সোহেল রানার যে দৃঢ়তাকে সম্মান জানালেন রুনা লায়লা

প্রকাশিত: ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২৩

সোহেল রানার যে দৃঢ়তাকে সম্মান জানালেন রুনা লায়লা

বিনোদন ডেস্ক : তার সুরের আবীর শ্রোতার মনে বইয়ে দেয় প্রশান্তির হাওয়া। বৈচিত্রময় আর মন মাতানো গানে গানে কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই কণ্ঠশিল্পী বিলিয়ে এসেছেন নানান রঙের অনুভূতি।

 

তার সুর সমুদ্রে ভেসে যেতে ইচ্ছে করে সব বয়সী শ্রোতারই। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম গুণী এবং জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লা।
তাকে বলা হয় গানের পাখি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। একবার রুনা লায়লা বয়কট হয়েছিলেন। কণ্ঠশিল্পী সংস্থা তাকে বয়কট করেছিল। কি কারণে বয়কট হয়েছিলেন তা জানা যায়নি। তবে সেই বয়কট প্রসঙ্গে পুরনো অভিজ্ঞতা ভাগ করেছেন সবার সঙ্গে। যা তার ভক্তদের হতবাক করেছে।

 

সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন এই প্রখ্যাত শিল্পী। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢালিউডের ড্যাশিং হিরোখ্যাত প্রখ্যাত অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। এই দুই তারকার দীর্ঘ দিনের পরিচয়, কাজের সম্পর্ক আছে এ কথা সবাই জানেন। এমনকি সোহেল রানার সহকর্মী নায়ক আলমগীরের সহধর্মিণী হিসেবে রুনা লায়লার সঙ্গে সোহেল রানার পারিবারিক সম্পর্ক থাকাটাও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে রুনা লায়লা নিজের জীবনের এমন অভিজ্ঞতার কথা জানালেন, যা শুনে সোহেল রানার সঙ্গে তার সম্পর্কের অন্যরকম এক রসায়নের কথা জানা যায়।

 

পুরনো কথা স্মরণ করে মাসুদ পারভেজ সোহেল রানাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুনা লায়লা বলেন, আমি পাকিস্তান থেকে আসার পরপর ১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে কোনো একটা ইস্যু ধরে তখনকার কণ্ঠশিল্পী সংস্থা আমাকে বয়কট করল। তারা বলল যে, আমার সঙ্গে তারা কেউ গাইবে না। যে মঞ্চে রুনা লায়লা গাইবে সেই মঞ্চেও তারা কেউ যাবে না। এমনকি যে কম্পোজার, গীতিকার, সুরকার, স্টুডিও, লেবেল কিংবা বাদ্যযন্ত্রীরা আমার সঙ্গে কাজ করবে তারা তাদেরও বয়কট করবে। মানে সম্পূর্ণ রূপে আমাকে বয়কট করা হলো। এই অবস্থা চলাকালেই একদিন সোহেল রানা সাহেব আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, আমি একটি সিনেমা প্রযোজনা করছি, আপনাকে আমার সিনেমাতে একটি ডুয়েট গান গাইতে হবে।

 

আমি তো রাজি, কিন্তু বললাম যে আমার সঙ্গে তো কেউ গাইবে না, মিউজিশিয়ানরাও বাজাবে না। তখন তিনি বললেন, চিন্তা নেই, আমি আছি আপনি আসুন। স্টুডিওতে রেকর্ড করতে গিয়ে যখন আমার সহশিল্পী এলেন, আমাকে দেখেই খুব বিরক্ত হয়ে বললেন, উনি আছে আমাকে আগে বলেননি কেন? আমি তো উনার সঙ্গে গাইতে পারব না। এই বলে চলে গেলেন। আমি সোহেল রানাকে বললাম, এখন কী করবেন? উনি বললেন, আমার আর কোনো শিল্পীর দরকার নেই। আমি প্রযোজক আমি যাকে দিয়ে চাইব, তাকে দিয়েই গান করাব। আমি কি কারও কাছে জিম্মি নাকি?

 

আপনি দুজন শিল্পীর গানই একা গেয়ে দেন। আমি সেভাবেই ভয়েসটা একটু বদল করে দুটি চরিত্রের জন্য একাই গেয়ে চলে এলাম। এই ঘটনা আগে কখনো বলা হয়নি। আজ সবার সামনে ঘটনাটি বলে সোহেল রানা সাহেবের সেই দৃঢ়তাকে আরেকবার সম্মান জানালাম। তিনি আমাকে সেই সময় যে সাপোর্ট করেছেন তার জন্য আমার কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।