প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা শ্রমিকদের মতবিনিময় শুরু

প্রকাশিত: ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা শ্রমিকদের মতবিনিময় শুরু

নিউজ ডেস্ক : চায়ের রাজ্যে আজ এক ঐতিহাসিক দিন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধান অবহেলিত চা শ্রমিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন। শুনছেন তাদের দুঃখগাথা কিংবা প্রত্যাশার কথা।

 

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকার গলফ মাঠ থেকে চা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে মতবিনিময় শুরু করেন।

 

এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম, জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ, সিলেট জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেট মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিবসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ শনিবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের সিলেটের চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেন। এসময় সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ থেকে চা শ্রমিকরাও যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। এ নিয়ে আজ সকাল থেকেই সিলেটের চা শ্রমিকদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। শ্রমিক নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবিদাওয়া জানানোর বিষয় ঠিক করেছেন এবং এই আয়োজন সফল করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুপুরের মধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে সিলেটে কাদের সঙ্গে সরসারি কথা বলবেন তা জানা যায়নি। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৫ জন চা শ্রমিক নেতার নাম দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। এ তালিকা থেকে এক বা একাধিকজনের নাম ডেকে তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি সিলেটভিউ-কে নিশ্চিত করেছেন চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা। এই তালিকায় তাঁরও নাম আছে বলে জানান তিনি।

 

অনুষ্ঠান প্রস্তুতির অংশ হিসেবে লাক্কাতুরা চা বাগানের গলফ মাঠে শামিয়ানা টানিয়ে অনুষ্ঠানস্থল সাজানো হয়েছে। স্থানীয় অতিথিরা স্বাচ্ছন্দ্যে বসতে পারেন সে জন্য অনুষ্ঠানস্থলের চারদিকে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ফগার মিশিন দিয়ে মশকনিধন ওষুধ স্প্রে করা হয়েছে। এছাড়াও সিসিকের উদ্যোগে রাখা হয়েছে ‘ভ্রাম্যমাণ পাবলিক টয়লেট’।

উল্লেখ্য, দৈনিক মজুরি ১২০ থেকে ৩০০ টাকায় উন্নীতকরণের দাবিতে সিলেটসহ সারা দেশের চা শ্রমিকরা টানা ১৯ দিন আন্দোলন করেছেন। গত ৮ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে গত ২২ আগস্ট শ্রমিকদের একাংশ আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফিরলেও আরেক অংশ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিলেন। চা শ্রমিকদের টানা ধর্মঘটে সারাদেশের বাগান থেকে চা-পাতা উত্তোলন, কারখানায় প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদন বন্ধ থাকে। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দেশের চা শিল্প। এ অবস্থায় গত ২৭ আগস্ট শনিবার বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বৈঠকে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি আনুপাতিক হারে তাদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হবে। সবমিলিয়ে দৈনিক মজুরি হবে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা।

 

প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দেওয়ার পর ২৮ আগস্ট থেকে সিলেট বিভাগের সকল বাগানের চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।