প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক : ৫ই আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সরকার পতনের পর থেকেই লাপাত্তা। আওয়ামী লীগ পতনের পর অনেকেই বলেছিলেন শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে ওবায়দুল কাদের পালিয়েছেন আবার কেউ কেউ বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের দেশেই রয়েছেন। তবে সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রকাশিত সংবাদের বরাতে জানা যায় সিলেট কিংবা ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে চলতি নভেম্বর মাসেই দেশ ছাড়েন এই নেতা।
জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পাঠকদের সুবিধার্থে হুবুহু প্রকাশ করা হল : আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই ধারণা, শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে রোববার দলীয় কর্মসূচি ঘোষণার পর ওবায়দুল কাদের নিজের দায়িত্ব ও এক ধরনের ঝুঁকি এড়াতে তড়িঘড়ি করে পালিয়ে গেছেন। এতে খুব একটা সুবিধা পাচ্ছেন না তিনি। কেননা ভারতেও তাঁকে আত্মগোপনেই থাকতে হবে। দেশটিতে আগে থেকে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের রোষানল থেকে বাঁচতে সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভারতে লুকিয়ে আছেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন। তাদের ভাষায়, ক্ষুব্ধ নেতারা ওবায়দুল কাদেরকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন। তাঁর সঙ্গে দেখা হলে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক কিছুই ঘটতে পারে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ মাঝারি পর্যায়ের অনেক নেতা ভারতে পালিয়েছেন। তাদের কয়েকজন গতকাল সোমবার সমকালকে জানিয়েছেন, ওবায়দুল কাদের ভারতের কলকাতায় পৌঁছেছেন বলে তারা শুনেছেন। তবে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি। টেলিফোনেও কথা হয়নি।
নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, ওবায়দুল কাদের শুক্রবার শেষ রাতে সিলেট কিংবা ময়মনসিংহ সীমান্ত হয়ে অবৈধ পথে ভারত যান। পাসপোর্ট ছাড়া বিমানে দেশ ছাড়ার সুযোগ না থাকায় তাঁকে শুক্র ও শনিবার সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করতে হয়েছে। পরে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে রোববার ভারতের অভ্যন্তরীণ পথে চলাচলকারী বিমানে করে তিনি কলকাতা যান। স্ত্রী ইশরাতুন্নেসা তাঁর সঙ্গে ভারত যাননি।
ভারতে যাওয়ার আগে ওবায়দুল কাদের আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে রাজধানীর গুলশান থেকে যশোরে যান। সেখানে তিনি তাঁর নিকটাত্মীয় প্রভাবশালী একজন সরকারি কর্মকর্তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নিয়ে যে কোনো মুহূর্তে ভারতে ঢোকার অপেক্ষায় থাকেন। এর আগে তিনি গুলশানে একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। সেখানে আগে থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না। পরে ২৪ আগস্ট পান্না ভারতীয় সীমান্তে মারা যান।
এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সর্বশেষ অবস্থান জানার জন্য গত দু’দিন তাঁর মোবাইলের দুটি নম্বরে দফায় দফায় ফোন করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এমন কি হোয়াটসঅ্যাপও ছিল বন্ধ। আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদেরবিরোধী নেতাদের (ভারতে আত্মগোপনে থাকা) কাছে দলের সাধারণ সম্পাদকের অবস্থান জানতে চাইলে প্রায় সবাই একবাক্যে বলেছেন, তিনি কলকাতায়। তবে রোষানল এড়ানোর জন্য আত্মগোপনে আছেন।
আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা দলের সাধারণ সম্পাদকের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য ওবায়দুল কাদেরকেই দুষছেন। এ জন্যই ভারতে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে নেতাদের দেখা হলে বিব্রতকর পরিস্থিতির শঙ্কা রয়েছে বলে জানান পলাতক কয়েকজন নেতা। ইতোমধ্যে রোষানলের শিকার হয়ে নাজেহাল হয়েছেন ভারতে পলাতক একজন সাবেক মন্ত্রী। তাঁর বাড়ি কুমিল্লায়। এ জন্যই ভারত থেকে ওবায়দুল কাদেরের দ্রুতই সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, সিঙ্গাপুর কিংবা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠান না থাকলে সংবাদ সম্মেলন কিংবা বিবৃতি দিয়ে প্রতিদিনই নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু ছাত্রলীগকে জড়িয়ে প্রশ্নবিদ্ধ মন্তব্য করার পর তিনি গুটিয়ে যান। সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থান হারান। এর ফলে তাঁর বদলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ ও আফম বাহাউদ্দিন নাছিমের নামে সাংগঠনিক বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও দলীয় নেতার। তিনি পারতপক্ষে কারও ফোন ধরতেন না। ফলে নেতাকর্মীর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়েছিল। আবার কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতারা সাংগঠনিক বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের দুর্ব্যবহারের মুখোমুখি হতেন। বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদেরের ‘খেলা হবে’ ঘোষণা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরাও হাস্যরস করতেন। অবশ্য ‘খেলা হবে’– এই ঘোষণা দিয়ে ওবায়দুল কাদের এখন নিজেই ‘নিখোঁজ’।
দামি ঘড়ি ও কোট-টাই ব্যবহারে অভ্যস্থ সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিয়মিত নেতিবাচক ট্রল চলত। এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। দলের নেতাকর্মীর কাছে চলনে-বলনে অন্য রকমের নেতা ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক এক সভায় ‘কাউয়া’ শব্দ উচ্চারণ করেও ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। তিনি গত বছরের ২৯ জানুয়ারি বলেছিলেন, ‘আমরা এই দেশে জন্মেছি, এই দেশে মরব, পালাব না। কোথায় পালাব! পালাব না। প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব।’ অথচ এখন তিনি পালিয়ে আছেন। তাঁর প্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে থেকেও উধাও হয়েছেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest