প্রকাশিত: ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক : আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি ও ৫৫-তে পা দেয়ার দিন। বাংলাদেশের মানুষের হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিবস। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম উদ্ভাসিত হওয়ার দিন। এ দিনটি একদিকে যেমন চিরগৌরব ও আনন্দের, একই সঙ্গে স্বজন হারানোর বুকভাঙা আর্তনাদ আর বেদনারও।
১৯৭১ সালের এদিনে বাংলাদেশের মানুষ পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে উদয় হয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল।
মুক্তি পাগল দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর জাতি।
যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত জাতি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। আসে কাঙ্খিত বিজয়। প্রথম আগুন জ্বলে ৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাগুনের আগুনে ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মাতাল গণমানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলীদান বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় এ জাতির শেকল ভাঙার লড়াই। পাকিস্তানিদের সাথে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। ৯ মাসের দীর্ঘ লড়াই শেষে অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে মানুষ পায় বিজয়ের স্বাদ। আসে নতুন প্রভাত।
সেই নতুন প্রভাত ও স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদদের আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে জাতি। রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় স্মরণ হবেন বীর যোদ্ধারা।
রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় স্মৃতি সৌধে যাওয়া, প্রথম প্রহরে তোপধ্বনি, ইত্যাদি সকল কর্মসূচিই রয়েছে আজ।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিজয় দিবসের বাণীতে বলেছেন, স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হলে গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং ঐক্যের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে বলেছেন, এবারের বিজয় দিবস হোক জাতীয় জীবনে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন। গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যে নবযাত্রা সূচিত হয়েছে তা যেকোনো মূল্যে রক্ষার শপথ নেওয়ার দিন।
তবে সময়ের স্রোতে সবই যেন এবার বদলে গেছে। গতবছরের মতো এবারো ভিন্ন এক বাস্তবতায় পালিত হবে বিজয় দিবস। পাল্টে গেছে সরকার। পাল্টে গেছে রাজনীতি। বিজয়ের এই মহানন্দের দিনে নেই ব্যক্তিবন্দনা। ৫ আগস্টের এক রক্তঝরা বিপ্লব যেন সব চেনা চিত্রকেই পাল্টে দিয়েছে। পাল্টে যাওয়া সময়ে দেশের মানুষ এখন এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। যে দেশে থাকবেনা কোন বৈষম্য। থাকবেনা দূর্নীতি, অপশাসন ও ফ্যাসিজম। থাকবেনা রাতের ভোট, দেখা যাবেনা ডামী নির্বাচন। বিপ্লবী তরুণরা রাজনীতির চেনা ছক বদলে দেয়ার স্বপ্নে বিভোর।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়। নতুন স্বপ্ন নিয়ে শুরু হয় পথচলা। সেই স্বপ্নটা হলো, মানুষ আর ভয়াবহ দুর্নীতি, নজিরবিহীন নিপীড়ন ও কণ্ঠরোধ আর দেখতে চায় না। চিরতরে নির্বাসন চায় একতরফা পাতানো নির্বাচন।
সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নও যেন হতে চলেছে এবার। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ভোট হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারী।
শিক্ষার্থীদের রক্তের সাগরে নতুন বাংলাদেশের এই অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি সুন্দর নির্বাচনের প্রত্যাশা সবার। একটি অন্তর্ভুক্তিমুলক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনই বদলে দিতে পারে দেশের সামগ্রিক চিত্র। এতে মজবুত হবে গণতন্ত্রের ভিত্তি।
চব্বিশের এক ভোরে যে সূর্য উদিত হয়েছে, তা এক নতুন সূর্য। দেড় হাজার ছাত্র-জনতার রক্তে সেটি রঞ্জিত। এই রক্তরঞ্জিত সূর্যের উদয় ঘটেছে এক নতুন সম্ভাবনা নিয়ে। সেই সম্ভাবনার বাস্তব প্রতিফলন হউক-বিজয়ের ৫৫ বছরের দাড়িঁয়ে এটাই প্রত্যাশা…।




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest