প্রকাশিত: ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৪, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সিলেটের ছয়টি আসনের মধ্যে যে পাঁচটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি, তা ঘিরে তৃণমূলে চলছে তীব্র ক্ষোভ ও বিভক্তি। শুধুমাত্র সিলেট-১ আসন ছাড়া বাকি পাঁচটিতেই চলছে অন্তর্দ্বন্দ্ব।
দলের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, এসব কোন্দল নিরসন না হলে নির্বাচনের ফলাফলেও প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন একই কথা। বিএনপিকে এককভাবে সরকার গঠন করতে হলে এখনই শক্তিশালী দলীয় ঐক্য ও মাঠের বিরোধ নিষ্পত্তি জরুরি। তা না হলে সেই সুযোগ নিতে পারে অন্য প্রার্থীরা।
অবশ্য, নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে এ মতানৈক্য আগামী নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ। তার দাবি, একাধিক যোগ্যপ্রার্থী থাকলে একজনকে বেছে নিতে হয়। বাকিদের ক্ষোভ থাকবে স্বাভাবিক।
এদিকে অনেক আসনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও সাংগঠনিক শাস্তির ভয়ে তারা প্রকাশ্যে কঠোর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন না। তবে ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ-দুঃখে ফুঁসছেন। আবার কেউ কেউ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছেন।
সিলেট-২ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা হুমায়ন কবির। প্রার্থী ঘোষণার আগে হুমায়ন কবিরকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব (আন্তর্জাতিক বিষয়ক) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। এই আসনে দল থেকে তাহসিনা রুশদীর লুনাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু এই আসনের প্রার্থী থেকে বঞ্চিত হলেও চূড়ান্ত তালিকায় হুমায়ন কবিরকেই চান বিএনপির একাংশের কর্মী সমর্থকরা। বিশেষ করে স্থানীয় বিএনপির একটি শক্তিশালী গ্রুপ এখনও লুনাকে প্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ। এতে করে নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইলিয়াস পত্নী লুনার।
এদিকে সিলেট-৩ আসনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালিক প্রাথমিক মনোনয়ন পেলেও স্থানীয় নেতাদের একাংশ মনে করেন, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার কারণে তিনি এলাকায় কম পরিচিত। এতে ভোটারদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি হতে পারে এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অনেকে উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে মালিকের ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলেও তাঁদের দাবি—স্থানীয় নেতৃত্বকে মূল্যায়ন না করলে আসনটি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এ অবস্থায় সিলেট-৩ আসনে প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
এছাড়া সিলেট-৪ আসন এখনো প্রার্থী ঘোষণা না হলেও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সম্ভাব্য প্রার্থীতা নিয়ে দলে তীব্র অসন্তোষ। স্থানীয় নেতারা মনে করেন, আরিফুল হক সিলেট-৪ এলাকার বাসিন্দা নন এবং সিলেট-১-এ মনোনয়ন না পাওয়ার ক্ষোভ থেকেই তিনি এই আসনে আগ্রহী হয়েছেন। স্থানীয় নেতাদের জনপ্রিয়তা বেশি হওয়ায় এখানে দল স্থানীয় কাউকেই মনোনয়ন দেবে বলে অনেকে মনে করেন। তা না হলে বিদ্রোহীর ঝুঁকি রয়েছে। ইতোমধ্যে এই আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী কাজ করে যাচ্ছেন।
তাছাড়া সিলেট-৫ আসনটি জোটের জন্য ছেড়ে সুর ওঠলে সেটি কঠোরভাবে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ইতোমধ্যে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন)। জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট দুই উপজেলাতেই তিনি ধানের শীষের গণজোয়ার তৈরি করেছেন। এ অবস্থায় এই আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা না করলে বিদ্রোহী প্রার্থীর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে সিলেট-৬ আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূলে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ও নির্বাচনী সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নেতাকর্মীরা। স্থানীয়দের মত—এটি অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসন। জামায়াত এখানে শক্তিশালী প্রার্থী দিয়েছে, তাই ভুল প্রার্থী নির্বাচনের জন্য বড় ঝুঁকি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে একটি নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে এসেছে বিএনপি বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল সেখানে এতো বছর নির্বাচন হবে এখানে একাধিক প্রার্থী থাকবেন বিষয়টি স্বাভাবিক, তবে দল যেখানে কাউকে মনোনয়ন দিয়ে দিয়েছে সেখানে আমি মনে করি বাকিরা দলের স্বার্থেই কাজ করবেন।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় নির্বাচনে বিএনপি না আসলেও তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা জনপ্রিয় হয়েছেন। যার জন্য প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন। পরিবর্তনের যে কথাটা বলা হচ্ছে এটিই গণতন্ত্র। তবে দলীয় যে সিদ্ধান্ত আসবে এটিই আমাদের মেনে নিতে হবে।




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest