটা চায়, তারা যে শাসককে চায়, তারা যে ভালোবাসার মানুষ চায় আমি তেমনটিই হওয়ার চেষ্টা করব। আসলে মানুষ চায় তাদের একটা সেবক পাশে আসুক-বসুক, তাদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা বলুক। আমি আসলে এটারই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি তাদের কাছাকাছি থাকব সবসময়। আরেকটি হচ্ছে সারা বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে সেই উন্নয়নের ধারাটি আমি অভ্যাহত রাখব, কন্টিনিউয়েশন যাতে এখানেও থাকে। আর বরেন্দ্র অঞ্চলের বড় যে সমস্যা তা হলো পানির সমস্যা। এই পানির সমস্যাটা নিয়ে আমি কাজ করব।

 

কালবেলা : বরেন্দ্র অঞ্চলের পানি বণ্টন পদ্ধতিটি ডিপ টিউবওয়েলের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কিন্তু এখানেও যে দলীয়করণ সেটি সম্পর্কে আপনি কী জানেন?

 

মাহিয়া মাহি : হুম, আমি তো বললাম। এই অঞ্চলের মানুষ একটি খাঁচার ভেতরে বন্দি। তাদের কোনো বাক-স্বাধীনতা নেই। তাদের কোনোকিছু সমস্যা হলে কাউকে বলার নেই। তো এই ডিপ টিউবওয়েলও সেইম। তার (ওমর ফারুক চৌধুরী) যে স্বজনপ্রীতি এবং তার যে একটা গণ্ডি, এই গণ্ডি থেকে মানুষ আসলে বাঁচতে চায়।

 

কালবেলা : আপনি কি মনে করছেন বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী এলাকায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন? আপনার কী মনে হয়- কেন উনি জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন?

 

মাহিয়া মাহি : উনি মানুষকে সম্মান করেন না। আপনার মাধ্যমেই আমি দেখেছি, তিনি শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন, শিক্ষককে সম্মান করেন না। কোনো একটা মিটিংয়ে ৫০ জন শিক্ষক ছিলেন, জুতা ছুড়ে মেরেছেন। কোথাও কোথাও দেখলাম, নেতাকর্মীর মোবাইল আছাড় মেরে ভেঙে ফেলা হয় সবার সামনে। আসলে তারা কাউকে সম্মান করে না। এসব কারণেই তো আমার মনে হয় জনপ্রিয়তার একটা বিষয়…। আর ওই যে বললেন, ডিপ টিউবওয়েল। এই এলাকা কৃষিবান্ধব এলাকা। এই এলাকার বিরাট অংশ কৃষক। তারা যদি এই কৃষি ব্যবস্থা ভালো না পায়, যদি তারা দেখেন যে, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে একটা সিন্ডিকেট হয়ে আছে। এখান থেকে তারা কষ্ট পাচ্ছেন। এসব কারণেই তিনি জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন।

 

 

সূত্র, কালবেলা