প্রকাশিত: ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ, মে ৫, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক : তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির গণপদযাত্রায় যোগ দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘পানি কখনো মারণাস্ত্র হতে পারে না। পানি কখনো যুদ্ধাস্ত্র হতে পারে না। একমাত্র সারা বিশ্বে ভারত দেখিয়ে দিল, পানিকে তারা মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। পানিকে তারা যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। কতটুকু অমানবিক হলে তারা এ কাজটি করতে পারে!’
আজ রোববার বিকেলে রংপুর নগরের শাপলা চত্বরে গণপদযাত্রা শুরুর আগে এক সমাবেশে মির্জা আব্বাস এ কথা বলেন। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি। এতে রংপুর ছাড়াও তিস্তাপারের জেলা কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও নীলফামারী বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মির্জা আব্বাস সিলেটের গুমের শিকার বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আরও একজন মানুষকে স্মরণ করি, তিস্তাপারের ভাইদের সামনে, সে আমার আরেক পরম স্নেহময় ইলিয়াস আলীকে। এই ইলিয়াস আলীকে গুম ও হত্যা করা হলো শুধু সুরমার পানি নিয়ে সে প্রতিবাদ করেছিল, এ জন্য। আপনাদের সামনে দুলুকে (আসাদুল হাবিব) সাবধান করব, কারণ ভারত কখনো এ ধরনের প্রতিবাদী মুখ সহ্য করতে পারে না।’
‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব (দুলু)। গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি আসাদুল হাবিবের ডাকে রংপুরের ৫ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তাপারের ৫ জেলার ১১টি পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টা টানা অবস্থান কর্মসূচি নেয় বিএনপি।
গণপদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে সারা বাংলাদেশেকে শুধু তিস্তা নয়, সারা বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা তিস্তা বন্ধ করেছে, ফারাক্কা বন্ধ করেছে, সুরমা-কুশিয়ারা বন্ধ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই পানির ন্যায্য হিস্যা ইনশা আল্লাহ আমরা আদায় করে ছাড়ব।’ হাসিনার মতো এক স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশে না এলে অনেক আগেই তিস্তার পানির হিস্যা আদায় করা যেত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনকে একটি ‘অহিংস’ প্রতিবাদ উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একটি অহিংস দাবি সারা বিশ্বের সামনে আজ উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ব জানতে পারবে যে ভারত আমাদের পানির অভাবে কী কষ্ট দিচ্ছে। আমরা চোখের পানিতে কারও আছে কিছু চাইব না। আমরা ভিক্ষা চাই না, হিসাবের পাওনা চাই। আমাদের হিসাবের পাওনা দিতে হবে। যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সে আন্দোলন থামবে না।’
বিএনপি একটি সরকারের অপেক্ষায় আছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শুধু আমরা একটা সরকারের অপেক্ষায় আছি, যে সরকার আমাদের দেশের মানুষের কথা বুঝতে পারবে। মানুষের ভাষাকে বুঝতে পারবে। যে সরকার মানুষের দাবিদাওয়াকে পূরণ করার সক্ষমতা রাখবে।’
ভারতের কাছে বাংলাদেশের অনেক দেনা–পাওনা আছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ভুলে যাবেন না। অনেক কিছু আছে। আমাদের কাছে আপনাদের ট্রানজিট আছে, মোংলা ও চট্টগ্রাম পোর্ট (বন্দর) আছে। প্রয়োজনে আমরা হিসাব-কিতাব করব মনে রাখবেন। আমরাও হিসাব করব, যেখানে যেটা প্রয়োজন আছে সেটা না হলে আপনাদেরও ছাড়ব না। আমাদের তিস্তার পানি চাই, দিতে হবে। তিস্তার পানি চাই, দিতে হবে।’
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিবের সভাপতিত্বে রংপুর নগরের শাপলা চত্বরে বিকেল চারটায় সমাবেশ শুরু হয়। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির রংপুর বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, আমিনুল ইসলাম, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাপনী বক্তব্যে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব বলেন, ‘১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তাপারের ৫ জেলার মানুষকে নিয়ে ১১টি পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টা টানা অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। তখন ধারণা করা হয়েছিল, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবে। কিন্তু নানা অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। বড় বড় প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু দুই কোটি মানুষের জীবনরেখা তিস্তা মহাপরিকল্পনা দেওয়া হচ্ছে না। এটি আমাদের জীবন–মরণের সংগ্রাম। আমরা রংপুরের মানুষ বারবার বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। যত দিন দাবি আদায় হবে না, রাজপথ ছেড়ে আমরা যাব না।’
সমাবেশ শেষে শাপলা চত্বর থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর একটি গণপদযাত্রা বের হয়। গণপদযাত্রাটি প্রায় তিন কিলোমিটার গিয়ে জিলা স্কুল চত্বরে শেষ হয়।




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest