প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২৫
বালাগঞ্জ প্রতিনিধি : বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস সহ সমমনা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের দাওয়াত না দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান আঞ্জাম দিয়েছেন বালাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। জাতীয় এই দিবসে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচি বা অনুষ্ঠান পালিত হলেও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও উপজেলার সাংবাদিক সংগঠন বা কর্মরত সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ করার প্রয়োজন মনে করেননি দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এধরনের বৈষম্যমূলক আচরণে জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপেক্ষিত হওয়ায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মুজিবুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, দলীয় দাওয়াত পাইনি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র উপজেলার আমীর ডা. আব্দুল জলিল বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ প্রত্যাশা করিনি।
উপজেলা খেলাফত মসলিসের সভাপতিমাওলানা মিসবাহ উদ্দিন মিসলু বলেন, এরকম জাতীয় প্রোগ্রামে দাওয়াত না দেওয়া ফ্যাসিবাদী আচরণ। উপজেলা প্রশাসনের এহেন কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানাই।
সাংবাদিকরা বলছেন, স্বাধীনতা দিবস পালনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভায়ও সাংবাদিকদের ডাকা হয়নি। এছাড়া, জাতীয় দিবস ও বিভিন্ন দিবস ভিত্তিক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ করার প্রয়োজনবোধ করা হয়নি। ২৪মার্চ সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বালাগঞ্জে কয়েকটি প্রশাসনিক দপ্তর ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন, প্রশাসনিক দপ্তর প্রধান, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মত বিনিময় ও প্রতিবন্ধীদের মধ্যে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন। কিন্তু, জেলা প্রশাসকের এসব কর্মসূচি বা অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের তরফে সাংবাদিকদের জানানো হয়নি।
এবিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত কুমার চন্দ বলেন, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের দাওয়াত করার জন্য আমার অফিস স্টাফ ও একজন এনজিও কর্মীকে বলেছি দিয়েছি। হয়ত সময় মত তারা দাওয়াত পৌঁছাতে গড়িমসি করেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বালাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানগুলো নান্দনিক ফটোসেশনেই পূর্ণতা দেখানো হচ্ছে। কয়েক লাইন ক্যাপশনে দুই-চারটি ছবিযুক্ত করে স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে নির্দিষ্ট কয়েকজনকে ট্যাগ করেই অমুক অনুষ্ঠান তমুক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান দেয়া হচ্ছে। সরকারি অনুষ্ঠান, দাপ্তরিক বিভিন্ন কর্মসুচিসহ জন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট শ্রেণি-পেশার লোকজনের (যাদের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন) অংশ গ্রহণ করার কথা থাকলেও তাদেরকে না জানিয়ে তাদের অংশ গ্রহণ ছাড়াই অনেকটা দ্বায়সারা ভাবে সেসব অনুষ্ঠানের ইতি টানা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের অধিকাংশ অনুষ্ঠান এভাবেই পালিত হয়ে আসছে বলে সচেতন নাগরিকদের পর্যবেক্ষণে ওঠে এসেছে। পর্যবেক্ষণের বিষয়টি আমলে নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় এযাবৎকালের অনুষ্ঠানগুলোর বিবরণ ঘেঁটে দেখা গেছে-বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তজার্তিক দিবস ঘটা করে পালনের নির্দেশ থাকলেও ঢিলেঢালাভাবে সে সব কর্মসুচি পালন করা হচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি ও সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি নেই। এমনকি অধিকাংশ অনুষ্ঠানে চেয়ারগুলো ফাঁকা পড়ে থাকতেও দেখা গেছে।
উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ও সহযোগীতায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে- ব্যানারে বর্ণাঢ্য র্যালী, আনন্দ র্যালী বা শুভাযাত্রা লিখা থাকলেও উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে জনা কয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যানার ধরে করে ফটোসেশন করেই এসব অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করেন। আবার দেখা গেছে- একজন কর্মকর্তার রুমের ভিতরে দেয়ালে ব্যানার সাঁটিয়ে একটি টেবিলকে ঘিরে কয়েকজন বসে ছবি তুলে আলোচনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের ফেইসবুক আইডিতে তা পোস্ট দেয়া হচ্ছে। এনিয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকার নির্দেশিত অনুষ্ঠানগুলোতে কর্তা ব্যক্তিদের এমন দ্বায়হীন প্রবণতা দেখে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে- উপজেলা পরিষদের নিয়মিত মাসিক আইন শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় যে প্রস্তাবনাগুলো উত্থাপন করা হয় তার কোনোটা রেজুলেশনে তুলা হয় আবার কোনোটা তুলা হয়না বলে খোদ জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যে প্রস্তাবনাগুলো রেজুলেশনে স্থান পায় সেগুলোর কতটুকুই বা কার্যকর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে-এনিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।
এসব সভায় সরকারি দফতরগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকেন। এতে সমস্যা-সম্ভাবনা, উন্নয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা বা সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামীম আহমদ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানগুলোর চিত্র দেখলেই সংশ্লিষ্টদের দ্বায়হীন মনোভাবের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ভবিষ্যতে উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের অনিয়ম-অসঙ্গতি ও এমন দ্বায়সারা মনোভাব পরিহার করা উচিত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত কুমার চন্দ বালাগঞ্জে যোগদানের পর সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন। এসময় বিগত দিনে উপজেলা প্রশাসনের অনিয়ম-অসঙ্গতি ও দ্বায়হীন মনোভাবের বিষয়টি সাংবাদিকরা আলোচনায় আনেন। এসব অসঙ্গতি পরিহারে তিনি আশ্বস্থ করলেও এখনো সব কিছু আগের মতই তাদের ইচ্ছে মাফিক ফ্রি-স্টাইলে চালাচ্ছেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest