সুনামগঞ্জে বন্যায় এক হাজার গ্রাম প্লাবিত, বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৪

সুনামগঞ্জে বন্যায় এক হাজার গ্রাম প্লাবিত, বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর

সিলেট২৪এক্সপ্রেস ডেস্ক : প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল। সুনামগঞ্জ শহরে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সুরমা নদীর পানি জেলার প্রতিটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

 

সুনামগঞ্জের কাশিপুর গ্রামে বাড়ি-ঘর ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে নদী তীরবর্তী বেশকিছু গ্রাম ও বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সুরমা নদীর বাঁধ ভাঙ্গনে মিশে গেছে সুনামগঞ্জে বেশ কিছু বাড়ী ঘর । কাশিপুর গ্রামের নূর আলী জানান, আকস্মিক বন্যায় রাতে আঁধারে আমার বসতভিটার নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামের রহিম মিয়া বলেন হঠাৎ বন্যা আসতে আমাদের জসিম মিয়া ও নূর আলীসহ অনেকের বসতভিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

সুনামগঞ্জে বন্যায় এক হাজার গ্রাম প্লাবিত, বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর

জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় ১ হাজার ১৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী ৮ লাখ মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার।

     

সুনামগঞ্জে ১৬ জুন থেকে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অসংখ্য ঘরবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুর ও খামারের মাছ। প্রথম দিকে সদর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা আক্রান্ত হলেও পরে জেলার সব উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। ছয় দিন ধরে মানুষ দুর্ভোগে আছে। দিন যত যাচ্ছে, পানিবন্দী মানুষের ভোগান্তি তত বাড়ছে। অনেকের ঘরে খাবারের সংকট রয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে আছে মানুষ।

 

সুনামগঞ্জে বন্যায় এক হাজার গ্রাম প্লাবিত, বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর

জেলার ছাতক, সদর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় মানুষ দুর্ভোগে আছে বেশি। পাহাড়ি ঢল নেমে প্রথমেই আঘাত হানে এ দুই উপজেলায়। ছাতক এক সপ্তাহ ধরে বন্যাকবলিত। ছাতক উপজেলার সব ইউনিয়ন ও পৌরসভা প্লাবিত।

 

জেলার ছাতক-সিলেট সড়ক, সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক, সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়ক, সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক, সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়ক ও সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এসব সড়ক দিয়ে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ আছে।

 

সুনামগঞ্জ শহরে এখনো অনেক মানুষের বসতঘর, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি আছে। যাদের বসতঘরে পানি, তারা আছে বেশি কষ্টে। অনেকেই ঠাঁই নিয়েছে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। কেউবা পরিবার নিয়ে উঠেছে হোটেল। আবার কেউ কেউ আছে আশ্রয়কেন্দ্রে।

 

 

শহরের হাসননগর এলাকার বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন আজ শুক্রবার সকালে বলেন, পানি কিছুটা কমেছে। তবে ধীরে কমছে। আর কত দুর্ভোগ পোহাবে মানুষ!

সুনামগঞ্জে বন্যায় এক হাজার গ্রাম প্লাবিত, বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর

শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ জানান, তাঁদের এলাকায় পানি স্থির হয়ে আছে। নামছে কম। সদর উপজেলার কালীপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কাদির জানান, গ্রামের ৯০ শতাংশ ঘরবাড়িতে পানি। রাস্তাঘাটে নৌকা ছাড়া চলাফেরা করা যাচ্ছে না। সময় যত যাচ্ছে, মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে।

 

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। ছাতক উপজেলা সদরে সুরমা নদীর পানি ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা) বৃষ্টি হয়েছে ২ মিলিমিটার। একই সময়ে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে কম। এ কারণে পাহাড়ি ঢল নামার পরিমাণ কম ছিল।

 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জে তেমন বৃষ্টি হয়নি। এ সময় উজানের পাহাড়ি ঢল নেমেছে কম। তাই নদীর পানি কমেছে। উজানের পাহাড়ি ঢলেই সমস্যা হয় বেশি।

 

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেছেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে। পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী আছে। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করি পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

গুণ গত মান যার ভাল তার দাম একটু বেশি সিলেটের সেরা বাগানের উন্নত চা প্রতি কেজি চা দাম ৪৫০ টাকা হোম ডেলি বারি দেয়া হয়

tree

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন