প্রকাশিত: ৩:৩২ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক : পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে জামালগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্য মৃৎশিল্প। কালের বিবর্তনে ক্রেতা সংকটে অস্তিত্ব হারাচ্ছে এটি। কমে গেছে এই শিল্পের প্রসার। মৃৎশিল্পীদের কেউ কেউ পরিবর্তন করেছে এই পেশা। প্লাস্টিকের ব্যবহার সামগ্রীর দাপটে ভিন্ন পেশায় চলে যাচ্ছেন অনেকে। যারা এখনও পেশা অঁাকড়ে ধরে রেখেছেন তাদের জীবনমান নিম্নমুখী। কষ্ট হলেও হাল ছাড়ছেন না তারা। স্বপ্ন দেখছেন, পুরোনো দিনের কর্মমুখর সেই আমেজ ফিরে আসার।
তবে মৃৎশিল্পীদের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ঋণ প্রদান ও নতুন বাজার। উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের কিছু গ্রামে ব্যস্ততা দেখা গেলেও বর্তমানে প্লস্টিকসহ আধুনিক শিল্পের প্রসারে মৃৎশিল্পীদের তৈরি জিনিসপত্র ক্রেতা সংকটে ভুগছে। সময়ের সাথে অস্তিত্ব হারাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।
বেহেলী ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের মিনতি রানী পাল বলেন, কুমারী ব্যবসা আর ভালো নেই। অনেক কষ্টে বাপ—দাদার পেশা ধরে আছি। ধর্মীয় উৎসবের প্রয়োজনীয় ঘটি, বাটি ও সরা তৈরি করে কোন মতে দিনাতিপাত করছি।
একই গ্রামের মতিন্দ্র চন্দ্র পাল বলেন, বংশের সবাই এক সময় এই পেশায় ছিল। তবে বর্তমানে এই পেশা থেকে অন্য পেশায় চলে গেছে অনেকেই।
একই গ্রামের লিটন চন্দ্র পাল বলেন, ছোটবেলা থেকেই মাটির কাজ করি। বাপ—দাদার দেওয়া পেশার বাহিরে অন্য কাজ শেখা হয়নি। তাই পেশা পরিবর্তন করিনি। একা এই কাজে কষ্ট, তাই গৃহিণীর সহযোগিতা নিয়ে পেশা ধরে রেখেছি।
বদরপুর গ্রামের কল্যানী রানী পাল, নিরঞ্জন চন্দ্র পাল, কল্পনা রানী পাল বলেন, বদরপুর গ্রামে ৮০ থেকে ৯০টি পরিবারের ৫শ’ অধিক মানুষ যুগযুগ দরে এই পেশাতে জড়িত ছিল। যাদের কর্মের মাধ্যমে এই শিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। কালের বির্বতনে আগের মতো এই শিল্পের কদর না থাকায় ২০ থেকে ২৫টি পরিবার এই পেশায় জড়িত রয়েছে।
তারা বলেন, মাটির হাঁড়ি পাতিল, ঢাকনা, কলসী, ফুলের টব, পুতুল, বিভিন্ন জীবজন্তু ও জালের কটি সহ নানা উপকরণ তৈরি করে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করছি। মৃৎশিল্পের জন্য বদরপুর ছিল খুবই পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা বিলুপ্তির পথে। এমন সময় আসবে এই পেশার অস্তিত্ব থাকবে না।
তারা আরও বলেন, বর্তমানে মানুষের ব্যবহারিক জীবনে মৃৎশিল্পের বিশেষ কোন ভূমিকা নেই। একসময় ছিল মাটি তৈরি থালা বাসন ঘটি, বাটি, সানকি, কলস, সরা, পুতুল, দেবদেবীর মূর্তির বিকল্প ছিলনা।
এছাড়াও ঋণ প্রদানে অনীহা, এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নেয়া, প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় বাপ দাদার পেশা ছেড়ে অনেকেই অন্য পেশায় চলে গেছেন। তারা বলছেন, সরকারি ভাবে সহযোগিতা পেলে বদরপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, মৃৎশিল্পের সাথে জড়িতরা যদি আগ্রহী হন তাহলে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest