প্রকাশিত: ৪:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২২
অনলাইন ডেস্ক : বিটিআরসির ওয়েব সাইটের ২০২২ সালের মার্চ মাসের হিসেবে আমাদের দেশে মোবাইল ব্যববহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজারের বেশি এবং মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ৩৯ লাখ আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ১ লাখ। সম্প্রতি জনশুমারি ও গৃহগণনায় জানা গেছে, দেশের লোক সংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন। এবার ভাবুন জনসংখ্যার থেকে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্য কতো বেশি।
দেশে গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, টেলিটক নামক চারটি মোবাইল আপারেটর কোম্পানি রয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন সেট স্যামসাং, অপো, ভিভো, টেকনো, সিম্ফনি, লাভা, শাওমি, রিয়েলমি মোবাইলগুলি দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। বতর্মানে চাহিদার মোট ৯০ শতাংশ মোবাইল সেট দেশেই উৎপাদন হচ্ছে।
এবার ভাবুন আপনার হাতে আপনার প্রিয় একটি মোবাইল সেট রয়েছে। যাতে আপনার গৃরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য, ছবি, লগইন করা সোস্যাল মিডিয়া, ই-মেইল রয়েছে। হঠাৎ আপনার প্রিয় এই মোবাইলটা যে কোনভাবেই মিসিং হয়ে গেলো। বুঝতেই পারছেন এখন আপনি কতো ধরণের বিপদের ঝুঁকিতে আছেন। একজন সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি বহুপ্রকার ভয়াবহ বিপদের বাস্তব কাহিনী বর্ণনা করতে পারি। যা আমার সাইবার অপরাধ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। আমি সেদিকে যাবো না। আমি বলবো আপনার হারানো/মিসিং মোবাইল কিভাবে ফিরে পেতে পারেন।
বর্তমান যুগে আমারা ছোট-খাটো প্রায়ই সব বিষয়েই অজানাকে জানার জন্য গুগলের আশ্রয় নিয়ে থাকি। হারানো মোবাইল কিভাবে পাবো লিখে গুগল সার্চ করুন। দেখবেন অনেক সংবাদ/লেখা আপনার সামনে এসে হাজির। তাতে রয়েছে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা। আপনি সারা দিন ঐ দিক নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করলেন ,কাজের কাজ কিচ্ছু হলো না। গুগল থেকে পেয়ে এই ঠিকানায় (https://www.google.com/android/find) গিয়ে চেষ্টা করলেন, আপনার হারানো মোবাইলে লোকেশন দেখালো, কিন্তু মোবাইলের লেকেশন দেখে আপনার লাভ কি? আপনার মোবাইল পেলেন না। গুগল জানালো মোবাইল খুঁজে না পেলে দ্রুত একটি পাসওয়াড দিয়ে লক করে দিতে। উদ্ধার করার পরে আপনার পাসওয়াড দিয়ে সেট আনলক করে ব্যবহার করতে পারবেন।
এবার শুনুন, আপনার বা আপনাদের মোবাইল সেট মিসিংহলে নিকটস্থ থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি করুন। থানাগুলোতে মিসিং মোবাইল সংক্রান্তে জেনারেল ডায়েরি করতে কারো কোন সুপারিশ লাগে না বা টাকা-পয়সা লাগে না। থানায় নিয়োজিত ডিউটি অফিসারের কাছে গিয়ে আপনি এই জেনারেল ডায়েরি অনায়াসে রুজু করতে পারবেন। ওই জিডিতে আপনার যে সকল তথ্য দিতে হবে তাহলো কোথায় কখন কোন তারিখে কোন স্থানে মোবাইল সেট হারিয়েছেন।
মোবাইলে ব্যবহৃত সিম নম্বর, আপনার মোবাইলের ১৫ ডিজিটের IMEI (International Mobile Equipment Identity) নম্বর। মোবাইলে IMEI নম্বর *#06# দিয়ে দেখা যায় । এই IMEI নম্বর মোবাইল কেনার রশিদে পাবেন, মোবাইলে সেটের বাক্সে পাবেন। IMEI নম্বর না পেলেও পুলিশ অফিসার আপনার মোবাইলের ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বর সংগ্রহ করতে পারবেন যদি আপনার ব্যবহৃত মোবইলের সীম নম্বর উল্লেখ করে দেন। আপনার জিডি রুজু করা শেষ । এবার আপনার করা জেনালে ডায়রী একজন পুলিশ অফিসারের নামে তদন্ত বা খুঁজে পাওয়ার জন্য এন্ডোস করা হবে। পুলিশ অফিসারের নাম এবং মোবাইল নম্বর আপনার জিডির উপরে লেখা থাকবে। তার সাথে যোগাযোগ রাখুন।
পুলিশ অফিসার যদি চেষ্টা করেন এবং আপনার মিসিং হওয়া মোবাইল সেট যদি কোন সীম দিয়ে ব্যবহার করা হয় আমি নিশ্চিত আপনার মিসিং মোবাইল আপনার হতে একদিন ফিরে আসবেই। তবে হ্যাঁ ,আপনার হারানো মোবাইল লক করে দিবেন না। পাসওয়াড দিয়ে আপনার মোবাইল লক করে দিলে ঐ মিসিং মেবাইলটার ব্যবহারকারী বাইপাস করে মোবাইলের IMEI নম্বর পরিবর্তন করলে সেটি আর ফিরে পাবেন না। এই IMEI নম্বর দিয়ে পুলিশ অফিসার আপনার মিসিং হওয়া মোবাইল সেট ফিরিয়ে আনবেন। IMEI নম্বরটি হারানো মোবাইল অনুসন্ধানের প্রধান হাতিয়ার এবং প্রথম পদক্ষেপ। জিডির অনুসন্ধানকারী পুলিশ অফিসার আপনার মোবাইলের IMEI নম্বর র্সাচ এর ব্যবহৃত মোবাইল সীম নম্বর এবং বি পার্টির মোবাইল সীম নম্বর তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য এবং অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ব্যবহারকারীকে সণাক্ত করে আপনার মোবাইল উদ্ধার করে দেন। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে মিসিং মোবাইল ব্যবহারকারীকে আটক করে কোটে সোপদ্দ করতে পারেন।
একটি মিসিং মোবাইল উদ্ধারের পরে দেখা যায় মিসিং মোবাইল ব্যবহারকারী একজন ইনোসেন্ট ব্যক্তি। তিনি কোন অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে বা কোন মোবাইলের দোকান থেকে বা কোন ব্যক্তির কাছ থেকে কিনেছেন। এই সব অনলাইন মার্কেট প্লেস মোবাইল ব্যান্ডের নকল বাক্স, রশিদ তৈরি করে বিক্রয় করে আর কোন কোন প্রতারক ফেক জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ক্রেতাকে সরবরাহ করে মিসিং মোবাইল সেট বিক্রি করে। পুলিশ যখন এই মিসিং মোবাইলগুলি উদ্ধার করে প্রকৃত প্রাপকের কাছে বুঝিয়ে দেন তখন ইনোসেন্ট লোকগুলোর চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। তাই একজন সাইবার অপরাধ তদন্তকারী কর্মর্কতা হিসেবে পাঠকদের বলতে চাই অনলাইন মার্কেট প্লেস থেকে বা স্বল্পপরিচিত/অপরিচিত খারাপ লোকদের কাছ থেকে কখনও ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত কোন মোবাইল সেট কিনে প্রতারিত হবেন না। আত্মমর্যাদা নিয়ে সমাজে বসবাস করুন।
লেখক: পুলিশ ইন্সেপেক্টর ও সাইবার আপরাধ তদন্তকারী, সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিহগশন বিভাগ, ডিএমপি
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest