হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ প্রার্থীদের ৮ তথ্য চেয়েছে ইসি

প্রকাশিত: ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০২৩

হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ প্রার্থীদের ৮ তথ্য চেয়েছে ইসি

নিউজ ডেস্ক : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা হলফনামায় বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে হবে। এছাড়াও মামলা ও পেশার বিবরণসহ প্রার্থীদের দিতে হবে ৮টি তথ্য।নির্বাচন কমিশন (ইসি) এক নির্দেশনায় রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বিষয়টি প্রার্থীদের মাঝে প্রচারের জন্য বলেছে।

 

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি সকল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।এতে বলা হয়েছে, প্রার্থীর অর্জিত সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটসহ উত্তীর্ণ পরীক্ষার নাম দিতে হবে। হলফনামায় এ ঘর খালি রাখা যাবে না।

 

কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলে নিরক্ষর, স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন, প্রাসঙ্গিক তথ্য উল্লেখ করতে হবে। তবে বাস্তবে এমনও হতে পারে, যে সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট কোনো প্রার্থীর কাছে নেই। সেক্ষেত্রে সর্বশেষ যোগ্যতা এমএ হলেও সময়াভাবে তা সংগ্রহ করতে না পারায় বিএ পাশের সার্টিফিকেট সংযুক্ত করা হলো- এভাবেও তথ্য দেওয়া যেতে পারে।

 

অতীতে প্রার্থীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোনো ফৌজদারী মামলার রেকর্ড আছে কিনা, থাকলে তার রায় কী ছিল, তাও উল্লেখ করতে হবে। প্রার্থী সকল তথ্য প্রদান করবেন এটাই প্রত্যাশিত। তবে অতীতের মামলা সংক্রান্ত, বিশেষ করে অনেক পুরোনো হলে, বিশদ তথ্য প্রার্থীর কাছে নাও থাকতে পারে।

 

তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়ে গেছে বা খালাস পেয়েছেন অথবা অনেক আগে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এমন ক্ষেত্রে বিশদ তথ্য না দিতে পারার কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে না। তবে দণ্ডিত হয়ে থাকলে এবং সহজলভ্য তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে উল্লেখ না করার বিষয় প্রমাণিত হলে মনোনয়নপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।পেশার বিবরণী বিস্তারিতভাবে দিতে হবে।

 

এছাড়া আয়ের উৎস দিতে হবে। এক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন এবং মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রদত্ত অনুরূপ তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সমীচীন।

 

প্রার্থীর নিজের ও অন্যান্য নির্ভরশীলদের পরিসম্পদ ও দায়-এর বিবরণী উল্লেখ করতে হবে হলফনামায়। এজন্য প্রার্থীর টিআইএন নম্বর, সম্পদ ও দায় এবং বাৎসরিক আয় ও ব্যয়ের বিবরণী ফরম-২১ ও তার সম্পদ বিবরণী সম্বলিত সর্বশেষ দাখিলকৃত আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ সংক্রান্ত কাগজপত্র ব্যতীত মনোনয়নপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।

 

আয়কর রিটার্নের কপি গেজেটেড কর্মকর্তাআয়কর আইনজীবীর মাধ্যমে প্রত্যয়ন করলেও গ্রহণযোগ্য হবে।এর আগে জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন কিনা এবং থাকলে ভোটারদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি এবং এর কি পরিমাণ অর্জন সম্ভব হয়েছিল এ সংক্রান্ত তথ্যাদি (ইতোপূর্বে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলেই কেবল এটি প্রযোজ্য হবে। কোনো প্রতিশ্রুতি না থাকলে ‘প্রতিশ্রুতি নেই’ অথবা ‘অৰ্জন নেই’ ইত্যাদি লেখা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে) দিতে হবে।

 

কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে প্রার্থী কর্তৃক একক বা যৌথভাবে বা প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীল সদস্য কর্তৃক গৃহীত ঋণের পরিমাণ অথবা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা পরিচালক হওয়ার সুবাদে ওই সব প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্যও সঠিকভাবে দিতে হবে।

 

এছাড়া নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের উদ্দেশ্যে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম ও নম্বর মনোনয়নপত্রের নির্ধারিত স্থানে লিপিবদ্ধ করতে হবে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রদত্ত হলফনামার নমুনা অনুসারে তিনশত টাকা বা সর্বশেষ ধার্যকৃত মূল্যমানের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অথবা যেক্ষেত্রে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প দুষ্প্রাপ্য হয় সেক্ষেত্রে সমপরিমাণ টাকার কোর্ট ফি সংযোজন করে নোটারি পাবলিক বা ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে হলফনামা সম্পাদন করে সংযুক্ত করতে হবে।

 

তথ্য দানের সুবিধার্থে প্রয়োজনে অতিরিক্ত কাগজ সংযুক্ত করা যাবে। যদি কোনো প্রার্থী হলফনামা দাখিল না করেন বা দাখিলকৃত হলফনামায় কোনো অসত্য তথ্য দেন বা তথ্য গোপন করেন বা হলফনামায় উল্লিখিত তথ্যের সমর্থনে যথাযথ প্রমাণাদি দাখিল না করেন তাহলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা যাবে।দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।